সময়টা এখন তিউনিসিয়ার ওনস জাবিরের। উইম্বলডনের ফাইনাল খেলেছিলেন প্রথম আফ্রিকান নারী হিসেবে। সেই ধারাবাহিকতা টেনে আনলেন যুক্তরাষ্ট্রেও। বছরের শেষ গ্র্যান্ড স্ল্যাম ইউএস ওপেনের সেমি ফাইনালেও নাম লেখালেন এই ‘আরব কন্যা’। অস্ট্রেলিয়ার তামলিয়ানোভিচকে ৬-৪, ৭-৬ গেমে হারিয়ে প্রথম আফ্রিকান নারী হিসেবে ইউএস ওপেনের শেষ চারের টিকেট কাটলেন জাবির। এই ২৮ বছর বয়সী তারকা নিজ দেশ তিউনিশিয়াতে ‘আনন্দের মন্ত্রী’ নামে পরিচিত। টেনিসের সর্বোচ্চ সম্মানের স্থান গ্রান্ড স্ল্যামে টানা সাফল্যের কারণেই তার খ্যাতি। আবারও প্রথম গ্র্যান্ড স্ল্যাম জয়ের খুব কাছে পৌঁছে গিয়েছেন জনগণের এই ‘মন্ত্রী’।
ইউএস ওপেনের এবারের আসরে তৃতীয় রাউন্ডে মহাতারকা সেরেনা উইলিয়ামস কাটা পড়েন ক্রোয়েশিয়ায় জন্ম নেওয়া অজি টেনিস তারকা তামলিয়ানোভিচে। এরপর স্বাচ্ছন্দ্যের সঙ্গে শেষ ষোল পেরিয়ে যান তামলিয়ানোভিচ। কিন্তু কোয়ার্টার ফাইনালে তাকে এক বিন্দুও ছেড়ে কথা বলেননি জাবির। তিউনেসিয়ার ২৮ বছর বয়সী তারকা গতপরশু রাতে ৭১ শতাংশ পয়েন্ট জেতেন ফার্স্ট সার্ব থেকে আর দ্বিতীয় সার্ব থেকে খাতায় যোগ হয় ৪৯ শতাংশ। দুই জায়গাতেই পিছিয়ে ছিলেন তামলিয়ানোভিচ। একই সাথে তিনি ডাবল ফল্ট করেছেন ৯ বার যেখানে তার তিউনিসিয়ান প্রতিপক্ষের এই ভুল হয়েছে মাত্র ২ বার।
জয়ের পর জাবির উইম্বল্ডনের প্রসঙ্গ তুললেন, ‘আমি আমার উপর সব সময়ই বিশ্বাস রেখেছিলাম। আসলে উইম্বল্ডনের পর থেকে আমার ভাবনাই খুব ইতিবাচক হয়ে গিয়েছে, যদিও আমি ফাইনাল হেরেছি। কিন্তু বিশ্বাস করি আমি গ্র্যান্ড স্ল্যাম জিততে পারবো। ইউএস ওপেনের সেমিতে পদার্পন করা আমার বিশ্বাসকে আরও বাড়িয়ে দেয়।’ মন্ত্রীত্বের ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলে মজা করে জাবির জানান, ‘দ্বিতীয় সেটে বারবার যখন র্যাকেট হাত ফসকাচ্ছিল তখন আমি তা আছড়ে মারি কোর্টে। এরপরই মনে হচ্ছিল আমি আমার মন্ত্রিত্ব হারাতে পারি (হাসি)। আমি আসলে আমার হতাশা থেকেই ওই কাজ করেছিলাম। ক্ষমা চাচ্ছি সে ব্যবহারের জন্য।’ আসছে ভোর ৫টায় প্রথম সেমি ফাইনালে ফ্রান্সের ক্যারলিন গার্সিয়ার মুখোমুখি হবেন জাবির।
অন্যদিকে ইউএস ওপেনের পুরুষ এককে জোকোভিচ টুর্নামেন্টেই ছিলেন না। নাদাল বাদ পড়েছেন আগের রাউন্ডে। শীর্ষ বাছাই রাশিয়ার দানিল মেদভেদেভকে ইউএস ওপেনের চতুর্থ রাউন্ডে ছিটকে দিয়েছিলেন নিক কিরিয়স। হার্ড কোর্টে ভালো হওয়ায় ইউএস ওপেন চ্যাম্পিয়ন হওয়ার অন্যতম দাবিদার ছিলেন মেদভেদেভ। কিন্তু চতুর্থ রাউন্ডেই তার দৌড় থামিয়ে দেন অস্ট্রেলিয়ার কিরিয়স। সব বড় নক্ষত্ররা যখন খসে পড়েছিলেন আগেই। কিরিয়স আবার তুখড় ফর্মে। সবাই তাই ধরে নিয়েছিল অবশেষে প্রথম গ্রান্ড স্ল্যামের মুখ দেখতে যাচ্ছেন ২৫তম বাছাই এই অস্ট্রেলিয়ান। তবে বিতর্কিত কিরিয়স শেষ আটের লড়াইয়ে আরেক রাশিয়ান কারেন খাসানভের কাছে হেরে বিদায় নিলেন। ম্যাচটি ২৭তম বাছাই খাসনেভ জিতেন ৫-৭, ৬-৪, ৫-৭, ৭-৬ (৭-৩), ৪-৬ গেমে। কিরিয়সের বিদায়ের ফলে আরও বিবর্ণ হল বছরের শেষ গ্র্যান্ড স্ল্যাম।
ম্যাচটা যে কেউই জিততে পারতেন। যদিও খাসানভের ভাল টেনিসের থেকেও এই ম্যাচের ফলাফলকে বেশি প্রভাবিত করল কিরিয়সের দআনফোর্সড এররদ। সেই ভুলের মাশুল দিয়েই ম্যাচ হারলেন কিরিয়স। মোট ৫৮টি অনিচ্ছাকৃত ভুল করেন তিনি। অন্য দিকে খাসানভের ‘আনফোর্সড এরর’ এর সংখ্যা ৩১। তাই প্রতিপক্ষের থেকে ১৩টি বেশি উইনার মেরেও ম্যাচের ফল নিজের পক্ষে আনতে পারলেন না কিরিয়স। খাসানভের ৩০টি এস সার্ভিসের জবাবে ৩১টি এস সার্ভিস করেছেন কিরিয়স। আবার প্রতিপক্ষের থেকে দুটি বেশি ডাবল ফল্টও (পাঁচটি) করেছেন তিনি। এই হারে অস্ট্রেলিয়ান কিরিয়স বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছেন, ‘বাকি টুর্নামেন্টগুলো নিয়ে আমার তেমন মাথা ব্যাথাও নেই। সত্য বলতে গ্র্যান্ড স্ল্যামের সাফল্য ছাড়া অন্য কিছুরই গুরুত্ব নেই। মানুষ মনে রাখে আপনি গ্রান্ড স্ল্যাম জিতেছেন নাকি হেরেছেন। গ্র্যান্ডস্ল্যামে কেবল ব্যর্থ হবারই অনুভূতি আছে আমার। আসলে আমি বিধ্বস্ত।’ সেমি ফাইনালে খাসানভের প্রতিপক্ষ ক্যাসপার রুড।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন