এক বছরে আরও প্রায় ৮০ হাজার প্রতিষ্ঠান মূল্য সংযোজন করের (মূসক বা ভ্যাট) আওতায় এসেছে। সর্বশেষ ২০২১-২২ অর্থবছরে দেশে ভ্যাট নিবন্ধিত প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ৭১ হাজার। এর আগের ২০২০-২১ অর্থবছরে এই সংখ্যা ছিল ২ লাখ ৯১ হাজার। এক বছরের ব্যবধানে ভ্যাটদাতা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা প্রায় ২৭ শতাংশ বেড়েছে। বারো মাসে এত ভ্যাট নিবন্ধন আগে কখনো হয়নি। এটি ইলেকট্রনিক বিজনেস আইডেন্টিফিকেশন নম্বর (ইবিআইএন) হিসেবে পরিচিত। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) ভ্যাট বিভাগের সর্বশেষ হালনাগাদ তথ্যে এমনটাই উঠে এসেছে।
এতে এনবিআর আশা করছে, চলতি অর্থবছরেই (২০২২-২৩) ভ্যাট নিবন্ধিত প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা পাঁচ লাখ ছাড়িয়ে যাবে। এ প্রসঙ্গে রাজস্ব বোর্ডের ভ্যাট বিভাগের একজন সদস্য জানান, চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরেই ভ্যাট নিবন্ধিত প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা পাঁচ লাখ ছাড়িয়ে যেতে পারে। এনবিআর সব নিবন্ধিত প্রতিষ্ঠানকে ভ্যাট রিটার্ন দেওয়ায় উৎসাহিত করবে। এতে ভ্যাট আদায় বাড়বে।
এনবিআর সূত্রে জানা গেছে, ৩ লাখ ৭১ হাজার প্রতিষ্ঠান ভ্যাট নিবন্ধন নিলেও প্রতিমাসে গড়ে আড়াই লাখের মতো প্রতিষ্ঠান ভ্যাট রিটার্ন জমা দিয়েছে। দেশে ২০১৯ সালের জুলাই মাসে নতুন ভ্যাট আইন চালু হয়। এই আইন অনুযায়ী ইবিআইএন ছাড়া কোনো প্রতিষ্ঠান ভ্যাট রিটার্ন জমাসহ কোনো সেবা পাবে না।
এদিকে ভ্যাট নিবন্ধিত প্রতিষ্ঠানগুলোতে ইলেকট্রনিক ফিসক্যাল ডিভাইস (ইএফডি) মেশিন ব্যবহারে উৎসাহিত করতে এনবিআর নানা উদ্যোগ নিয়েছে। ইতিমধ্যে ঢাকা ও চট্টগ্রাম শহরে কয়েক হাজার প্রতিষ্ঠানে ভ্যাট মেশিন অর্থাৎ ইএফডি বসানো হয়েছে। আগামী পাঁচ বছরে আরও তিন লাখ ভ্যাট মেশিন বসানোর লক্ষ্য ঠিক করা হয়েছে। কাজটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে দিয়ে করানো হবে। মাস বা বছর শেষে ওই মেশিন থেকে প্রাপ্ত ভ্যাটের একটি অংশ ওই প্রতিষ্ঠান পাবে।
নতুন ভ্যাট আইনে কোনো প্রতিষ্ঠানের বার্ষিক লেনদেন ৫০ লাখ টাকার কম হলে ভ্যাট দিতে হয় না। তাই তাদের নিবন্ধনও নেওয়ার দরকার নেই। তবে বার্ষিক লেনদেন ৫০ লাখ টাকা থেকে ৩ কোটি টাকা হলে ৪ শতাংশ টার্নওভার কর দিতে হয়। বাকিদের ক্ষেত্রে নিয়মিত ভ্যাটহার প্রযোজ্য। টার্নওভার কর ও নিয়মিত ভ্যাট প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানকে ইবিআইএন নিতে হয়। কোনো প্রতিষ্ঠান ইবিআইএন না নিলে তাদের ১০ হাজার টাকা জরিমানা করার বিধান রাখা হয়েছে নতুন ভ্যাট আইনে। এ ছাড়া নিবন্ধন সনদ যথাযথভাবে প্রদর্শন না করলেও ১০ হাজার টাকা জরিমানার কথা বলা হয়েছে।
পুরোনো আইনের আওতায় গত অর্থবছরে সব মিলিয়ে সাড়ে আট লাখ প্রতিষ্ঠান ভ্যাট নিবন্ধন নিয়েছিল। সব মিলিয়ে বছরে গড়ে ৬০ হাজার প্রতিষ্ঠান ভ্যাট রিটার্ন দিয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন