শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

ইউক্রেনে আক্রমণের প্রতিশোধ নিচ্ছে রাশিয়া

মস্কো কিয়েভ শাসনের আত্মসমর্পণের দাবি করতে পারে : মেদভেদেভ ইউরোপের অনেক দেশই রাশিয়ার বিরুদ্ধে যেতে চায় না : অস্ট্রিয়ার সাবেক মন্ত্রী ষ জাপোরোজিয়া পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রের কার্যক্রম

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ১২:০০ এএম

রাশিয়া খারকিভ প্রদেশে ইউক্রেনের পাল্টা আক্রমণের প্রতিক্রিয়ায় রোববার সন্ধ্যায় মধ্য ও পূর্ব ইউক্রেনের অবকাঠামোগত সুবিধাগুলোকে লক্ষ্যবস্তু করেছে, যার ফলে যুদ্ধ আরও তীব্র হয়েছে। এদিকে, রাশিয়া কিয়েভের শাসকদের সম্পূর্ণ আত্মসমর্পণ দাবি করতে পারে বলে জানিয়েছেন দেশটির নিরাপত্তা পরিষদের উপপ্রধান দিমিত্রি মেদভেদেভ।

গতকাল খারকিভ শহরের মেয়র ইহোর তেরেখভ বলেছেন, রাশিয়ার হামলা শহরের বেশিরভাগ অংশে বিদ্যুৎ ও পানির সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে, যাকে তিনি যুদ্ধক্ষেত্রে ইউক্রেনের সেনাদের সাম্প্রতিক উস্কানির জন্য রাশিয়ার ‘প্রতিশোধ’ হিসাবে বর্ণনা করেছেন। ডিনিপ্রো, পোল্টাভা এবং অন্যান্য পূর্ব শহরগুলোতে ব্ল্যাকআউটের খবর পাওয়া গেছে, সম্ভাব্যভাবে যা লাখ লাখ বেসামরিক নাগরিককে প্রভাবিত করেছে। ভলোদিমির জেলেনস্কি ব্ল্যাকআউটের জন্য ‘রাশিয়ান হামলাকে’ দায়ী করেছেন। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট সোশ্যাল মিডিয়ায় এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘কোন সামরিক স্থাপনায় হামলা করা হয়নি। তাদের লক্ষ্য হল আলো এবং তাপ থেকে মানুষকে বঞ্চিত করা।’ ইউক্রেনীয় বাহিনী খারকিভ থেকে ৬০ মাইল পূর্বে রুশ সেনাদের পরিত্যাগ করা কুপিয়ানস্কের রেল হাব পুনরুদ্ধার করেছে এবং ইজিয়াম দখলের প্রক্রিয়ায় রয়েছে। রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছিল যে, তাদের বাহিনী পুনরায় সংগঠিত হচ্ছে। পাল্টা আঘাত করার প্রয়াসে, রাশিয়া রোববার পাওয়ার গ্রিডকে লক্ষ্য করে হামলা চালায় যা খারকিভ এবং অন্যান্য এলাকাকে অন্ধকারে নিমজ্জিত করে। ইউক্রেনের নেতৃত্ব দীর্ঘদিন ধরে আশঙ্কা করছে যে, শীতের আগ পর্যন্ত গ্রিডে হামলা হতে পারে। উত্তর-পূর্বের সুমি প্রদেশে, গভর্নর বাসিন্দাদের বৈদ্যুতিক ডিভাইসগুলো বিচ্ছিন্ন করার আহ্বান জানিয়েছেন। ‘এই অঞ্চলের মাধ্যমে নেটওয়ার্কে বিদ্যৃত সঞ্চালনা কমে গেছে,’ টেলিগ্রাম মেসেজিং অ্যাপে ডিমিট্রো জাইভিটস্কি লিখেছেন, ‘আমি যতটা সম্ভব বৈদ্যুতিক ডিভাইস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার পরামর্শ দিচ্ছি।’ রাশিয়ার নেতৃত্ব দ্রুত বিকাশমান সামরিক পরিস্থিতি সম্পর্কে খুব কমই বলেছে। কিন্তু প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইগর কোনাশেনকভ এক বিবৃতিতে দাবি করেছেন যে, রাশিয়ান পশ্চাদপসরণ আসলে ইজিয়ামে এবং পার্শ্ববর্তী ডোনেৎস্ক অঞ্চলে প্রতিরক্ষা লাইন শক্তিশালী করার জন্য ‘বাহিনীর পুনর্গঠন’।

মস্কো কিয়েভ শাসনের আত্মসমর্পণের দাবি করতে পারে : ইউক্রেনের সাথে বর্তমানে রাশিয়ার আলোচনা করার মতো কিছু নেই। কারণ এ বিষয়ে রাশিয়ার একমাত্র দাবি হচ্ছে, কিয়েভের শাসকদের সম্পূর্ণ আত্মসমর্পণ করতে হবে। রাশিয়ার নিরাপত্তা পরিষদের উপপ্রধান দিমিত্রি মেদভেদেভ গতকাল তার টেলিগ্রাম চ্যানেলে এ কথা বলেছেন। তিনি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির বিবৃতির প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন, যেখানে তাদের সাথে সংলাপে বসার জন্য রাশিয়ার প্রতি আলটিমেটাম দেয়া হয়েছিল। ‘বর্তমান ‘আল্টিমেটাম’ হল বাচ্চাদের জন্য একটি ওয়ার্ম আপ, ভবিষ্যতে করা দাবির একটি পূর্বরূপ। তিনি (জেলেনস্কি) সেটি জানেন: রাশিয়ার শর্ত কিয়েভ শাসনের সম্পূর্ণ আত্মসমর্পণ,’ মেদভেদেভ সতর্ক করেছিলেন।

ইউরোপের অনেক দেশই রাশিয়ার বিরুদ্ধে যেতে চায় না : ইউক্রেনের পরিস্থিতির কারণে অস্ট্রিয়া রুশ-বিরোধী নিষেধাজ্ঞাগুলোকে সমর্থন করে চলেছে, তবে সমস্ত জাতি নিষেধাজ্ঞাগুলোতে অংশ নিতে চায় না, অস্ট্রিয়ার সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী কারিন কেনিসল এ মন্তব্য করেছেন। বার্তা সংস্থা তাসকে দেয়া একটি সাক্ষাতকারে কেনিসল বলেন, ‘এটা স্পষ্ট যে সবাই রাশিয়ার বিরুদ্ধে সব নিষেধাজ্ঞায় অংশ নিতে চায় না। যাইহোক, অস্ট্রিয়া এখনও পর্যন্ত সমস্ত বিধিনিষেধে যোগদান অব্যাহত রেখেছে।’

তিনি এই বিষয়টির প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন যে, হাঙ্গেরির মতো বেশ কয়েকটি ইইউ ব্লকের সদস্য দেশ রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার ষষ্ঠ প্যাকেজে নিজেদের জন্য ‘দর কষাকষি’ করে ছাড় দিয়েছে, যা জ্বালানি সরবরাহকে প্রভাবিত করে। তার মতে, ইউরোপীয় ইউনিয়ন তাদের পররাষ্ট্র ও প্রতিরক্ষা নীতি অনুসারে নিষেধাজ্ঞার সিদ্ধান্ত নেয়। তিনি বলেন, ‘আমরা ইতিমধ্যেই ২০১৪ সালে অন্যান্য দেশের মতোই চীনের উপর নিষেধাজ্ঞা এবং অবশ্যই রাশিয়ার বিরুদ্ধে এক হাজারের বেশি শাস্তি দিয়েছিলাম। এই সমস্ত শাস্তি শুধু ইউরোপেই নয়, ইতিহাসে নজিরবিহীন।’

জাপোরোজিয়া পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রের কার্যক্রম স্থগিত : ইউক্রেন জাতীয় পরমাণু শক্তি কোম্পানি রোববার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জানায়, দেশটির জাপোরোজিয়া পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রের কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে। ইউক্রেনের জাতীয় পরমাণু শক্তি কোম্পানি জানায়, ১১ তারিখ ভোরে জাপোরোজিয়া পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রের সর্বশেষ সচল পাওয়ার ইউনিট ইউক্রেনের জাতীয় বিদ্যুৎ গ্রিডের সঙ্গে সংযোগ বন্ধ করে।

স্থানীয় এক কর্মকর্তা জানান, বোমার আঘাতে পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রে দুর্ঘটনা হতে পারে। তাই বিদ্যুৎকেন্দ্রের কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে। জাপোরোজিয়া পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রটি ইউরোপের বৃহত্তম পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র। রাশিয়া গত ফেব্রুয়ারিতে সামরিক অভিযান শুরু করার পর বিদ্যুৎকেন্দ্রটির নিয়ন্ত্রণ নেয়। সম্প্রতি ওই বিদ্যুৎকেন্দ্রের উদ্দেশ্যে অনেকবার বোমা বর্ষণ হয়েছে। সূত্র : রয়টার্স, তাস, দ্য গার্ডিয়ান, সিএনএন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (3)
Shahinur Islam Sohan ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ৫:২১ এএম says : 0
Putin is best for russian and number one leader in world
Total Reply(0)
Saifur Rahman Mamun ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ৫:২০ এএম says : 0
সারা বিশ্বের সমস্ত অশান্তির মূল যে কারা সেটা পুতিন সারা বিশ্ববাসীকে খুব ভালোভাবেই বুঝিয়ে দিয়েছে এই যুদ্ধের মাধ্যমে। সাবাস পুতিন!
Total Reply(0)
Arif Bunty ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ৫:২১ এএম says : 0
স্যালুট প্রেসিডেন্ট পুতিন
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন