সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের ‘এ’ গ্রুপে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে শনিবার পাকিস্তানকে ৬-০ গোলে হারানোর পর অনেকটা ফুরফুরে মেজাজেই রয়েছে বাংলাদেশের মেয়েরা। কোন বিশ্রাম নয়, ম্যাচের পরের দিন গতকাল সকালেও কাঠমান্ডুর আর্মি হেডকোয়ার্টার মাঠে অনুশীলনে ঘাম ঝরিয়েছে সাবিনা খাতুন বাহিনী। কারণ আগামীকাল গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে টুর্নামেন্টের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন শক্তিশালী ভারতকে মোকাবেলা করবে বাংলাদেশ দল। তাই ফুরফুরে মেজাজে অনুশীলনের মাঝেই নিজেদের চাঙ্গা রাখতে চাইছেন কৃষ্ণ রানী সরকার-মারিয়া মান্ডারা। যদিও বাংলাদেশ কোচ গোলাম রব্বানী ছোটন বলেছেন, এটি ছিল রিকভারি সেশন। গ্রুপের শেষ ম্যাচে ভারতকে হারিয়ে তার দল উৎসবে মাতবে- এমন ইঙ্গিতই দেন ছোটন। তিনি বলেন,‘পাকিস্তানকে বড় ব্যবধানে হারালেও এখনই কোন আত্মতুষ্টি নয়। এটা মেয়েরা জানে। ২০১৫ সালে এএফসি অনূর্ধ্ব-১৪ চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জেতার পরও কোন উৎসব করেনি আমার দলের মেয়েরা। এবারও তাই।’ নারী সাফের ইতিহাসে কখনোই ভারতকে হারাতে পারেনি বাংলাদেশ। সাতবারের মোকাবেলায় একবার শুধু তাদের রুখে দিতে পেরেছিলেন সাবিনারা। বাকি ছয়বারই হারতে হয়েছে বাংলাদেশকে। সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে আগের পাঁচ আসরেরই শিরোপা জিতেছে ভারত। এবারও তাদের একই লক্ষ্য। তবে সাবিনাদের স্বপ্ন ভারত বধের। চলতি আসরে ‘এ’ গ্রুপের এই দল দুটি এর আগে দু’টি করে ম্যাচ জিতেছে। সমান ৬ পয়েন্ট করে পেলেও গোল ব্যবধানে এগিয়ে থেকে তালিকার শীর্ষে আছে ভারতই। দুই ম্যাচে তাদের ১২ গোল হলেও বাংলাদেশের ৯টি। শেষ ম্যাচে ভারতকে হারাতে পারলে ‘এ’ গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন হবে বাংলাদেশ। এ ক্ষেত্রে সেমিফাইনালে ‘বি’ গ্রুপের সম্ভাব্য চ্যাম্পিয়ন স্বাগতিক নেপালকে এড়াতে পারবে তারা। যে কারণে ভারতকে হারানোর জন্য মুখিয়ে আছেন সাবিনা-কৃষ্ণারা। তবে তাদের এ ইচ্ছা খুব সহজে পুরণ হবে না।
পরশু মালদ্বীপের বিপক্ষে ৯-০ গোলে জয়লাভের পর ভারতীয় কোচ সুরেন ছেত্রী বলেছিলেন, ‘বাংলাদেশের বিপক্ষে গ্রুপ পর্বের তৃতীয় ম্যাচটি জিতে নিতে চাই আমরা। চেষ্টা থাকবে বাংলাদেশকে চাপে ফেলে সুবিধা আদায়ের। এই মুহুর্তে আমরা সুবিধাজনক অবস্থানে আছি। বাংলাদেশের বিপক্ষে ড্র করতে পারলেও আমরাই গ্রুপ সেরা হতে পারবো। সুতরাং এখন থেকেই বাংলাদেশ চাপে পড়ে গেছে।’ ভারত কোচের এমন কথার জবাবে বাংলাদেশ কোচ ছোটন কাল বলেন,‘গত দুই ম্যাচে সাবিনারা যেমন ফুটবল খেলেছে তাতে আমার মনে হয়, আমাদের বিপক্ষে যে কোন দলই চাপে থাকবে।’
আত্মবিশ^াসী বাংলাদেশ অধিনায়ক সাবিনা খাতুন বলেন,‘আমরা মালদ্বীপের বিপক্ষে ভারতের খেলা দেখেছি। বিরতির আগে চার গোল দিয়েছিল ওরা। কিন্তু দ্বীপদেশটির গোলরক্ষক আমিনাথ লিজা ইনজুরিতে পরার পরও মাঠ ছাড়েনি। ওর জন্যই এতগুলো গোল (৯-০ গোল) হজম করেছে মালদ্বীপ। এতে বাড়তি সুবিধা আদায় করে নিয়েছে ভারত। সমান পয়েন্ট থাকলেও গোল পার্থক্যে তারা আমাদের চেয়ে এগিয়ে গেছে। এটা কোন সমস্যাই নয়। আমরা নিজেদের সেরাটা মাঠে ঢেলে দিতে পারলে ভারতকে হারানো খুব কঠিন কিছু নয়। আমার ধারণা সতীর্থরা স্বপ্নপূরণের জন্য মাঠে নিজেদের উজার করে দেবেন।’
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন