শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সারা বাংলার খবর

অতিরিক্ত কান্নাকাটি করায় সোয়া মাসের শিশুকে পানিতে চুবিয়ে হত্যা করেন মা

খুলনা ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ২ অক্টোবর, ২০২২, ৫:৩১ পিএম

শিশু মরিয়ম জন্ম নেয়ার পর থেকেই একটু বেশি কান্নাকাটি করতো। প্রসাব পায়খানাও ঘন ঘন করতো। এতে খুবই বিরক্ত হতেন মা রীতা বেগম। এসব কারণে তিনি সন্তানকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। শুক্রবার (৭ সেপ্টেম্বর ) রাতে পরিবারের সবাই ঘুমিয়ে পড়লে মরিয়মকে বাড়ির পাশে পুুকুরে ফেলে দেন তিনি। কিছুক্ষণের মধ্যেই শিশুটি ছটফট করতে করতে পানিতে ডুবে মারা যায়। এরপর ঘরে এসে তিনি স্বাভাবিকভাবে ঘুমিয়ে পড়েন। রাত ১ টার দিকে শিশুটির দাদা ঘুম থেকে উঠে দেখেন ঘরের দরজা খোলা। ছেলে সাইফুলকে ঘুম থেকে উঠান তিনি। জিজ্ঞাসা করেন ঘরের দরজা খোলা কেন। এমন প্রশ্নের উত্তর তখন ছেলে দিতে পারেনি। সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর ওই বাড়িতে শুরু হয় হৈচৈ। সকলে খুঁজতে থাকেন মারিয়মকে। পরে পুকুর থেকে শিশুটির ভাসমান লাশ উদ্ধার করা হয়। সারাদিন চলে মা রীতা বেগমের কান্নাকাটির নাটকীয়তা। একপর্যায়ে অসংলগ্ন নানা কথাবার্তায় তার প্রতি সবার সন্দেহ করা হয়। একসময়ে তিনি হত্যাকান্ডের বিষয়টি সকলের কাছে পরিস্কার করেন। ওই দিন (শনিবার) সন্ধ্যায় তাকে বটিয়াঘাটা থানার পুলিশ আটক করে। রাতে সাইফুল ইসলাম বাদী হয়ে স্ত্রী রীতা বেগমকে আসামি করে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
আজ রোববার নিজের কন্যা শিশুকে হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি প্রদান করেন রীতা বেগম। জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ৩ এর বিচারক নাজমুল কবির তার জবানবন্দি রেকর্ড করেন। পরবর্তীতে তাকে কারাগারে প্রেরণ করেন আদালত। ঘাতক রীতা বেগম বটিয়াঘাটা উপজেলার গাওঘরা গ্রামের সাইফুল ইসলামের স্ত্রী।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এস আই মো: এনামুল বলেন, বাচ্চাটি জন্ম নেওয়ার পর কান্না কাটি ও অতিরিক্ত পায়খানা করত। এতে বিরক্ত হয় ওই শিশুটির মা। এর আগে থেকে হত্যার পরিকল্পনায় ছিল তিনি। ঘটনার দিন রাতে শিশুটি কান্নাকাটি করতে থাকে। রাতের খাবার খেয়ে বাড়ির সকলে ঘুমিয়ে পড়ে। সকলের অজান্তে মারিয়মকে ঘর থেকে বের করে পুকুরের দিকে নিয়ে যায়। পরে তাকে পুকুরে ফেলে দিয়ে ঘরে এসে ঘুমিয়ে পড়ে। পরদিন নানা নাটকীয়তার মধ্য দিয়ে মা নিজের সন্তানকে হত্যার কথা স্বীকার করেন।
বটিয়াঘাটা থানার অফিসার ইনচার্জ শাহাজালাল বলেন, শুক্রবার ভোর ৬ টা ১০ মিনিটের দিকে শিশু মরিয়মের ভাসমান লাশ উদ্ধার করে থানায় খবর দিলে শিশুটির লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করা হয়। ঘাতক রীতা বেগম প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকান্ডের কথা স্বীকার করেছেন। জবানবন্দি দি‌তে রাজি হলে তাকে রোববার সকালে আদালতে প্রেরণ করা হয়।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন