রোববার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

খেলাধুলা

ক্যালেণ্ডারে ঝলমলে সেরেনা

স্পোর্টস ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৪ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ১২:০০ এএম

টুর্নামেন্ট শুরুর আগে ইঙ্গিত ছিল অবসরের। টুর্নামেন্ট শুরুর পর বদলে গেল ভাবনা। ইউএস ওপেন থেকে বিদায় নিলেও তাই সেরেনা উইলিয়ামসের টেনিস ক্যারিয়ারের এপিটাফ লেখা যাচ্ছে না এখনই। কে জানে, সামনে কোনো চমক অপেক্ষায় আছে কিনা! তবে তার ক্যারিয়ার অবশ্য কোনো রহস্য নয়। বরং প্রতিভা, পরিশ্রম, নিবেদন আর প্রতিজ্ঞা দিয়ে গড়া উজ্জ্বল এক ছবি যেন। যেখানে রেকর্ডের পর রেকর্ড, অর্জন আর মাইলফলকের নান্দনিক সব আঁকিবুকি। সেরেনা আবার কোর্টে নামবেন কিনা, সেটির উত্তর দেবে সময়। আপাতত, অনিশ্চয়তার এই সময়ে আলো ফেলা যাক কিংবদন্তির প্রায় দুই যুগের রাজকীয় পথচলায়-
১৯৯৯
ইউএস ওপেনের ফাইনালে সুইস গ্রেট মার্টিনা হিন্ডিসকে হারিয়ে প্রথম গ্র্যান্ড স্ল্যামের স্বাদ পান সেরেনা। ১৯৫৮ সালে আলথি গিবসনের পর প্রথম আফ্রিকান-আমেরিকান নারী হিসেবে গড়েন এককে গ্র্যান্ড স্ল্যাম জয়ের কীর্তি।
২০০১
প্রথম গ্র্যান্ড স্ল্যাম জয়ের পর সাতটি মেজরে ফাইনালে উঠতে ব্যর্থ হন সেরেনা। অপেক্ষার অবসান হয় ২০০১ সালের ইউএস ওপেনে। উইলিয়ামস পরিবারের জন্য সেই ম্যাচ এক আনন্দ-বেদনার অনির্বচনীয় অনুভূতির মুহূর্ত। ফাইনালে তিনি হেরে যান বড় বোন ভেনাস উইলিয়ামসের বিপক্ষে!
২০০২-০৩
চোটের ছোবলে ২০০২ সালের অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে খেলতে পারেননি সেরেনা। সুস্থ হয়ে কোর্টে ফিরে অবিশ্বাস্য প্রায় দেড় বছরের অধ্যায় কাটান তিনি। জেতেন পরের ছয় গ্র্যান্ড স্ল্যামের পাঁচটিই। এই সময়ে শুধু ২০০৩ ফরাসি ওপেনের সেমি-ফাইনালে হেরে যান তিনি।

২০০৪-০৭
এই সময়টায় সেরেনার ক্যারিয়ারকে যেন চোট আষ্টেপৃষ্টে ঘিরে ধরেছিল। তার শ্রেষ্ঠত্ব এখানেই যে, এই দুঃসময়ের পালায়ও ২০০৫ ও ২০০৭ সালের অস্ট্রেলিয়ান ওপেন জেতেন তিনি।
২০০৮-০৯
মাঝের গ্র্যান্ড স্ল্যাম শিরোপার খরা কাটিয়ে ২০০৮ সালের ইউএস ওপেন জেতেন সেরেনা। পরের বছরের অস্ট্রেলিয়ান ওপেন ও উইম্বলডনও জিতে নেন তিনি।
২০১০
অস্ট্রেলিয়ান ওপেন জিতে ১২টি মেজর শিরোপা নিয়ে সর্বোচ্চ গ্র্যান্ড জয়ীদের তালিকায় যুক্তরাষ্ট্রের গ্রেট বিলি-জিন কিংয়ের সঙ্গে যৌথভাবে ষষ্ঠ স্থানে জায়গা করে নেন সেরেনা। ওই বছরের উইম্বলডনও জেতেন তিনি। তবে উইম্বলডনের শিরোপা উৎসব করতে গিয়েই বাধান বিপত্তি; কাঁচে লেগে কেটে যায় তার পা। সেই চোটেরে কারণে খেলতে পারেননি ইউএস ওপেনে।
২০১১
ফুসফুসে রক্ত সঞ্চালন জনিত জীবনঘাতী রোগে আক্রান্ত হন তিনি। রোগ সারাতে করানো হয় অস্ত্রোপচার। সেরে উঠে ওই বছরের ইউএস ওপেনের ফাইনালেও উঠেছিলেন, কিন্তু হেরে যান অস্ট্রেলিয়ান স্যাম স্টোসারের বিপক্ষে।
২০১২
বছরের উইম্বলডন জয়ের পর ওই একই ঘাসের কোর্টে অলিম্পিক সোনাও জিতে নেন সেরেনা। অলিম্পিকের মুকুট পরার পথে সেমি-ফাইনালে শীর্ষ বাছাই ভিক্টোরিয়া আজারেঙ্কা ও ফাইনালে তৃতীয় বাছাই মারিয়া শারাপোভাকে হারান তিনি। সাফল্যের ধারাবাহিকতায় ওই বছরের ইউএস ওপেনের ফাইনালেও আজারেঙ্কাকে হারান তিনি।
২০১৩
সাফল্যরাঙা বছরে ক্যারিয়ারে দ্বিতীয় ফরাসি ওপেন জেতেন তিনি। বছরে মোট ১০টি শিরোপা জিতে র‌্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষে উঠে বসেন। ওই বছরে অর্জনের ঝুলিতে আরেকটি ইউএস ওপেন শিরোপাও যোগ করেন তিনি।
২০১৪
টানা তৃতীয় বারের মতো জেতেন ইউএস ওপেন। এই মেজরে সেটাই তার সবশেষ সাফল্য। এরই সঙ্গে ১৮ গ্র্যান্ড স্ল্যাম নিয়ে উঠে আসেন দুই কিংবদন্তি স্বদেশি ক্রিস এভার্ট ও চেক রিপাবলিকের মার্তিনা নাভ্রাতিলোভার পাশে।
২০১৫
অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের ফাইনালে মারিয়া শারাপোভাকে হারিয়ে ক্যারিয়ারে ১৯তম গ্র্যান্ড স্ল্যাম জেতেন সেরেনা। ফ্লুতে আক্রান্ত অবস্থায় ফরাসি ওপেনের ফাইনালে চেক রিবাপলিকের লুসি সাফারোভাকে হারিয়ে টানা তৃতীয় ও ২০তম গ্র্যান্ড স্ল্যাম জয়ের উল্লাসে মাতেন তিনি। ওই বছর ষষ্ঠ উইম্বলডন জয়ের মধ্য দিয়ে ‘সেরেনা স্ল্যাম’ নামে পরিচিত হয়ে ওঠা টানা চার গ্র্যান্ড স্ল্যাম জেতেন তিনি। অধরা ক্যারিয়ার গ্র্যান্ড স্ল্যাম জয়ের লক্ষ্যেও ভালোভাবে এগিয়ে যাচ্ছিলেন সেবার। কিন্তু ইউএস ওপেনের সেমি-ফাইনালে হেরে যান ইতালির রবের্তা ভিঞ্চির বিপক্ষে।
২০১৬
অস্ট্রেলিয়ান ওপেন ও ফরাসি ওপেনের ফাইনালে হেরে যান তিনি। তবে উইম্বলডনে ঘরে তোলেন সপ্তম শিরোপা। ২২টি গ্র্যান্ড স্ল্যাম নিয়ে স্পর্শ করেন কিংবদন্তি স্টেফি গ্রাফকে।
২০১৭
সপ্তমবারের মতো অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে জয়োল্লাস করেন। ২৩ মেজর জিতে গ্রাফকে ছাড়িয়ে গড়েন টেনিসের উন্মুক্ত যুগে সর্বোচ্চ গ্র্যান্ড স্ল্যাম জয়ের নতুন রেকর্ড। অস্ট্রেলিয়ার মার্গারেট কোর্টের গ্র্যান্ড স্ল্যাম অবশ্য ২৪টি, এর অধিকাংশ তিনি জিতেছিলেন অ্যামেচার যুগে।
২০১৮-১৯
মেয়ে অলিম্পিয়ার জন্মের পরের এই দুই বছরেই উইম্বলডন ও ইউএস ওপেনের ফাইনালে ওঠেন সেরেনা। কিন্তু চার ফাইনালের একটিতেও শেষ হাসি হাসতে পারেননি তিনি।
২০২১-২২
পায়ের চোটে ২০২১ সালের উইম্বলডনের প্রথম রাউন্ড থেকে ছিটকে পড়ার পর প্রায় এক বছর কাটান কোর্টের বাইরে। এ বছর উইম্বলডন দিয়ে ফিরলেও হেরে যান প্রথম রাউন্ডেই।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন