দিনভর সূচক উঠানামার মধ্যদিয়ে সপ্তাহের চতুর্থ কর্মদিবসে দেশের পুঁজিবাজারে লেনদেন হয়েছে। গতকাল বুধবার বস্ত্র, ব্যাংক-বিমা কোম্পানির শেয়ারের দাম কমলেও, বেড়েছে ওষুধ ও রসায়ন, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি এবং প্রকৌশল খাতের শেয়ারের দাম। ফলে অনেকটা চাঙ্গাভাবের মধ্যদিয়ে পুঁজিবাজারের লেনদেন শেষ হয়েছে। দুটি বাজারে মধ্যে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান মূল্যসূচক বেড়েছে ৭৬ পয়েন্ট। অপর বাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক সূচক বেড়েছে ২০৭ পয়েন্ট।
ডিএসইতে লেনদেন ছাড়িয়েছে ২ হাজার কোটি টাকার বেশি। তবে কমেছে লেনদেন হওয়া অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম। সবমিলে সপ্তাহের প্রথম দু’দিন দরপতনের পর টানা দুইদিন উত্থান হলো।
বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এই মুহূর্তে ফ্লোর প্রাইস তুলে দেওয়ার কোনো পরিকল্পনা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) নেই-এমন খবর প্রকাশ হওয়ার পর থেকে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আস্থা ফিরেছে। ফলে তারা শেয়ার বিক্রির চেয়ে শেয়ার কেনার প্রবণতায় ফিরছেন। এ কারণে চাঙ্গা হচ্ছে পুঁজিবাজার।
বাজার বিশ্লেষণে দেখা গেছে, পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত ওষুধ খাতের ৩২টি কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ২৮টির, কমেছে ২টির আর অপরিবর্তিত রয়েছে ২টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম। আজ পুঁজিবাজার চাঙ্গা রাখায় সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রেখেছে বিকন ফার্মা, বেক্সিমকো ফার্মা, ওরিয়ন ফার্মা এবং কোহিনুর কেমিক্যালের শেয়ার।
ওষুধ খাতের পর সূচকের উত্থানে অবদান রেখেছে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাত। এ খাতের ২৩টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে দাম বেড়েছেটির ১৪টির, কমেছে ৯টির। একইভাবে সূচক বৃদ্ধিতে অবদান রেখেছে প্রকৌশল খাতের কয়েকটি প্রতিষ্ঠান। তথ্য মতে, ডিএসইতে ৪০ কোটি ২৯ লাখ ৯৯ হাজার ৩৮০টি শেয়ার কেনাবেচা হয়েছে, যার মূল্য ২ হাজার ২০১ কোটি ৩৫ লাখ ৩৮ হাজার টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ১ হাজার ৩১৫ কোটি ৪ লাখ ৯২ হাজার টাকা। অর্থাৎ আগের দিনের চেয়ে লেনদেন প্রায় দ্বিগুণ বেড়েছে।
ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৩৭৮টি কোম্পানির শেয়ারের। এর মধ্যে ১৩১টি কোম্পানির শেয়ারের দাম বেড়েছে, কমেছে ১৫৫টির, আর অপরিবর্তিত রয়েছে ৯২টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিটের দাম। অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারের দাম কমলেও এদিন ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৭৬ দশমিক ৪৭ পয়েন্ট বেড়ে ৬ হাজার ৫৪৭ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। ডিএসইএস সূচক ২৩ দশমিক ৩৯ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৪৪২ পয়েন্টে এবং ডিএস-৩০ সূচক ৪৭ দশমিক ১১ পয়েন্ট বেড়ে ২ হাজার ৩৫৩ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
লেনদেনের শীর্ষে ছিল ওরিয়ন ফার্মাসিউটিক্যালসের শেয়ার। এরপর রয়েছে-বেক্সিমকো লিমিটেড, লাফার্জহোলসিম, নাহি অ্যালুমিনিয়াম, জেএমআই হসপিটাল, বেক্সিমকো ফার্মা, ইস্টার্ন হাউজিং, বসুন্ধরা পেপার মিলস, একমি ল্যাবরেটরিজ এবং বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশন লিমিটেডের শেয়ার।
দেশের অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ২০৭ পয়েন্ট বেড়ে ১৯ হাজার ১৯৬ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। এ বাজারে ২৮৮টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ১১৩টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম বেড়েছে, কমেছে ১১২টির ও অপরিবর্তিত রয়েছে ৬৩টি কোম্পানির শেয়ারের দাম। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৪৩ কোটি ১০ লাখ ১০ হাজার ৩১৮ টাকার শেয়ার। এর আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ৩০ কোটি ৪৭ লাখ ৭২ হাজার ৩৬৮ টাকার শেয়ার।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন