সরকার দেশে নৈরাজ্য সৃষ্টির পায়তারা করছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, আমাদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলন শুরু হয়েছে সাধারণ মানুষের চাল-ডাল-তেলের দাম কমানোর জন্য, দুর্নীতি নির্মূল করা, ভোটের অধিকারকে রক্ষার করার জন্য।
আর এই আওয়ামী লীগ সরকার তাদের পেটুয়া বাহিনী নামিয়ে দিয়েছে। ওরা হত্যা করেছে ভোলায় ছাত্রদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতাকে ও নারায়গঞ্জে যুবদলের নেতাকে। শনিবার আমাদের স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা বেগমকে আহত করেছে, ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলুকে আঘাত করেছে, আমাদের নারী নেত্রীদেরও তারা রেহাই দেয়নি, তাদেরও তারা আঘাত করেছে। আজকে এই সরকার একটা নৈরাজ্য সৃষ্টি করতে চায়। বাংলাদেশের মানুষ যখন তাদের অধিকার আদায়ের জন্য লড়াই করছে, সংগ্রাম করছে তখন তারা সন্ত্রাস, হত্যা, সভা পণ্ডের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে তারা নৈরাজ্য সৃষ্টি করতে চায়। যাতে করে তাদের ক্ষমতায় টিকে থাকতে সোজা হয়, সহজ হয়।
গতকাল রোববার নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে মহানগর বিএনপি উত্তর-দক্ষিণের যৌথ উদ্যোগে ঢাকার পল্লবীসহ সারাদেশে দলের কর্মসূচিতে পুলিশি গুলিবর্ষণ ও আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীদের হামলার প্রতিবাদে এই সমাবেশ হয়।
মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে বিভিন্ন জায়গায় আপনারা (ক্ষমতাসীনরা) সন্ত্রাস করছেন এবং সভা-সমাবেশ করতে অনুমতি দিচ্ছেন না। এসব করবেন না। এভাবে বাংলাদেশের মানুষকে ঠেকিয়ে রাখা যাবে না, নিপীড়ন-দমন করে বাংলাদেশের মানুষ কখনো দাবিয়ে রাখতে পারবেন না। দুর্বার গণআন্দোলনের মধ্য দিয়ে আপনাদেরকে পরাজিত করা হবে। রাজধানীতে চলমান কর্মসূচির সময়ে দলের গ্রেফতারকৃত নেতা-কর্মীদের অবিলম্বে মুক্তি দাবি জানান বিএনপি মহাসচিব
তিনি বলেন, মিয়ানমার বোমা মেরে শেষ করে দিচ্ছে। তারা সীমান্তে বোমা মারছে, আমাদের এখানে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের তারা গুলি করছে। সরকার নিরব। নিরব কেনো? আসলে এদের (সরকার) কোমড় সোজা নেই। জনগণের দ্বারা নির্বাচিত নয় বলে তারা বুক ফুলিয়ে মিয়ানমারের বোমা নিক্ষেপের প্রতিবাদ করতে পারছে না, বিশ্ব জনমতকে একখানে আনতে পারছে না।
বিএনপি মহাসচিব সরকারের উদ্দেশ্যে বলেন, এখনো সময় আছে পদত্যাগ করুন, পদত্যাগ করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা দিন। সংসদ বিলুপ্ত করুন এবং একটি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠন করে নতুন পার্লামেন্ট ও সরকার তৈরি করতে হবে। আসুন আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ হই। আহবান জানাব সকল রাজনৈতিক দলগুলোকে, সমস্ত গণতন্ত্রকামী মানুষকে এবং দেশপ্রেমিক মানুষকে আমরা একসঙ্গে ঐক্যবদ্ধ হয়ে এই ভয়াবহ দানবীয় শক্তি এই আওয়ামী লীগকে যারা জোর করে ক্ষমতা দখল করে আছে তাদেরকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে জনগনের সরকার প্রতিষ্ঠা করি।
মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, ওরা মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে। এই কথা বললে তাদের গায়ে আগুন লাগে, তেলে-বেগুনে জ্বলে উঠে। বলে আমরা তো এই সমস্তের মধ্যে নেই। কিছু দিন আগে গুমের কথা বলা হলো তারা বললো গুম হয় না। এটা নাকী তারা নিজেরা নিজেরা গুম হয়ে যায় অথবা ভূমধ্য সাগরে পানির নিচে গিয়ে ডুবে মরে।জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের প্রধান ঢাকায় এসে বলেছেন, বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘন করা হচ্ছে, এখানে গুম হচ্ছে, এখানে মানুষের অধিকার কেড়ে নেয়া হচ্ছে।
স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, মোমবাতি প্রজ্জ্বলনের নিরব কর্মসূচিও সরকারের সহ্য হলো না। তাহলে কী দাঁড়ালো? এদেশের মানুষ কথা বলতে পারবে না। আপনারা নিপীড়ন নির্যাতন করে যাবেন আর আমরা সহ্য করতে থাকবো। আমি বলতে চাই এটা আর হবে না। যথেষ্ট হয়েছে। সারাদেশের জনগণ আজকে ফুঁসে উঠেছে, সারা বাংলাদেশের জনগণ আজ রাজপথে নেমে এসেছে। সভা-সমাবেশে সরকার বাঁধা প্রদান ও অনুমতি দিচ্ছে না বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমানের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব আমিনুল হক ও রফিকুল আলম মজনুর পরিচালনায় সমাবেশে দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবদুস সালাম, জয়নুল আবদিন ফারুক, আবুল খায়ের ভুঁইয়া, মশিউর রহমান, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, কেন্দ্রীয় নেতা ফজলুল হক মিলন, আজিজুল বারী হেলাল, মাসুদ আহমেদ তালুকদার, কামরুজ্জামান রতন, শিরিন সুলতানা, মীর নেওয়াজ আলী, সাইফুল আলম নিরব, মুক্তিযোদ্ধা দলের সাদেক আহমেদ খান, যুব দলের সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, মোনায়েম মুন্না, স্বেচ্ছাসেবক দলের এসএম জিলানী, রাজীব আহসান, কৃষক দলের শহিদুল ইসলাম বাবুল, ছাত্র দলের কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবন, সাইফ মাহমুদ জুয়েলসহ মহানগরের নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।###
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন