এশিয়া কাপ ক্রিকেটের আগের আসরের চ্যাম্পিয়ান বাংলাদেশের মেয়েরা। এবার সেই খেলা ঘরের মাঠে। চেনা মাঠ, অভ্যস্ত আবহাওয়া। সেই সাথে নিরংকুশ দর্শক সমর্থন । ফলে এবার স্বাভাবিকভবেই লক্ষ্য শ্রেষ্ঠত্ব হাসিলের। সেই লক্ষ্য আজ মাঠে নামবে বাংলাদেশের দামাল মেয়েরা। সকালে সিলেট ক্রিকেট স্টেডিয়ামের গ্রাউন্ড-২ তে বাংলাদেশ-থাইল্যান্ডের ম্যাচ দিয়েই মেয়েদের এশিয়া কাপ ক্রিকেট মাঠ মাতবে। এই টুর্নামেন্টে অংশ নিচ্ছে সাতটি দল।
এশিয়ার শ্রেষ্ঠত্বের ক্রিকেট মুকুট নিজেদের ধরে রাখার লড়াইয়ে নামার আগে গতকাল শেষবারের মতো নিজেদের ঝালিয়ে নিয়েছেন জ্যোতি-সালমারা। দুপুরে সিলেট ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অনুশীলন করে বাংলাদেশ দল। এসময় অনুশীলন সেরে নেয় থাইল্যান্ডও। অনুশীলনের আগে সাংবাদিকদের সাথে নিজেদের নিয়ে কথা বলেন বাংলাদেশ দলনেতা নিগার সুলতানা জ্যোতি। আগের দিন সালমা জানিয়েছিলেন নির্দিষ্ট কোন টার্গেট নয়, ম্যাচ বাই ম্যাচ ভালো করতে চান তারা। তবে কোন রাখঢাক না রেখেই নিজেদের লক্ষ্যের কথা জানিয়ে দিলেন দলনেতা জ্যোতি। জ্যোতির লক্ষ্য দুটি- ভালো খেলা সেই সাথে ট্রফি, ‘আমরা ভালো ক্রিকেট খেলতে চাই। সা¤প্রতিক সময়ে আমরা ভালো খেলছিও। এই ট্রফিটা আমাদের ছিলো। সেটা ধরে রাখার চেষ্টা করবো। প্রতিপক্ষ নিয়েও ভাবছেন না জ্যোতি। তার মতে, অন্য টিম নিয়ে আমাদের ভাবনার কিছু নেই। শুধু নিজেদের সেরাটা দিতে পারলেই হলো। সফলতা আসবেই মুঠোয়।’ মেয়েদের সবচেয়ে বেশি খেলা হয় সিলেটের মাঠেই। অনুশীলন ক্যাম্পও হয় এখানে। ফলে সিলেটই তাদের হোম গ্রাউন্ড জানিয়ে জ্যোতি বলেন, ‘মেয়েদের হোম ভেন্যু সিলেট। এখানে আমরা সবসময় খেলি। এই হোম ভেন্যুর সুবিধা কাজে লাগাতে চেষ্টা করবো। আমরা যেহেতু এখানে বেশি খেলি তাই এখানকার সবকিছুই আমাদের অনুক‚লে।’ ঘরের মাঠে খেলায় সুবিধা যেমন আছে তেমন আছে চাপও। থাকে দর্শকের প্রত্যাশার চাপও। তবে এসব চাপ একেবারেই আমলে নিতে চান না জ্যোতি। তার ভাষ্য, ‘নিজের ঘরে খেলার কোন চ্যালেঞ্জ নেই। আমাদের টার্গেট ম্যাচ বাই ম্যাচ খেলা। আলাদা কোন পরিকল্পনাও নেই আমাদের। যখন যে পরিস্থিতি আসে সে পরিস্থিতি অনুযায়ী খেলতে হবে। আমি ভালো ফর্মে আছি, সেটা ধরে রাখতে পারলে টিমের জন্য ভালো হবে।’
মাঠ চ্যালেঞ্জ নয়, প্রতিপক্ষ নিয়েও ভাবনা নেই। তাহলে চ্যালেঞ্জ কি তাও জানালেন জ্যোতি, ‘চ্যালেঞ্জ হচ্ছে পুরো টিম মিলে ভালো পারফর্ম করা। এটা না করতে পারলে সাফল্য আসবে না। ব্যাটিং, বোলিং ফিল্ডিং তিনটি ক্ষেত্রেই সবাইকে করতে হবে আশাতীত পারফরমেন্স।’
এদিকে চলতি শরতেও ভ্যাবসা গরমে অস্থির সিলেট। দিনভর কাঠফাঁটা রোদ। তবে আবহাওয়ার এই বৈরিতা তেমন সমস্যা সৃষ্টি করবে না জানিয়ে ট্রাইগ্রেস দলনেতা বলেন, ‘আবহাওয়া নিয়ে চিন্তা নেই, আবুধাবিতে আরও গরম ছিলো। আমরা সেখানে কিছুদিন আগেই খেলে এসেছি। ওখানে কোন সমস্যা হয়নি। কেউ ইনজুরিও হয়নি। এখানেও আমরা চাইবো সবাই যাতে পুরো ফিট থাকে।’ ইনজুরি কাটিয়ে পেসার জাহানারা আলমের দলে ফেরাও বাড়তি শক্তি হিসেবে কাজ করবে বলেও কথার ফাকে জানালেন তিনি।
দলের সা¤প্রতিক পারফরমেন্সে সন্তুষ্ট প্রধান কোচ একেএম মাহমুদ ইমনও, ‘গত কয়েকটি টুর্নামেন্টে ভালো খেলছি আমরা।সব খেলোয়াড় ছন্দে আছে। ফলে এখানেও ভালো কিছু হবে বলে আশা করছি। দলের বর্তমান অবসহান বিচারে অন্য টিমকে নিয়ে চিন্তা করার কিছু নেই। বরং নিজেদের সেরাটা দেয়ার লক্ষ্য নিয়েই মাঠে নামতে হবে।’ প্রস্তুতি নিয়েও সন্তুষ্ট কোচ, অধিনায়কের কণ্ঠে ট্রফি ধরে রাখার প্রত্যয়। এবার মাঠে তার প্রতিফলন দেখানোর পালা। সেটা সম্ভব হলে ফুটবলের পর ক্রিকেটেও মেয়েদের সাফল্য নিয়ে হতে পারে আরেকটা রাজসিক উদযাপন। সেই অপেক্ষায় বাংলাদেশ!
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন