আগের রাতে রবার্ট লেভান্দোভস্কি গোল করতে পারেননি তার পুরনো ক্লাব বায়ার্ন মিউনিখের বিপক্ষে। বার্সালোনাকেও হারতে হয় ম্যাচটি। তবে গতপরশু রাতে ইতিহাদ স্টেডিয়ামে একই পরীক্ষার মুখোমুখি রক্ত মাংসের ‘মেশিন’ নামে খ্যাত আর্লিং হালান্ড। কিন্তু এই নরোয়েইজিয়ান হতাশ করেননি কোচ পেপ গার্দিওয়ালাকে ও সিটি সমর্থকদের। নির্ধারিত সময়ের ৬ মিনিট আগে বাঁপায়ের অসাধারণ এক অ্যাক্রোবেটিক শটে জয়সূচক গোল করলে বরুশিয়া ডর্টমুন্ড ২-১ ব্যবধানে হেরে ইংল্যান্ড ছাড়ে। অন্যদিকে সান্তিয়াগো বার্নাবুতে ম্যাচ শেষ হতে আর দশ মিনিট। তখনও লাইপজিগের বিপক্ষে গোলের মুখ দেখেনি রিয়াল। এই সময় ফেদে ভালভার্দের অসাধারণ গোলে এগিয়ে যায় লস ব্ল্যাঙ্কসরা। ম্যাচ শেষ করে ২-০ ব্যবধানে জিতে। বড় দলগুলোর জয়ের রাতে ঘরেরে মাঠে অ্যালিয়েঞ্জ স্টেডিয়ামে পা কেটেছে জুভেন্টাস। সাবেক ২ বারের চ্যাম্পিয়ন বেনফিকার বিপক্ষে ম্যাচ হেরেছে ২-১ ব্যবধানে। ফলে পর্তুগীজ ক্লাবটি ১৯৯৭ সালের পর আবারও ইতালিতে জয়ের মুখ দেখল।
ডর্টমুন্ড ছাড়ার পর আবারও রিউস, হ্যামেলসদের মুখোমুখি হলেন হ্যালান্ড। এই মৌসুমে ম্যান সিটিতে যাওয়ার পর থেকেই বিস্ময় উপহার দিয়েই চলছেন নরওয়েজিয়ান স্ট্রাইকার। ম্যাচের ৫৬ মিনিটে রিউসের ক্রসে ইংলিশ মিডফিল্ডার জুড বেলিংহামের বুদ্ধিদীপ্ত হেডে পাওয়া গোলে এগিয়ে যায় ডর্টমুন্ড। ৮০ মিনিটে সিটি প্রথমবার প্রতিপক্ষের গোলে শট নেয় এবং তাতেই গোল পান ডিফেন্ডার জন স্টোন্স। ম্যাচ জিততে প্রয়োজন ছিল হ্যালান্ডের জাদু। ক্যানসেলোর পাস থেকে তা তিন করলেনও ‘সিলেবাসের বাহিরের’ এক প্রচেষ্টায়। ডর্টমুন্ড ডিফেন্ডারদের তাকিয়ে দেখা ছাড়া করার কিছুই ছিল না। গোলের বর্ণনায় সিটি কোচ গার্দিওলা টেনে আনলেন নেদারল্যান্ডস কিংবদন্তি ইয়োহান ক্রুইফ আর সুইডেনের স্ট্রাইকার ইব্রাহিমোভিচকে, ‘আপনারা জানেন আমার জীবনে ক্রুইফের কী পরিমাণ প্রভাব আছে। অনেক বছর আগে ক্যাম্প ন্যুতে বার্সেলোনার হয়ে অ্যাটলেটিকোর বিপক্ষে একটি অবিশ্বাস্য গোল করেছিলেন ক্রুইফ, ঠিক হলান্ডের মতো। আর্লিং যে মুহূর্তে গোল করল, আমার মনে পড়ে গেল ক্রুইফের কথা, একই রকমের গোল। ক্যান্সেলোর অ্যাসিস্ট ছিল অবিশ্বাস্য। আমার বন্ধু ইব্রাও শূন্যে পা ছড়িয়ে খেলতে পারে। আর্লিংও তেমনই খেলেছে।’ আর এই অবিশ্বাস্য গোল করা সিটি স্ট্রাইকার নিজে জানান, ‘আমার মনে হয় আমার পা-গুলো অনেক লম্বা। সে কারণেই বলের নাগাল পেয়েছি। গোলটা সুন্দর হয়েছে বলতেই হবে।’
সেল্টিকের বিপক্ষে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে আগের ম্যাচটিতে হ্যামস্ট্রিংয়ের চোটে পড়েছেন করিম বেনজেমা। রিয়াল প্রেমীদের তখন মাথায় হাত। এই পজিশনে যে, কোন রিপ্লেসমেন্ট নেই তাদের। তবে কোচ কার্লো আনচেলত্তিকে উদ্ধার করেছেন উরুগুয়ান মিডফিল্ডারকে ভালভের্দে। এই ২৪ বছর বয়সী মিডফিল্ডার চলতি সপ্তাহেই লা লিগায় মায়োর্কার বিপক্ষে করেছিলেন চোখ ধাঁধানো এক গোল। অন্যদিকে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে রিয়ালের জার্সিতে এটিই কোন উরুগুয়ানের প্রথম গোল। ম্যাচের যোগ করা সময়ে স্বাগতিকদের স্কোর লাইন দ্বিগুণ করেন মার্কো অ্যাসেনসিও। এই জয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে কোচ হিসেবে শততম ম্যাচ জয়ের মাইলফলক স্পর্ষ করলেন আনচেলত্তি। এই ইতালিয়ান কোচের আগে এখন কেবল স্যার অ্যালেক্স ফার্গুসন (১০২ জয়)। এদিকে মদ্রিচ (৩৭ বছর) চ্যাম্পিয়ন্স লিগে গড়লেন দ্বিতীয় বয়স্ক খেলোয়াড় হিসেবে রিয়ালের জার্সিতে খেলার রেকর্ড। ১৯৬৫ সালে করা আগের রেকর্ডটি ছিল পুসকাসের (৩৮ বছর)। ম্যাচশেষে রিয়াল বস আনচেলত্তি প্রশংসায় ভাসালেন ভালভার্দেকে, ‘ও ভালোই খেলছে। ওর খেলায় এই একটাই কমতি ছিল। প্রতিপক্ষ বক্সে আরও বেশি ঢোকা। সেটি ও এখন করতে পারছে নিয়মিত, গোলও পাচ্ছে।’
ইসরায়েলের ক্লাব ম্যাকাবি হাইফার মাঠে পিএসজির জয় ত্রয়ী মেসি, এমবাপ্পে ও নেইমারের গোলে। ম্যাচের ২৪ মিনিটে শেরির গোলে এগিয়ে যায় স্বাগতিকরা। ৩৭ মিনিটে মেসির গোলে সমতায় ফেরে পিএসজি। এই গোলের ফলে আসরটির ৩৯টি (রোনালদোর ৩৮টি) ভিন্ন প্রতিপক্ষের বিপক্ষে গোল করার রেকর্ড করলেন আর্জেনটাইন জাদুকর। ম্যাচের ৬৯ মিনিটে মেসির থ্রু ধরে এমবাপ্পের বাঁকানো শটে পিএসজির এগিয়ে যাওয়া। মেসি-এমবাপ্পে গোল পেলে নেইমার আর বাকি থাকেবেন কেন? নির্ধারিত সময়ের ২ মিনিট আগে গোল পেলেন ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ডও। জয় এলেও এমবাপ্পে খুশি নন, ‘মাঠটা খুব একটা ভালো ছিল না, তবে এটা কোনো অজুহাত নয়। বিরতির পর আমরা কৌশলে কিছু বদল এনেছি, যেগুলো কাজে লেগেছে। তবে আমরা কীভাবে খেলতে চাই সেটি নিয়ে আমাদের আরও কাজ করতে হবে।’ একই ধাচে কথা বললেন কোচ গালতিয়ার, ‘আমরা সুসংগঠিত ছিলাম না, যেন দুই ভাগে ভাগ হয়ে গিয়েছিলাম। ভুলগুলো শুধরে নিতে হয়েছিল এবং বিরতির পর আমরা অনেক বেশি সঙ্গবদ্ধ ছিলাম।’
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন