পরিবহন খাতে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে সিলেটে। করোনা, বন্যা বিপর্যস্ত অবস্থার মধ্যে জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির ঘটনায় এমনিতেই এখাতে নেমে এসেছে মন্দা। এর মধ্যে ট্রাফিক পুলিশের নানামুখী হয়রানীতে নাজেহাল পরিবহন সংশ্লিষ্টরা। এছাড়া পরিবহন খাতে পাথর কোয়ারী নির্ভর গড়ে উঠেছিল একটি টেকসই অর্থনীতি। ব্যাংক লোন নিয়ে পরিবহন খাতে বিনিয়োগ করেছিলেন সিলেটের অসংখ্য মানুষ। বেকার বিশাল একটি জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থানের সুযোগ হয়েছিল পরিবহন ঘিরে। কিন্তু পাথর কোয়ারী বন্ধের কারণে পরিবহন খাতে নেমেছে দূর্যোগ। লোকসানের গ্লানি বইতে না পেরে বেশিরভাগ পরিবহন মালিক এখন দেউলিয়া। সেই সাথে পরিবহন নির্ভর শ্রমিকরা অসহায়, বেকার। এনিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে নানা কর্মসূচি পালন করেছেন সিলেটের শ্রমিকরা। কিন্তু সবকিছুতে ব্যর্থ হয়ে এবার অনির্দিষ্টকালের পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দিয়েছেন সিলেট জেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক সমন্বয় পরিষদ।
আজ ভোর থেকে সেই আন্দোলনে বাস্তবায়নে নামবেন তারা। গত রোববার দুপুরে সিলেটের ৬টি রেজিস্ট্রার্ড সংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত সিলেট জেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক সমন্বয় পরিষদের এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সিলেট জেলায় পরিবহন শ্রমিক কর্মবিরতি পালনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন নেতৃবৃন্দ।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ইতিমধ্যে ৫দফা দাবি জানিয়ে গত সোমবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বরাবরে স্মারকলিপি প্রদান করেছেন শ্রমিকদের প্রতিনিধিত্বকারী সংগঠন সিলেট জেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক সমন্বয় পরিষদ। স্মারকলিপির অনুলিপি সিলেটের প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট সকল সেক্টরে প্রেরণও করেছেন তারা। এছাড়া একই দাবিতে ৮ সেপ্টেম্বর হুমায়ুন রশীদ চত্বরে মানববন্ধন করেছেন শ্রমিকেরা। গতকাল পর্যন্ত তাদের দাবি মেনে না নেয়ায় পরিবহন শ্রমিকদের কর্মবিরতি পালনে বাধ্য হয়েছেন। তাদের ৫দফা দাবির মধ্যে রয়েছে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার ও ডিসি (ট্রাফিক) অপসারণ, ট্রাফিক পুলিশের হয়রানি ও রেকার বাণিজ্যসহ মাত্রাতিরিক্ত জরিমানা বন্ধ, সিলেটে শ্রম আদালতের প্রতিনিধি শ্রমিক লীগের নাম ব্যবহার করে প্রভাব বিস্তারকারী নাজমুল আলম রোমেনকে প্রত্যাহার, উচ্চ আদালতের নির্দেশনার আলোকে পাথর কোয়ারি খুলে দেয়া, ভাঙা রাস্তাগুলোর দ্রুত সংস্কার এবং নতুন সিএনজিচালিত অটোরিকশা বিক্রি বন্ধ ও বিক্রয়কৃত গাড়ির রেজিস্ট্রেশন প্রদান, সেই সাথে বেআইনী গাড়ী অটোবাইক, ব্যাটারীচালিত রিক্সা ও বন্ধের ব্যবস্থা, ডাম্পিংকৃত গাড়ী চলাচল।
গতকাল অনুষ্ঠিত পরিবহন শ্রমিক নেতৃবৃন্দের সভায় জানানো হয়, আমাদের দাবি না পর্যন্ত এই ধর্মঘট অব্যাহত থাকবে। আজ ভোর থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য সিলেট জেলার সকল পরিবহন শ্রমিক কর্মবিরতি পালন করতে বাধ্য হবে। জেলার রাস্তায় বের হবে না কোন গাড়ী। সরকারের কাছে অনতিবিলম্বে ৫ দফা দাবি মেনে নেয়ার আহ্বান জানান তারা।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন