রোববার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ব্যবসা বাণিজ্য

খোলাবাজারে বাড়ছেই ডলার-পাউন্ডের দাম

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ১২:০০ এএম

মার্কিন ডলারের সঙ্কট নিরসন ও দাম কমানোর বিষয়ে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে তারপরও নিয়ন্ত্রণে আসছে না প্রভাবশালী এই মুদ্রাটি। বরং টানা এক সপ্তাহ বিরতিহীনভাবে বেড়েই যাচ্ছে বহুল ব্যবহৃত মুদ্রাটি। গতকাল রোববার খোলা বাজারে নগদ এক ডলার কিনতে গ্রাহকদের গুনতে হচ্ছে ১১৪ টাকা থেকে ১১৪ টাকা ৫০ পয়সা। যেখানে গত সপ্তাহেও এক ডলার ছিল ১০৮ থেকে ১০৯ টাকা। ডলারের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ব্রিটিশ পাউন্ডের। দাম বাড়তে বাড়তে গিয়ে ঠেকেছে ১৩৯ টাকায়।
রাজধানীর বিভিন্ন বাণিজ্যিক ব্যাংক এক্সচেঞ্জ হউজ ও ডলার কেনাবেচার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য জানা গেছে। ডলারের দাম সারাবিশ্বে ঊর্ধ্বমুখী হলেও ব্রিটিশ মুদ্রাটির রেকর্ড পতণ হয়েছে। ১৯৮৫ সালের পর থেকে সর্বনিম্ন দাম এই মুদ্রাটি। ব্রিটিশ পাউন্ড ডলারের বিপরীতে শূন্য দশমিক ৬৪ শতাংশ কমে ১ দশমিক ১৪৫ ডলারে দাঁড়িয়েছে। অর্থাৎ প্রতি ১ দশমিক ১৪৫ ডলারে এখন এক পাউন্ড পাওয়া যায়। গত ৩৭ বছরের মধ্যে পাউন্ডের এমন পতন দেখা যায়নি। অথচ টাকার বিপরীতে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে ব্রিটিশ মুদ্রাটি।
মতিঝিল দিলকুশা এলাকায় খুচরা বিদেশী মুদ্রা কেনাবেচা করেন কবির আহম্মেদ। তার কাছে কেনাবেচার তথ্য জানতে চাইলে তিনি বলেন, গত বুধ-বৃহস্পতিবার থেকে বাজার ফের ঊর্ধ্বমুখী। বৃহস্পতিবার ১১৩ টাকা বিক্রি করেছি। আজ (রোববার) বিক্রি করছি ১১৪ টাকায়। আর কেউ আমাদের কাছে ডলার বিক্রি করতে এলে তাকে দিচ্ছি প্রতি ডলার ১১৩ টাকা। তিনি জানান, গত মাসের শেষ দিকে ডলার ১০৮ টাকায় নেমে আছে। ওই দামেই গত সপ্তাহ পর্যপ্ত বিক্রি হয়েছে। কিন্তু এখন আবার বাজার চড়া। পাউন্ডের বাজারও গত এক সপ্তাহে গরম হয়ে গেছে বলে জানান তিনি।
মানিচেঞ্জার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সভাপতি এ কে এম ইসমাইল হক ডলারের দাম প্রসঙ্গে বলেন, দাম তেমন বাড়েনি। আমরা ১০৬ টাকায় কিনছি এবং ১০৭ টাকা ৫০ পয়সা বিক্রি করছি। অনেকে ১১৩ থেকে ১১৪ টাকায় বিক্রি করছে, এটা কেন জানতে চাইলে মানিচেঞ্জারদের এ নেতা বলেন, যারা বৈধ তারা বাজারের চেয়ে বেশি দামে ডলার বিক্রি করে না। আমরা যেটা বলেছি এ রেটেই কেনাবেচা করছি।
এদিকে বাংলাদেশ ব্যাংক বিভিন্ন পদক্ষেপ নিলেও ডলার বাজারের সঙ্কট কমেনি। আমদানি বেড়ে যাওয়া ও আশানুরূপ প্রবাসী আয় না আসায় দেশে মার্কিন ডলারের চরম সঙ্কট সৃষ্টি হয়। ফলে দিন দিন বাড়তে থাকে ডলারের দাম। অপরদিকে ডলারের বিপরীতে পতন হয় টাকার মান। কেন্দ্রীয় ব্যাংক বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর কাছে ডলার বিক্রি করেছে ৯৫ টাকা দরে। গত বছরের আগস্টে যা ছিল ৮৫ টাকা।
তবে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো ৯৫ থেকে ৯৬ টাকা ডলারের মূল্য ঘোষণা দিলেও আদমানি পর্যায়ে ডলারের দাম নিচ্ছে ১০১ থেকে ১০৬ টাকা। আর নগদ ডলার বিক্রি করছে ১০৬ থেকে ১০৮ টাকা। খোলা বাজারে ডলারের দাম ১১৪ টাকা ৫০ পয়সা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। এর আগে দেশে খোলাবাজারে ডলার চলতি বছরের ১০ ও ১১ আগস্ট নগদ ডলার ১২০ টাকায় উঠেছিল।
এদিকে গত সপ্তাহে বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার মজুত বা রিজার্ভও ৩৭ বিলিয়নে নেমে এসেছে। এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নে (আকু) ১৭৩ কোটি ডলারের বিল পরিশোধের পর গত বৃহস্পতিবার রিজার্ভ কমে দাঁড়ায় ৩ হাজার ৭০৬ কোটি ডলার (৩৭ দশমিক শূন্য ৬ বিলিয়ন ডলার)। গত বছরের শেষের দিকে রিজার্ভ ৪ হাজার ৮০০ কোটি ডলার (৪৮ বিলিয়ন ডলার) পর্যন্ত উঠেছিল।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন