গুয়াহাটি বর্ষাপারা স্টেডিয়ামে পরশু রাতে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের বহু মাইলফলক ও নাটকীয়তা দেখে ফেলল ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকার মধ্যকার ম্যাচটি। কি ছিল না ম্যাচে? খেলার মাঝে বিষাক্ত সাপ ঢুকে যাওয়া মাঠে, ইনিংসের মাঝে ফ্লাড লাইটে সমস্যা, দলীয় ২ রানে ২ উইকেট হারানোর পরও মিলারের শতক, ঊষার আলো স্নান করে দেওয়ার মত সূর্যকুমারের ব্যাটিং। সবই দেখলো ম্যাচটি। প্রোটিয়া বোলারদের তুলোধুনো করে পরশুরাতে স্বাগতিক ভারত ৩ উইকেট তুললো ২৩৭ রান। এই রান তাড়া করে দক্ষিণ আফ্রিকা জিততে না পারলেও, চাপা পড়েনি। ৩ উইকেট হারিয়ে তারা করেছে ২২১ রান। দুই দল মিলিয়ে রান করল ৪৫৮। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে এটি সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড নয় (সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড ৪৮৯, ভারত-উইন্ডিজ), তবে ভারত দক্ষিণ আফ্রিকার লড়াইয়ে এটিই দুই দলের সর্বোচ্চ রান। দ্বিতীয় ম্যাচে ১৬ রানের জয়ে ভারত ১ ম্যাচ হাতে রেখেই ২-০ ব্যবধানে সিরিজ জিতে নিল।
সূর্যকুমার যাদব এই ম্যাচে খেলেছেন মাত্র ২২ বল। রান করলেন ৬১ রান। ৫টি চার ও সমান সংখ্যক ছয়ের ইনিংসটির স্ট্রাইকরেট ছিল ২৭৭.২৭। এই ইনিংস খেলার পথে রিবাট কোহলি ও লোকেশ রাহুলের পর তৃতীয় দ্রুততম ভারতীয় হিসেবে ৩১ ইনিংসে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টির হাজার রানের মাইলফলক ছুঁয়েছেন। কিন্তু খেলা বলের হিসেবে সূর্যকুমারই দ্রুততম। মাত্র ৫৭৪ বলেই রানের চার অঙ্ক ছুঁয়েছেন তিনি। তার আগে এই রেকর্ডটি ছিল অস্ট্রেলিয়ার গ্লেন ম্যাকওয়েলের (৬০৪ বল)। তাছাড়া রানরেটের ভিত্তিতে ভারতের হয়ে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে দ্রুততম সেঞ্চুরি জুটির রেকর্ড এতদিন ছিল মহেন্দ্র সিং ধোনি ও লোকেশের। ২০১৬ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ১৩.১০ রানরেটে ১০৭ রানের জুটি গড়েছিলেন তারা। কিন্তু গতকাল কোহলিকে নিয়ে ৪২ বলে ১০২ রানের জুটি গড়লেন সূর্যকুমার, ১৪.৫৭ রান রেটে!
স্বাগতিকদের ২৩৭ রান তাড়া করতে নেমে ২ রানেই ২ উইকেট হারায় দক্ষিণ আফ্রিকা। ভড়কে না গিয়ে জয়ের কাছাকাছি চলে যায় প্রোটিয়ারা। ডেভিড মিলারের ৮টি চার ও ৭টি ছয়ে ৪৭ বলে হার না মানা ১০৬ রানের অসাধারণ এক ইনিংসের কল্যাণে জয়ের কক্ষ পথেই ছিল সফরকারীরা। টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় এই সেঞ্চুরির সুবাদে প্রথম প্রোটিয়া ব্যাটসম্যান হিসেবে তিনি ছুঁয়েছেন এই সংস্করণে ২ হাজার রানের মাইলফলক। চতুর্থ উইকেটে কুইন্টন ডি ককে নিয়ে অবিচ্ছিন্ন ১৭৪ রান করেন মিলার। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে এটিই যেকোনো উইকেটে দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে সর্বোচ্চ রানের জুটি।
দেশের মাটিতে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি এতদিন অধরা ছিল ভারতের সিরিজ জয়। কাপ্তান হিসেবে ধোনী ও কোহলি না পারলেও, রোহিত শর্মার নেতৃত্বে ভারত পেল সোনার হরিণ হয়ে থাকা এই সাফল্য। তবে চমক হিসেবে ছিল ২৮ বলে ৫ চার ও ৪ ছক্কায় ৫৭ করা লোকেশের ম্যাচ সেরার পুরষ্কার জেতা। যা চমকে দিয়েছে খোদ লোকেশকেও,‘সত্যি বলতে, আমি বেশ অবাক হয়েছি, ম্যাচ সেরা হওয়ায়। কারণ সূর্যকুমার যেভাবে ব্যাট করেছেন, খেলায় প্রভাব বেশি ছিল সেই ইনিংসের। খেলার মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছে ইনিংসটি।’
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন