শেষ বলে ছয় মেরে ফাইনালে ভারতের বিপক্ষে পাকিস্তানকে জেতানোর কীর্তি আছে জাভেদ মিয়াঁদাদের। এশিয়া কাপের মঞ্চে শেষ ওভারের নাটকীয়তায় চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের বিপক্ষেই দুটি ছক্কায় নায়ক হয়েছিলেন শহিদ আফ্রিদি। এবার আফগানিস্তানের বিপক্ষে নাসিম শাহের জোড়া ছয়ে পাকিস্তান অধিনায়ক বাবর আজমের মনে পড়ছে মিয়াঁদাদকে। আর দলটির অলরাউন্ডার শাদাব খানের মতে, মিয়াঁদাদ-আফ্রিদির ছয়ের মতোই স্মরণীয় হয়ে থাকবে নাসিমের ছয়গুলো।
নাসিমের মূল কাজটা বল হাতে। তবে আফগানদের বিপক্ষে ব্যাট হাতে নায়কে রূপান্তরিত হন এই তরুণ ডানহাতি পেসার। তার বীরত্বে গতপরশু রাতে এশিয়া কাপের সুপার ফোরের ম্যাচে ১ উইকেটের রোমাঞ্চকর জয়ে ফাইনাল নিশ্চিত করেছে পাকিস্তান। শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আফগানিস্তানের ছুঁড়ে দেওয়া ১৩০ রানের লক্ষ্য তারা পেরিয়ে যায় ৪ বল বাকি থাকতে।
শেষ ওভারে ১ উইকেট হাতে নিয়ে পাকিস্তানের দরকার ছিল ১১ রান। ম্যাচ জয়ে তখন ফেভারিট আফগানিস্তান। কিন্তু নিজের আগের তিন ওভারে ১৯ রান দিয়ে ৩ উইকেট নেওয়া ফজলহক ফারুকি করে ফেলেন গড়বড়। ইয়র্কারের ব্যর্থ চেষ্টায় টানা দুটি ফুল টস ডেলিভারি দিয়ে বসেন এই বাঁহাতি পেসার। লং অফ দিয়ে দুই ছক্কা হাঁকিয়ে পাকিস্তানকে উল্লাসে মাতান নাসিম।
১৯৮৬ সালে অস্ট্রেলেশিয়া কাপের ফাইনালে ভারতের মুখোমুখি হয়েছিল পাকিস্তান। শেষ বলে জয়ের জন্য তাদের প্রয়োজন ছিল ৪ রান। ভারতের পেসার চেতন শর্মার ফুল টস বল মিড উইকেট দিয়ে সীমানার বাইরে পাঠিয়ে পাকিস্তানকে জিতিয়েছিলেন সাবেক তারকা ব্যাটার মিয়াঁদাদ। আফগানদের হারানোর পর পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে সেই ঐতিহাসিক ছয়ের প্রসঙ্গ টানেন বাবর, ‘নাসিমের এই ছয়গুলো দেখে তো জাভেদ ভাইয়ের কথা মনে পড়ছে। শারজাহতেই উনি ছয় মেরে জিতিয়েছিলেন।’ পুরষ্কার বিতরণী অনুষ্ঠান সঞ্চালনার দায়িত্বে থাকা শাস্ত্রী ওই ম্যাচে ভারতের হয়ে খেলেছিলেন। বাবরের কথা শুনে তিনি মজা করে বলেন, ‘আমি সেদিন মাঠে ছিলাম... মনে করিয়ে দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ!’
২০১৪ সালের এশিয়া কাপে মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে আফ্রিদির মারা টানা দুই ছয়ের সঙ্গে ভীষণ খুঁজে পাওয়া যায় নাসিমের হাঁকানো ছক্কাগুলোর পটভূমির। হাতে ১ উইকেট নিয়ে শেষ ৪ বলে সেদিন ভারতের বিপক্ষে ৯ রান দরকার ছিল পাকিস্তানের। রবিচন্দ্রন অশ্বিনকে পরপর দুবার সীমানাছাড়া করে দলকে জিতিয়েছিলেন সাবেক দলনেতা আফ্রিদি। ব্যাটে-বলে অবদান রেখে আফগানদের বিপক্ষে ম্যাচসেরার পুরস্কার জেতা শাদাব বলেন, ‘নাসিম যে দুটি ছয় মারল... যেভাবে জাভেদ ভাই আর শহিদ ভাইয়ের ছয় মানুষ মনে রেখেছে, এই দুই ছয়ও সেভাবে মনে রাখবে। নাসিমের ক্যারিয়ারের শেষ পর্যন্ত এই দুটি ছয় নিয়ে চর্চা হবে।’
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন