মুশফিকুর রহিম দীর্ঘদিন ধরে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে রান পাচ্ছিলেন না। অভিজ্ঞতার বিবেচনায় তবুও টিকে যাচ্ছিলেন। কিন্তু হাতের মুঠোয় পাওয়া সুযোগগুলো কাজে লাগাতে পারছিলেন না কোনোভাবেই।
বাদ পড়ার পর এশিয়া কাপ দিয়ে ফিরেছিলেন টি-টোয়েন্টি দলে। কিন্তু আফগানিস্তানের বিপক্ষে রান না পাওয়ার পর শ্রীলঙ্কার বিপক্ষেও ব্যর্থ হন মুশফিক। সঙ্গে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচে ক্যাচ মিস, ক্যাচ নিয়েও রিভিউ না নিতে পারার ব্যর্থতায় প্রবল সমালোচিত হচ্ছিলেন তিনি।
তাই তো নিজ থেকেই এ ফরম্যাট থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিলেন জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক। আজ রোববার (৪ সেপ্টেম্বর) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক পোস্টে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ছাড়ার ঘোষণা দেন মুশফিক।
তিনি লেখেন, ‘টি টোয়েন্টি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ক্যারিয়ার থেকে আজ আমি অবসর নিচ্ছি। তবে, বাংলাদেশের হয়ে টেস্ট এবং ওয়ানডে খেলা চালিয়ে যাবো। আশা করছি এই দুই ফরম্যাটে আমি আরও কিছু নিয়ে আসতে পারবো দেশের জন্য।’ এরপর থেকেই শুরু হয় সোশ্যাল মিডিয়ায় সমালোচনার ঝড়।
মো. শামিম হোসাইন নামে একজন লিখেছেন, বাংলাদেশ ক্রিকেটে যাদের এত অবদান তাদের এভাবে চলে যাওয়াটা সত্যিই কষ্টের! ফর্মে থেকে বাঘের মতো বিদায়টা কাম্য ছিল। তারপরও শুভ কামনা ও দোয়া রইল প্রিয় ক্রিকেটারের প্রতি।
জহুরুল জুয়েল নামে একজন লিখেছেন, উত্তম সিদ্ধান্ত। সম্মান থাকতে সরে যাওয়া ও নবীনদের সুযোগ করে দেওয়ায় জন্য ধন্যবাদ। তবে ওডিআই ও টেস্টে এখনো কিপার ও ব্যাটার হিসেবে মুশফিকই সেরা।
ইসরাফিল সোহেল নামে একজন লিখেছেন, খুবই ভালো সিদ্ধান্ত। দোয়া রইল, টেস্ট এবং ওয়ানডেতে তার ব্যাটিং আগের চেয়ে বেশি ধারালো হয়ে ফিরে আসবে।
এস এম আব্দুল্লাহ নামে একজন লিখেছেন, ভালো সিদ্ধান্ত। ওডিআই ও টেস্টে অনেক ভালো করবেন আশা রাখি। শুভ কামনা আগামীর জন্য।
সিদ্দিক মিশু নামে একজন লিখেছেন, ধন্যবাদ মুশফিক সময় উপযোগী সিদ্ধান্তের জন্য। আশা করি টেস্ট ও ওডিআইতে ভালোভাবে মনোযোগ দিয়ে দেশকে আরো অনেক কিছু দিবেন।
এস এম রানা নামে একজন লিখেছেন, খারাপ ফর্ম আসতেই পারে, আর একটু ভেবে, মাথা ঠান্ডা রেখে ডিসিশন নেয়া উচিত ছিল।
সাব্বির নামে একজন লিখেছেন, চমৎকার একটি সিদ্ধান্ত। সম্মান থাকতে উনি যে অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন এটা তার বুদ্ধিমত্তার পরিচয়।
এইচ এম হুমায়ুন কবির নামে একজন লিখেছেন, বর্তমান সময়ে মুশফিকের রান তোলার গড় এবং স্টাইক রেটের কোনোটাই টি-টোয়েন্টির সাথে যায় না। তাই আগে-ভাগেই নিজেকে গুটিয়ে নিয়ে ভালোই করেছেন।
মো. উজ্জ্বল জে আর নামে একজন লিখেছেন, মুশফিকের রান রেট ভালো না। ১৯ গড়ে তো একজন বোলার রান করে। এ রকম ব্যাটসম্যান না থাকাই ভালো।
বিকাশ চন্দ্র মন্ডল নামে একজন লিখেছেন, ৯৩ ম্যাচ খেলার পরেও গড় যদি ১৯+ হয় তাহলে আরো আগেই বিদায় নিলে ভালো হত।
জানা যায়, আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ছাড়লেও ঘরোয়া ও ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্ট চালিয়ে যাবেন বলেও জানিয়েছেন মুশফিক, ‘বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) সহ অন্যান্য ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে আমি আমার খেলা চালিয়ে যাবো টি টোয়েন্টি ফরম্যাটে।’ মুশফিকের আগে এই ফরম্যাট থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়েছিলেন তামিম ইকবাল। বাংলাদেশের ওয়ানডে অধিনায়ক পঞ্চাশ ওভারের ফরম্যাট ও টেস্ট ক্রিকেট খেলছেন নিয়মিত।
বাংলাদেশের হয়ে ১০২ টি-টোয়েন্টিতে ১৫০০ রান করেছেন মুশফিক। যেখানে ব্যাটিং গড় ছিল ১৯.৪৮, স্ট্রাইক রেট ১১৫.০৩। নামের পাশে রয়েছে ৬টি ফিফটি। টেস্ট ও ওয়ানডের মতো এই ফরম্যাটে মুশফিকের ব্যাটিং গড় ও স্ট্রাইক রেট আন্তর্জাতিক মানের নয়। এই ফরম্যাটে অন্তত ১৫শ রান করা বিশ্বের ৪৬ জন ব্যাটসম্যানের মধ্যে সবচেয়ে কম গড় ও স্ট্রাইক রেট তার। ১৫শ রান করা ব্যাটসম্যানের মধ্যে মুশফিকই একমাত্র, যার ব্যাটিং গড় ২০-এর নিচে। তার চেয়ে কম রেটে ব্যাটিং করেননি আর কোনো ব্যাটসম্যান।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন