অর্থনৈতিক রিপোর্টার : দেশের তৈরি পোশাক কারখানায় কর্মরত শ্রমিকদের বিনামূল্যে প্রজনন সেবা দিতে ত্রিপক্ষীয় সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হয়েছে। এ চুক্তির আওতায় পোশাক কর্মীদের প্রজনন স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতনতা বাড়ানো হবে। একই সঙ্গে জন্ম নিয়ন্ত্রণ সামগ্রী বিতরণও করা হবে।
গতকাল রাজধানীর কারওয়ান বাজারে বিজিএমইএ কার্যালয়ে এই সমঝোতা স্মারক অনুষ্ঠিত হয়। পরিবার পরিকল্পনা অধিদফতরের পক্ষে মহাপরিচালক মোহাম্মদ ওয়াহিদ হোসাইন (এনডিসি), বিজিএমইএ’র পক্ষে সহ-সভাপতি (অর্থ) মোহাম্মদ নাসির এবং এনজেন্ডার বাংলাদেশের মায়ের হাসি-২’র প্রকল্প পরিচালক ড. আবু জামিল ফয়সাল নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেন।
জানা গেছে, তৈরি পোশাক খাতে এই মুহূর্তে পঞ্চাশ লাখ সক্ষম দম্পতি রয়েছেন, যারা বেশিরভাগ সময়ই সরকারি হাসপাতাল বা কমিউনিটি ক্লিনিকে গিয়ে প্রজনন স্বাস্থ্যসেবা নিতে পারেন না। যাদের বয়স ১৫ থেকে ৪৯ বছর। এরা সহজেই প্রজনন স্বাস্থ্যসেবা নিতে পারবে। এ কর্মসূচির মাধ্যমে পোশাক শ্রমিকদের সচেতন করা এবং তাদের মধ্যে প্রয়োজনীয় জন্মনিয়ন্ত্রণ সামগ্রী বিতরণ করবে সরকার। পরিবার পরিকল্পনা অধিদফতরের ফিল্ড সার্ভিস ডেলিভারি প্রোগ্রাম মূলত এই কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে। এই চুক্তির মাধ্যমে জন্ম নিরোধক সামগ্রী সরবরাহ করবে পরিবার পরিকল্পনা বিভাগ। আর এই সামগ্রী ব্যবহার পদ্ধতি সম্পর্কে প্রশিক্ষণ দেবে এনজেন্ডার বাংলাদেশ। যা বিজিএমইএ’র মাধ্যমে পোশাক শ্রমিকের প্রত্যেক সক্ষম দম্পতির মাঝে তা বিতরণ করা হবে। গর্ভধারণ করলে চাকরি হারাতে হতে পারে, এমন আশংকায় অনেকে অনিরাপদ উপায়ে গর্ভপাত করাতে গিয়ে যে ঝুঁকির মুখে পড়েন। এই কর্মসূচি সেসব পরিস্থিতি এড়াতে এবং নিরাপদ প্রজনন স্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে সাহায্য করবে।
মোহাম্মদ ওয়াহিদ হোসাইন (এনডিসি) বলেন, তৈরি পোশাক কারখানায় সাধারণত প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে নারী শ্রমিকেরা আসেন। তারা প্রজনন ও স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতন নয়। প্রজনন সংক্রান্ত সমস্যাগুলো সচরাচর ডাক্তারদের সঙ্গে আলোচনা করে না। বিভিন্ন ক্লিনিকে অদক্ষদের মাধ্যমে গর্ভপাত ঘটান। এতে তারা নানাবিধ ক্ষতির সম্মুখীন হন। এ উদ্যোগের মাধ্যমে এই সমস্যা নিরসন হবে। তিনি বলেন, আগামী দু-এক বছেরের মধ্যে এর সফলতা পাওয়া যাবে।
বিজিএমইএ’র সহ-সভাপতি (অর্থ) মোহাম্মদ নাসির বলেন, পোশাক শ্রমিকদের কল্যাণে বীমা সুবিধাসহ সব ধরনের সুবিধা দিয়ে আসছে বিজিএমইএ। সে ধারাবাহিকতায় তাদের স্বাস্থ্য ও প্রজনন নিরাপত্তায় পরিবার পরিকল্পনার উপকরণ (পিল, কনডম, ইনজেকশন) বিতরণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন