শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

খেলাধুলা

ওপেনিংয়ে ‘ট্রায়াল’, পেসারদের ‘রোটেশন’

অগ্নিপরীক্ষার ত্রিদেশীয় সিরিজ

স্পোর্টস রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ১২:০৩ এএম

আর মাত্রও দুই সপ্তাহ। আসছে ১৬ অক্টোবর থেকেই মাঠে গড়াতে যাচ্ছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। এই সময়েও বাংরাদেশ শিবিরে মাথাব্যথার কারণ ওপেনিং জুটি! এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজছে খোদ বাংলাদেশ টিম ম্যানেজমেন্ট। এশিয়া কাপে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ওপেনিংয়ে চমক উপহার দেয় বাংলাদেশ। মেইক শিফট ওপেনার হিসেবে মেহেদী হাসান মিরাজ ও সাব্বির রহমানকে নামানো হয়। যা দেখে অবাক হয়েছেন অনেকেই। সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে দুই ম্যাচ সিরিজেও এই দুজনই নামেন ওপেন করতে। তিন ম্যাচের মধ্যে দুই ম্যাচে মিরাজ রান পেলেও সাব্বির ছিলেন ব্যর্থ। রান পাওয়া মিরাজের পেস বল সামলানো নিয়েও আছে প্রশ্ন। শেষ পর্যন্ত বিশ্বকাপে এই জুটিই থাকছে কিনা তা বুঝে উঠতে পারছেনা বাংলাদেশ।
তবে বোর্ড সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন জানালেন, দলের আদর্শ সমন্বয় পেতে আসন্ন ত্রিদেশীয় সিরিজেও নানান কিছু বাজিয়ে দেখবেন তারা। গতপরশু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিন উপলক্ষে মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে কেক কাটেনপাপন। দুবাই থেকে ফিরে টিম ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ সুজনও এসেছিল বোর্ডে। তাকে নিয়েই বিসিবি প্রধান সভা করেন। পরে গণমাধ্যমকে জানান, আদর্শ ওপেনিং জুটি খুঁজে পেতে নানান কিছু চেষ্টা করছেন তারা। সেই চেষ্টা অব্যাহত থাকবে নিউজিল্যান্ডেও, ‘না (এটাই যথার্থ কিনা)। আসলে ওপেনিং এইগুলো চেষ্টা করছে তারা। আমি যখন প্রথম শুনলাম আজকে নামবে মেহেদী হাসান মিরাজ ও সাব্বির। আমি তো অবাক। আমি খালি বলেছিলাম, “আমি কখনো সাব্বিরকে ওপেন করতে শুনিনি, দেখিনি।” আমার ধারণা এইগুলা ট্রায়াল দিচ্ছে, চেষ্টা করছে। নিউজিল্যান্ডে গিয়ে আরও কিছু চেষ্টা করবে। তারপর ঠিক করবে। বিশ্বকাপে যে দলটা খেলবে। এটাকেই আমরা কন্টিনিউ করব টানা এক বছর পরের বিশ্বকাপ পর্যন্ত।’
শেষ পর্যন্ত যে কম্বিনেশন খুঁজে বের করে বিশ্বকাপে নামানো হবে, সেই দলটাকেই আগামী বেশ কিছুদিন টানা খেলাতে চান বিসিবি সভাপতি, ‘প্রচুর এক্সপেরিমেন্ট হচ্ছিল গত দেড় বছরে। এই এক্সপেরিমেন্টগুলো বন্ধ করে এদেরকে টানা এক বছর খেলাতে হবে। একটা স্কোয়াড তৈরি করে খেলাতে হবে। যেটা শ্রীলঙ্কা করেছে, এবং সফল হয়েছে। চার বছর একটা নতুন দলের উপর কাজ করে ফল পেয়েছে।’ আমিরাতের বিপক্ষে সিরিজের ফল নিয়ে সন্তুষ্টি থাকলেও অস্ট্রেলিয়ায় ভিন্ন রকম চ্যালেঞ্জে পড়তে হবে। বিশ্বকাপে নামার আগে নিউজিল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজ তাই বড় পরীক্ষার মঞ্চ মনে করছে বিসিবি। আপাতত সেদিকে চোখ বোর্ড প্রধানের, ‘একটা জিনিস মনে রাখতে হবে। অস্ট্রেলিয়ার সম্পূর্ণ ভিন্ন পরিবেশ। ওই অস্ট্রেলিয়ার কন্ডিশন, এখানে কতগুলো ছেলে তাদের কোন ধারণাই নাই। ওখানকার যে উইকেট, ওখানকার যে পেস-বাউন্স। ওখানে যাদের বিরুদ্ধে খেলবে। উদাহরণ দেই যেমন, রাবাদা, বুমরাহ, শাহিন আফ্রিদি। কাজেই জিনিসটা একদম ভিন্ন। কিন্তু আমার ধারণা নিউজিল্যান্ডে যেহেতু একটা ত্রিদেশীয় সিরিজ আছে। এটাতে তাদের হয়ত কিছু অনুশীলন হবে। দেখা যাক ওখানে কি করে।’
অস্ট্রেলিয়ায় বিশ্বকাপ। তার উপর সংস্করণটা ২০ ওভারের মারকাটারী। যেখানে বড় ভূমিকা রাখতে হবে পেসারদের। সেখানকার কন্ডিশনে ব্যাটারদের পাশাপাশি সুবিধা পাবেন পেসাররা, স্পিনাররা সেক্ষেত্রে অনেকটাই পিছিয়ে থাকবেন। সেই মেগা ইভেন্টের আগে পেসারদের ‘হিসেব’ করে ব্যবহার করতে চায় বাংলাদেশ। আরব আমিরাতের বিপক্ষে সিরিজে পেসারদের নিয়ে রোটেশন পলিসি প্রয়োগ করতে দেখা গেছে। প্রথম ম্যাচে মুস্তাফিজুর রহমানের সাথে ছিলেন বিশ্বকাপের স্ট্যান্ডবাই সদস্য শরিফুল ইসলাম। দ্বিতীয় ম্যাচে দুজনকে একাদশের বাইরে রেখে সুযোগ দেওয়া হয় তাসকিন আহমেদ ও এবাদত হোসেন চৌধুরীকে।
জাতীয় দলের টি-টোয়েন্টি কোচ ও টেকনিক্যাল কনসালটেন্ট শ্রীধরন শ্রীরাম জানিয়েছেন, ত্রিদেশীয় সিরিজেও পেসারদের ক্ষেত্রে এমন রোটেশন পলিসি প্রয়োগ করা হবে, ‘আমরা আমাদের ফাস্ট বোলারদের ঘুরিয়ে ফিরিয়ে খেলাতে চেয়েছিলাম এবং সামনেই একই কাজ করা হবে। সামনে ত্রিদেশীয় সিরিজ আছে। এটা ছেলেদের জন্য ভিন্নধর্মী এক চ্যালেঞ্জ হবে।’ আরব আমিরাতের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে কষ্ট করে জয় পেতে হলেও দ্বিতীয় ম্যাচে দাপুটে পারফরম্যান্স ছিল টাইগারদের, যা দেখে খুশি শ্রীরাম, ‘আমি তাদের বারবার উন্নতির কথা বলেছিলাম এবং তারা সেটা করে দেখিয়েছে। ম্যাচে সবকিছু স্বাভাবিকই ছিল। বল ভিজে যাচ্ছিল না। পরিকল্পনা বাস্তবায়নের কৃতিত্ব ছেলেদের দিতেই হবে।’
ত্রিদেশীয় সিরিজটি খেলতে আজই নিউজিল্যান্ডের উদ্দেশে উড়াল দেবে বাংলাদেশ দল। তবে ক্যারিবিয়ান লিগ খেলে সেখান থেকেই সরাসরি দলের সঙ্গে যোগ দেবেন অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। সিরিজে টাইগাররা অন্তত চারটি ম্যাচ খেলবে। ৭ ও ১৩ অক্টোবর পাকিস্তান এবং ৯ ও ১২ অক্টোবর নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে খেলবেন সাকিবের দল। ফাইনালে উঠলে ম্যাচের সংখ্যা আরও একটি বাড়বে। সিরিজ শেষে সেপ্টেম্বরের ১৪ বা ১৫ তারিখ অস্ট্রেলিয়ার ব্রিসবেনে যাবে টাইগাররা। সেখানে খেলবে দুটি প্রস্তুতি ম্যাচ। ১৭ অক্টোবর বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ আফগানিস্তান। ১৯ অক্টোবর দ্বিতীয় ও শেষ প্রস্তুতি ম্যাচের প্রতিপক্ষ দক্ষিণ আফ্রিকা, যারা বিশ্বকাপে আছে বাংলাদেশেরই গ্রুপে। আনুষ্ঠানিক প্রস্তুতি ম্যাচ শেষে হোবার্টে বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে মাঠে নামবে দল। ২৪ অক্টোবর নিজেদের প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ বিশ্বকাপ পেরিয়ে আসা দল। ২৭ অক্টোবর বিশ্বকাপের সুপার টুয়েলভে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে টাইগারদের প্রতিপক্ষ দক্ষিণ আফ্রিকা।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন