বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৮ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সারা বাংলার খবর

চাঁদপুর জেলা পরিষদ নির্বাচনে আ.লীগ প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল

সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামী হওয়ায়

চাঁদপুর থেকে স্টাফ রিপোর্টার, | প্রকাশের সময় : ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ৭:২৭ পিএম

চাঁদপুর জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী ইউসুফ গাজী প্রতারণার মামলায় পাঁচ বছরের সাজাপ্রাপ্ত ও ‘পলাতক আসামী’। মনোনয়ন যাচাই-বাছাইকালে ইউসুফ গাজীর মনোনয়নপত্র বাতিল করেছেন জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান।

যাচাই-বাছাই কালে জেলা পরিষদ আইন অনুযায়ী নির্বাচনে ‘অযোগ্য’ হওয়ায় তার মনোনয়নপত্র বাতিলের আবেদন জানান সদ্য পদত্যাগী চাঁদপুর জেলা পরিষদ প্রশাসক ও চেয়ারম্যান প্রার্থী ওচমান গনি পাটওয়ারী।
১৮ সেপ্টেম্বর রোববার বিকেল ৫টায় প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাইশেষে এ ঘোষণা দেন রিটার্নিং অফিসার।
রিটার্নিং কর্মকর্তা জানান, ওই চেয়ারম্যান প্রার্থী চাইলে মনোনয়নপত্র বাতিল আদেশের বিরুদ্ধে আগামী তিন দিনের মধ্যে আপিল করতে পারবেন।

জানা গেছে, ম্যাচ ফ্যাক্টরিতে কাঠ সরবরাহের যৌথ ব্যবসার প্রস্তাবনার প্রেক্ষিতে ৩ লাখ ৮৫ হাজার টাকা নিয়ে প্রতারণার অভিযোগে ইউসুফ গাজীর বিরুদ্ধে ২০০৪ খুলনার অতিরিক্ত চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করেন স্থানীয় হুমায়ুন কবির।
এ মামলায় বিচারিক আদালত আসামীকে খালাসের রায় দিলেও ২০০৮ সালে ওই রায়ের বিরুদ্ধে খুলনা দায়রা জজ আদালতে আপিল করেন বাদী। আপিল শুনানীশেষে ইউসুফ গাজীর বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় ২০১১ সালের ৫ অক্টোবর পাঁচ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড, ৫ হাজার টাকা অর্থদণ্ড এবং অনাদায়ে আরও ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়।
আদালতের রায়ে উল্লেখ করা হয়, এ রায় তিনি গ্রেফতার তথা আত্মসমর্পণের তারিখ হতে কার্যকর হবে। সেই সাথে আসামীকে আগামী ত্রিশ দিনের মধ্যে সাজা ভোগের জন্য খুলনার অতিরিক্ত চীফ মেট্টোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেয়া হয়।
এরপর ওই দন্ডাদেশের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করা হলে হাইকোর্ট বিভাগের ডিভিশন বেঞ্চ রুল জারি করে দাণ্ডাদেশের উপর স্থগিতাদেশ দেন। পরবর্তীতে ২০১৭ সালে রীট পিটিশনটি পূর্ণাঙ্গ শুনানী শেষে বিচারপতি মাইনুল হোসেন চৌধুরী এবং বিচারপতি জে.বি. এম হাসানের আদালত দাণ্ডাদেশের স্থগিতাদেশ বাতিল করে পাঁচ বছরের সাজা ও অর্থদণ্ড বহাল রাখেন। এরপর ইউসুফ গাজী উচ্চ আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে ২০১৭ সালে একটি পিটিশন দায়ের করলেও আদালত দণ্ডাদেশ স্থগিত না করে ১০ সপ্তাহের মধ্যে নিয়মিত লিভ টু পিটিশন দায়ের করার নির্দেশ দেন। অন্যথায় তা তৎক্ষনাৎ খারিজ হবে। কিন্তু ২০১৯ সালে লিভ টু আপিল করেন।


রিটার্নিং অফিসারের কাছে অভিযোগকারী জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী ওচমান গনি পাটওয়ারী তার অভিযোগে উল্লেখ করেন, যেহেতু আসামী আপীল আদালতের রায় অনুযায়ী আত্মসমর্পণ না করে পলাতক থাকে এবং তার রাজনৈতিক প্রভাব প্রতিপত্তির মাধ্যমে সাজা পরোয়ানা জারি করতে দেননি। তাই তিনি বর্তমানে আইনের চোখে সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামী হিসেবে চিহ্নিত।
অভিযোগে বলা হয়, জেলা পরিষদ আইন ২০০০ এর ৬(২)ঘ ধারা অনুযায়ী ‘নৈতিক স্খলনজনিত কোন ফৌজদারি অপরাধের কোন ব্যক্তি দোষী সাব্যস্ত হয়ে অনুন্য দুই বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হন, তিনি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করার যোগ্য হবেন না।’ এ অবস্থায় তার নির্বাচনী মনোনয়নপত্র বাতিলযোগ্য এবং তিনি নির্বাচন করার অযোগ্য।
এ বিষয়ে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান প্রার্থী আলহাজ্ব ইউসুফ গাজীর মুঠোফোনে কয়েকবার ফোন করলেও তিনি রিসিভ করেননি।

 

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন