শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

খেলাধুলা

সেই শ্রীলঙ্কাই এশিয়ার সেরা

স্পোর্টস ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ১২:০০ এএম

টস হার মানেই যেন ম্যাচ হার। অনেকটা এমনই ছিল এবারের এশিয়া কাপের সমীকরণ। সে সমীকরণ ফাইনালে উল্টে দিল শ্রীলঙ্কা। ব্যাট হাতে ভানুকা রাজাপাকশে এনে দেন লড়াকু পুঁজি। তাকে দারুণ সঙ্গ দেন ওয়ানেন্দু হাসারাঙ্গা। এরপর বল হাতে তোপ দাগান প্রমোদ মাদুশান। এবারও তাকে দারুণ সহায়তা করেন হাসারাঙ্গা। তাতেই এশিয়া কাপে নিজেদের ষষ্ঠ শিরোপা জিতে নেয় দলটি। গতকাল দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে এশিয়া কাপের ফাইনালে পাকিস্তানকে ২৩ রানের ব্যবধানে হারিয়েছে শ্রীলঙ্কা। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেটে ১৭০ রান তোলে শ্রীলঙ্কা। জবাবে ১৪৭ রানে গুটিয়ে যায় পাকিস্তান। তাতে নিজেদের দেশে চলা রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে সৃষ্ট অর্থনৈতিক সঙ্কটে থাকা মানুষগুলোর মুখে সত্যিই এক চিলতে হাসি ফুটিয়েছেন দাসুন শানাকার দল।
অথচ টুর্নামেন্টের শুরুতে এই শ্রীলঙ্কার পক্ষে বাজী ধরার পক্ষে ছিলেন না হয়তো খোদ লঙ্কানরাও। তার উপর প্রথম ম্যাচে আফগানিস্তানের বিপক্ষে রীতিমতো বিধ্বস্ত হয়ে হারে বিবর্ণ শুরু। কিন্তু বাংলাদেশের বিপক্ষে রোমাঞ্চকর জয়েই বদলে গেল সব। উজ্জীবিত হয়ে ওঠে দলটি। সে ধারা ধরে রেখে টানা পাঁচ জয়। সে পর্যন্ত এশিয়া কাপ গেল শ্রীলঙ্কার ঘরেই। এই নিয়ে এশিয়ার শ্রেষ্ঠত্বের মঞ্চে চতুর্থ দেখায় তিনবারই মুকুট নিজেদের করে রাখল দ্বীপ দেশটি। সব মিলিয়ে আসরে এটি তাদের ষষ্ঠ শিরোপা। সর্বোচ্চ ৭ বার চ্যাম্পিয়ন ভারত।
এদিন টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নামা শ্রীলঙ্কাকে শুরুতে চেপে ধরে পাকিস্তান। শুরুতেই কুশল মেন্ডিসকে বোল্ড করে দেন নাসিম শাহ। এরপর রউফ পাওয়ার প্লেতে তুলে নেন পাথুম নিসাঙ্কা ও দানুস্কা গুনাথিলাকাকে। তাতে পাওয়ার প্লেতে ৩ উইকেটে ৪২ রান করতে পারে শ্রীলঙ্কা। পাওয়ার প্লে শেষেও উইকেট পতন ঠেকাতে পারছিল না শ্রীলঙ্কা। পার্ট-টাইম স্পিনার ইফতেখার আহমেদের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান আশা দেখানো ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা। হতাশ করেন লঙ্কান অধিনায়ক দাসুন শানাকাও। শাদাব খানের বলে বোল্ড হয়ে যান তিনি।
দলীয় ৫৮ রানে পাঁচ উইকেট হারানো শ্রীলঙ্কাকে আশা দেখান ভানুকা রাজাপাকশে। ওয়ান্দেন্দু হাসারাঙ্গাকে দলের হাল ধরেন তিনি। ষষ্ঠ উইকেটে ৫৮ রানের জুটি গড়েন এ দুই ব্যাটার। রানের গতি বাড়াতে গিয়ে রউফের তৃতীয় শিকারে পরিণত হন হাসারাঙ্গা। কিন্তু তাতে রানের গতিতে লাগাম টানতে পারেনি পাকিস্তান। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৭১ রানের ইনিংস খেলে শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকেন রাজাপাকশে। ৪৫ বলের ইনিংসটি সাজাতে ৬টি চার ও ৩টি ছক্কা হাঁকান এ ব্যাটার। ৩৬ রান করেন হাসারাঙ্গা। ২১ বলে ৫টি চার ও ১টি ছক্কায় এ রান করেন এ অলরাউন্ডার। ২১ বলে ৪টি চারের সাহায্যে ২৮ রান করেন ধনাঞ্জয়া। পাকিস্তানের পক্ষে ২৯ রানের খরচায় ৩টি উইকেট পান রউফ।
ব্যাটিংয়ের মতো বোলিংয়ের শুরুটাও ভালো ছিল না শ্রীলঙ্কার। প্রথমেই নো-বল করেন দিলশান মাদুশাঙ্কা। এরপর করেন টানা চারটি ওয়াইড বল। এরমধ্যে একটি পেরিয়ে যায় বাউন্ডারিও। ফলে অফিশিয়ালি কোনো বল ছাড়াই ৯ রান পেয়ে যায় পাকিস্তান। তবে ঘুরে দাঁড়াতে খুব বেশি সময় নেয়নি শ্রীলঙ্কা। এরপর বেশ নিয়ন্ত্রিত বোলিংই করতে থাকে লঙ্কানরা। সেই মাদুশাঙ্কা টানা তিন ওভার করে খরচ করেন ২৪ রান। অথচ এরমধ্যে বল না করেই দিয়েছিলেন ৯ রান। রিভিউ নিলে পেতে পারতেন একটি উইকেটও। কারণ রিপ্লেতে দেখা যায় তার একটি ডেলিভারি উইকেটরক্ষকের হাতে যাওয়ার আগে ইফতেখার আহমেদের ব্যাটে কানা ছুঁয়ে যায়।
তবে এর আগের ওভারেই বল হাতে নিয়ে পাক শিবিরে জোড়া ধাক্কা দেন মাদুশান। লেগ স্টাম্পের বেশ বাইরে থাকা বলে ফ্লিক করতে গিয়ে শর্ট থার্ডম্যানে ক্যাচ তুলে দেন অধিনায়ক বাবর আজম। পরের বলেই অফস্টাম্পের বেশ বাইরের বল টেনে এনে বোল্ড হয়ে যান ফখর জামান। ফলে দলীয় ২২ রানে দুই উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় পাকিস্তান। পাওয়ার প্লেতে ২ উইকেটে ৩৭ রান করতে সমর্থ হয় তারা।
এরপর ইফতেখারকে নিয়ে দলের হাল ধরেন রিজওয়ান। দেখে শুনে ব্যাট করে প্রাথমিক চাপ সামলে নেওয়ার চেষ্টা করেন এ দুই ব্যাটার। তবে রানের গতি সে অর্থে বাড়াতে পারেননি। চেষ্টা চালাতে গিয়ে মাদুসানের তৃতীয় শিকারে পরিণত হন ইফতেখার। আকাশে বল তুলে দিয়ে স্কয়ার লেগ সীমানায় ক্যাচ তুলে দেন অতিরিক্ত ফিল্ডার বান্দারার হাতে। পাঁচ নম্বরে নেমে সুবিধা করতে পারেননি মোহাম্মদ নাওয়াজ। ৯ বলে ৬ রান করে চামিকা করুনারাত্নের শিকার হন তিনি। এর আগে ভারতের বিপক্ষে চারের নেমে বিধ্বংসী এক ইনিংস খেলে দলের জয়ে রেখেছিলেন কার্যকরী ভূমিকা। তাতে বড় চাপে পড়ে যায় পাকিস্তান।
এরপর আর সেই চাপ কাটিয়ে উঠতে পারেনি পাকিস্তান। হাসারাঙ্গার এক ওভারেই হারায় তিনটি উইকেট। গুগলি বুঝতে না পেরে বোল্ড হয়ে যান আসিফ আলী। ছক্কা মারতে গিয়ে সীমানায় ক্যাচ দিয়ে একে ফিরে যান খুশদিল শাহ ও শাদাব খান। লেজের ব্যাটাররাও পারেননি জ্বলে উঠতে। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৫৫ রানের ইনিংস খেলেন রিজওয়ান। ৪৯ বলে ৪টি চার ও ১টি ছক্কায় এ রান করেন এ উইকেটরক্ষক-ব্যাটার। ২ রান করেন ইফতেখার। ১ বলে ২টি চার ও ১টি ছক্কায় এ রান করেন তিনি। এছাড়া দুই অঙ্ক স্পর্শ করতে পেরেছেন কেবল হারিস রউফ। শ্রীলঙ্কার পক্ষে ৩৪ রানের খরচায় ৪টি উইকেট পান মাদুশান। ২৭ রানের বিনিময়ে ৩টি উইকেট পান হাসারাঙ্গা। ২টি শিকার করুনারাত্নের।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (11)
Sentu Barua ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ৬:২৮ এএম says : 0
অভিনন্দন শ্রীলঙ্কা টিম
Total Reply(0)
Kamrul Hasan Fahim ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ৬:২৯ এএম says : 0
· এই শিরোপা শ্রীলঙ্কারই প্রাপ্য ছিল।সিংহের মতো দেখিয়ে দিয়েছে আজ তারা।অভিনন্দন শ্রীলঙ্কা।
Total Reply(0)
Md. Mojahedur Rahman ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ৬:৩০ এএম says : 0
মিস ফিল্ডিং আর চিরাচরিত রোগ পাকিস্থানের হারের একমাত্র কারন
Total Reply(0)
Munna Choudhury ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ৬:৩০ এএম says : 0
কত সুন্দর একটা টিম বানাইলো শ্রীলংকা,কত সুন্দর ক্রিকেট খেলছে ৫৮ রানে পাঁচ উইকেট হারানোর পর যেভাবে ঘুরে দাঁড়ালো চাঁদের মায়াবী আলোও হার মানবে ওদের ক্রিকেট সৌন্দর্যের কাছে সত্যিই অতি নন্দিত অসাধারণ শ্রীলংকা। এভাবেও ফিরে আসা যায় এভাবেও ঘুরে দাঁড়ানোর গল্প লিখা হয়
Total Reply(0)
Ḿ Šẫifuř Rʌʜɱʌŋ ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ৬:৩১ এএম says : 0
দেশ দেউলিয়া হলেও ক্রিকেটাররা দেউলিয়া হননি এটাই তার প্রমাণ।
Total Reply(0)
Almas Sheikh ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ৬:৩১ এএম says : 0
ওয়েলডান শ্রীলঙ্কা।♥️♥️♥️ প্রচন্ড রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকটে থাকার পরেও তাদের ক্রিকেটাররা যেভাবে এশিয়া কাপে কর্তৃত্ব বজায় রাখলো তা নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়। আমাদের দেশের ক্রিকেটারদের এই শ্রীলঙ্কার দলের কাছ থেকে শেখার আছে অনেক কিছু।
Total Reply(0)
MD Forhad Akhter ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ৬:৩১ এএম says : 0
রিজওয়ানের কচ্ছপ গতির ইনিংসই শ্রীলঙ্কার জয়কে সহজ করে দিয়েছে!
Total Reply(0)
Rotan Manik ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ৬:৩১ এএম says : 0
টার্গেট ছিল ১৭১; শুনেছি ৭১ সংখ্যা সামনে এলেই তাদের পুরোনো ব্যথা জেগে উঠে! জিতবে কেমনে?
Total Reply(0)
Sheikh Khorshed Alam ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ৬:৩১ এএম says : 0
What A Game... Congratulations Team Srilanka.......
Total Reply(0)
Al Amin Sarker ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ৬:৩২ এএম says : 0
টিকটক টিম শ্রীলঙ্কা থেকে শিক্ষা নাও,,কিভাবে প্রবাসে মাথার ঘাম পায়ে ফেলে অর্জিত টাকা দিয়ে টিকেট কেটে আসা প্রবাসী সমর্থকদের হাসি মুখে,,,জয় উৎসবে বাড়ি ফেরাতে হয়,,শিক্ষা নাও বিসিবি,,,শিক্ষা নাও বাংলাদেশ ক্রিকেট টিম
Total Reply(0)
Kazi Md. Jamal Uddin ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ১০:৪৭ এএম says : 0
টিকটক টিম শ্রীলঙ্কা থেকে শিক্ষা নাও,,কিভাবে প্রবাসে মাথার ঘাম পায়ে ফেলে অর্জিত টাকা দিয়ে টিকেট কেটে আসা প্রবাসী সমর্থকদের হাসি মুখে,,,জয় উৎসবে বাড়ি ফেরাতে হয়,,শিক্ষা নাও বিসিবি,,,শিক্ষা নাও বাংলাদেশ ক্রিকেট টিম
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন