শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

খেলাধুলা

‘সুইস নাইফে’ কাটা পড়ল স্পেন

স্পোর্টস রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ১২:০০ এএম

ক্যারিয়ারের অন্তিমে গ্রেট মোহাম্মদ আলীর পাঞ্চ গুলো আর প্রতিপক্ষের ভয়ের কারন ছিল না, ফেদেরারের ব্যাকহ্যান্ড হারিয়ে ফেলেছিল তেজ। এমনকি উইসান বোল্টকেও ভুগিয়েছে হ্যামস্ট্রিংয়ের চোট। গতপরশু রাতে নেশন্স লিগের ম্যাচে চেক প্রজাতন্ত্রের বিপক্ষে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর যে ধরনের পারফরম্যান্সের দেখা মিলল, তাতে তিনি বাকি লিজেন্ডদের মতই কি শেষের ইঙ্গিত দিচ্ছেন? যদিও ম্যাচের শুরুর দিকে মুখমন্ডল ও নাকে পাওয়া চোট অবশ্য এই ম্যাচে তার অপ্রত্যাশিত পারফরম্যান্সের একটা কারণ বটে। এত প্রতিকূলতা নিয়েও করলেন একটি এসিস্ট। কিন্তু ফুটবলারটার নাম যখন রোনালদো, তখন এইটুকুতে কি প্রাণ ভরে! আন্তর্জাতিক ফুটবলের সর্বোচ্চ গোলের (১১৭ গোল) মালিক রোনালদো অতটা উজ্জ্বল না হলেও তার দল পর্তুগাল ঠিকই জ্বলে উঠলো আপন মহিমায়। তাতেই চেকের মাঠে গিয়ে তাদেরই ৪-০ গোলে ধরাশায়ী করে আসলো ফার্নান্দো সান্তসের পর্তুগাল।

প্রাগের ফর্চুনা অ্যারেনায় ম্যাচের ১৪তম মিনিটে প্রতিপক্ষের গোলরক্ষকের হাত লেগায় মুখ ও নাকে আঘাত পান পর্তুগিজ কাপ্তান রোনালদো। নাক থেকে রক্ত ঝড়তে থাকে অনবরত। কিন্তু অদম্য রোনালদোকে কি এটুকু আঘাত থামাতে পারে? প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে আবারঅ নামলেন মাঠে। তবে চোটের আগে ও পরে এমন কিছু গোলের সুযগ মিস করলেন যেগুলো বছর খানেক আগেও চোখ বন্ধ রেখে করে ফেলতে পারতেন এই ৩৭ বছর বয়সী তারকা। যদিও তার ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড সতীর্থ দিয়াগো দালোটের জোড়া গোল ও ব্রুনো ফের্নান্দেসের একগোল দলের জয় অনেকটা নিশ্চিত করে ফেলে। রাফায়েল লিয়াওয়ের বদলি হিসেবে নামা দিয়াগো জোটা ৮২ তম মিনিটে হেডে শেষ গোলটি করেন। রোনালদোর বাড়িয়ে দেওয়া আরেক হেড এসিস্ট থেকে আসে গোলটি।
প্রথমার্ধে ব্রুনোর গলের পুর্বে নিজেদের ডিবক্সে বল রোনালদো হাতে লাগলে পেনাল্টি পায় চেক। কিন্তু প্যাট্রিক শিকের নেওয়া শতটি বারের উপর দিয়ে চলে যায়। ম্যাচ শেষে পর্তুগিজ ম্যানেজার সান্তোস বলেন তিনি এখনও দলের পারফরম্যান্সে পুরোপুরি সন্তষ্ট নয়, ‘এটি নিখুঁত প্রদর্শনী ছিল না। প্রথমার্ধে, আমাদের ডি-বক্সের আশেপাশে কিছু সমস্যা ছিল। কিন্তু এটিও ঠিক যে, একমাত্র সেই সমস্যা ছাড়া বাকিটা সময় আমরা ভালো মানের ফুটবল খেলেছি।’
অন্যদিকে নেশন্স লিগ ‘এ’র গ্রুপ-২ এর আরেক ম্যাচে স্পেনের মাঠে স্বাগতিকদের হারিয়েছে সুইজারল্যান্ড। জারাগজার মাঠ ‘লা রোমারেদা’তে স্পেনের ছন্দময় ফুটবলের তাল-লয়-সুর সবই ছিল অনুপস্থিত। ম্যাচটি লুই এনরিকের দল হেরে যায় ২-১ গোলে। এটি ঘরের মাঠে স্প্যানিশদের গত ৪ বছরে প্রথম পরাজয় এবং বিগত ১৯ বছরে দ্বিতীয়।
তবে ম্যাচের ৭০ শতাংশ সময় বল নিজেদের দখলে রেখেছিল স্পেন। কিন্তু গোলের ঠিকানা পেল মাত্র ১বার। স্প্যানিশদের খেলায় ছিল না গতি ও আগ্রাসন, দেখা যায়নি খুব একটা সৃষ্টিশীলতাও। বার্সালোনার দুই মিডফিল্ডার গাভি ও পেদ্রি ছিলেন একদমই অকার্যকর। তাতে ম্যাচ হেরে তারা হারিয়ে ফেলে শীর্ষস্থানও। ম্যাচ শেষে এনরিক বিরক্তি উগড়ে দিলেন, ‘আমরা এমন এক প্রতিপক্ষের সঙ্গে খেলেছি, যারা ছিল আগ্রাসী, চাপ তৈরি করেছে শারীরিকভাবে। আমরা ছিলাম দিশাহীন ও এলোমেলো। এই দলকে কোচিং করানোর শুরুর পর থেকে এতটা বাজে খেলতে দেখেছি বলে আর মনে পড়ে না।’ পর্তুগালের বিপক্ষে ম্যাচটিকে ফাইনালের আখ্যা দিলেন সান্তোস, ‘দ্রুতই এসব শুধরে নিতে হবে আমাদের, কারণ সামনে অপেক্ষায় পর্তুগালে ফাইনাল। সেখানে গিয়ে আমাদের জিততেই হবে।’
৫ ম্যাচ খেলে স্পেনের পয়েন্ট ৮ আর ১০ পয়েন্ট নিয়ে এখন সবার ওপরে সান্তোসের পর্তুগাল। সেমিতে খলার জন্য এখন এনরিকের দলের একমাত্র উপায় পর্তুগিজদের হারানো। কাজটি এমনিতে সহজ নয়, তা আরও কঠিন হবে ভেন্যুর কারণেও। আগামী বুধবার ম্যাচটি হবে পর্তুগালে। ব্রাহার মিউনিসিপাল স্টেডিয়ামে। তার আগে স্পেনের এই পরাজয় পর্তুগালের নিকট স্বস্তিদায়ক কিনা জানতে চাইলে ম্যাচ সেরা দালোট জানান, ‘স্পেন আজ (গতপরশু) রাতে জিতলো কি হারলো, তা আমাদের লক্ষ্য পরিবর্তন করে না। আমরা ব্র্যাহায় (স্পেনের বিপক্ষে) খেলতে নামবো জেতার জন্য। এটি আমাদের জন্য ফাইনাল।’

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন