শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

খেলাধুলা

আলকারাজে থামলো টিয়াফোর স্বপ্নযাত্রা

স্পোর্টস ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ১২:০০ এএম

ম্যাচ শেষে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে বারবার কান্নায় ভেঙ্গে পড়লেন ফ্রান্সিস টিয়াফো। নিজের সবটাই উজাড় করে দিয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের এই টেনিস তারকা। কিন্তু ফাইনালে উঠার লড়াইয়ে পরাজয় মেনে নিতে হয়েছে স্পেনের কার্লোস আলকারাজের কাছে। জোকোভিচের অনুপস্থিতি এবং নাদাল ও কিরিয়সের দ্রুত বিদায়ে ইউএস ওপেনের এবারের আসরের সেলিব্রিটি তকমাটা ছিল কেবল স্প্যানিশ আলকারাজের উপর। ১৯ বছর বয়সী এই টেনিস তারকার এটি প্রথম গ্রান্ড স্ল্যাম ফাইনাল। আর তাতেই ইউএস ওপেনে ছেলেদের এককের ফাইনালে পিট সাম্প্রাসের পর ১৯ বছর বয়সী কেউ ফাইনাল খেলার মর্যাদা অর্জন করলো। সাম্প্রাস ১৯৯০ সালে এই কীর্তি অর্জন করেছিলেন। যদিও ২০০৫ সালে নাদাল ফ্রেঞ্চ ওপেনের ফাইনাল খেলেছিলেন। চলতি বছরের ফরাসী ওপেনে এই নাদালের প্রতিপক্ষ ছিলেন আবার ক্যাসপার রুড। এই ২৩ বছর বয়সী নরোয়েজিয়ানই আজ রাত ২টায় আলকারাজের ফাইনালের প্রতিপক্ষ। দুই ফাইনালিস্তের সামনেই সুবর্ণ সুযোগ প্রথম গ্র্যান্ড স্ল্যাম জেতার। সেই সঙ্গে বিশ্বের এক নম্বর পুরুষ টেনিস খেলোয়াড় হওয়ার সুযোগ রয়েছে দুই তরুণের সামনে।
শেষ চারের লড়াইয়ে পরশু মধ্যরাতে টিয়াফোর বিপক্ষে ৬-৭ (৬-৮), ৬-৩, ৬-১, ৬-৭ (৫-৭), ৬-৩ গেমে জেতেন আলকারাজ। ৪ ঘণ্টা ১৮ মিনিটের লড়াইয়ের শুরুটা ভাল করেছিলেন টিয়াফো। প্রথম সেটে এগিয়ে গিয়েছিলেন তিনি। চারটি পয়েন্ট বাঁচিয়ে সেটে ফিরে আসেন আলকারাজ। সেট গড়ায় টাইব্রেকারে। সেখানে জেতেন টিয়াফো। দ্বিতীয় সেটে ম্যাচে ফেরেন স্প্যানিশ তারকা। তার শক্তিশালী গ্রাউন্ড স্ট্রোকের জবাব ছিল না টিয়াফোর কাছে। আমেরিকার প্রতিপক্ষের কাছ থেকে ব্রেক পয়েন্ট আদায় করেন আলকারাজ। ৬-৩-এ জিতে যান সেট। তৃতীয় সেট আরও একতরফা ভাবে জেতেন স্পেনের টেনিস খেলোয়াড়। রাফায়েল নাদালকে হারানো টিয়াফোকে দাঁড়াতে দেননি এবার। এই দফায় তার দুটি সার্ভিস ভাঙ্গেন আলকারাজ। তৃতীয় সেট জিতে যান ৬-১ ফলে।
দেখে মনে হচ্ছিল চতুর্থ সেটেই খেলার ফয়সালা হয়ে যাবে। কিন্তু হাল ছাড়েননি টিয়াফো। চতুর্থ সেটে লম্বা র্যালি খেলা শুরু করেন তিনি। আলকারাজ কিছুটা ক্লান্ত হয়ে পড়েছিলেন। সেটা কাজে লাগান শক্তিশালী টিয়াফো। চতুর্থ সেটও টাইব্রেকারে গড়ায়। জিতে যান স্বাগতিক প্লেয়ার। তাই পঞ্চম সেটই নির্ণায়ক। স্বাভাবিক ভাবেই দর্শকদের সমর্থন বহু বেশি ছিল টিয়াফোর দিকে। কিন্তু কোর্টে দেখা গেল উল্টো ছবি। আবার শক্তিশালী গ্রাউন্ডস্ট্রোক খেলা শুরু করেন আলকারাজ। এবারঈ একবার টিয়াফোর কাছ থেকে ব্রেক আদায় করে ৬-৩ ব্যবধানে সেট জিতে যান ১৯ বছ বয়সী স্প্যানিশ। তাতে নাদালের পরে আলকারাজ স্পেনের দ্বিতীয় টেনিস খেলোয়াড় যিনি ইউএস ওপেনের ফাইনালে উঠলেন। আর অ্যান্ডি রডিকের পর (২০০৩ সাল) পরুষ এককে স্বাগতিক খেলোয়াড় হিসেবে ইউএস ওপেনের শিরোপা উঁচিয়ে ধরাটা স্বপ্নই রয়ে গেল টিয়াফোর জন্য। ম্যাচ শেষে আলকারাজ জানান, ‘ফ্রান্সিস তার সবটা দিয়েই চেষ্টা করেছে। এককথায় অসাধারণ। আসলে গ্র্যান্ড স্ল্যামের সেমি ফাইনালে নিজেদের শেষটুকুই ঢেলে দিতে হয়।’
এর আগে নিউ ইউর্কের আর্থার অ্যাশ স্টেডিয়ামে প্রথম সেমিফাইনালে রাশিয়ার কারেন খাচানভকে ৭-৬ (৭-৫), ৬-২, ৫-৭, ৬-২ গেমে হারিয়ে ফাইনালে ওঠেন র‌্যাঙ্কিংয়ের ৭ম স্থানে থাকা রুড। একই বছরে দুটি গ্র্যান্ড স্ল্যামের ফাইনালে উঠে যেন বিশ্বাসই হচ্ছে না এই নরওয়েজিয়ানের। বললেন, ‘ফরাসি ওপেনের ফাইনালে হেরে যাওয়ার পরে আমি ভেবেছিলাম, আর হয়তো কোনও দিন কোনও গ্র্যান্ড স্ল্যামের ফাইনালে উঠতে পারব না। কিন্তু পেরেছি। এই লড়াই সহজ ছিল না।’
ডানিল মেদভেদভ ছিটকে যাওয়ায় পুরুষদের শীর্ষস্থান দখলের সুযোগ ছিল তিন জনের। আলকারাজ ও রুড ছাড়া লড়াইয়ে ছিলেন নাদালও। কিন্তু নাদাল হেরে যাওয়ায় এবার লড়াই শুধু আলকারাজ ও রুডের মধ্যে। এই দুই তরুণ এর আগে ২ বার এটিপি প্রতিযোগিতামূলক খেলায় মুখোমুখি হয়েছিলেন যেখানে দুবারই জেতেন স্প্যানিশ তারকা। আজ রাতে রুড কি পারবেন পূর্বের হিসাব পাল্টে নতুন ইতিহাস রচনা করতে? ইতিহাসই তো। নতুন রানির মতো নতুন রাজাই যে পাচ্ছে ইউএস ওপেন!

 

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন