পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ার তুষখালী ইউনিয়ন জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক সফিকুল ইসলাম শিকদারকে (৩৮) সন্ত্রাসী কর্তৃক পা বিচ্ছিন্নের মামলায় আসামীরা গ্রেফতা না হওয়ায় আতংকে তার পরিবার। থানা পুলিশ মাত্র একজন আসামী গ্রেফতার করলেও আসামী বাকী আসামীরা বাইরে থাকায় দলীয় নেতা-কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে।
উল্লেখ্য উপজেলার তুষখালী ইউনিয়ন বাজারে ২টি ভিটির মালিকানা নিয়ে স্থানীয় কয়েকজনের সাথে জাতীয় পার্টির নেতা শফিকুল ইসলাম এর দীর্ঘদিন বিরোধ চলে আসছিলো। এ ঘটনায় বেশ কিছু মামলা মোকদ্দমা আদালতে বিচারাধীণ। এ সংক্রান্ত একটি মামলায় হাজিরা দিতে শফিকুল ইসলাম গত বৃহস্পতিবার সকালে (২৯ সেপ্টেম্বর) একটি ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেল যোগে উপজেলা সদরের যাওয়ার পথে মাঝেরপুল সংলগ্ন স্থানে পৌঁছলে একটি মাহিন্দ্রা গাড়ি শফিকুলের মোটরসাকেলের পিছন থেকে থাক্কা দেয়। এতে মোটরসাইকলে চালক ও আরোহী শফিকুল সড়কের পাশে পড়ে যায়। এসময় ৪/৫ জন সশস্ত্র অজ্ঞাত সন্ত্রাসী মাহিন্দ্রা থেকে নেমে শফিকুলকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলাপাথারি কোপাতে থাকে। কোপে তার বাম পা সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় এবং ও পেটের ভূড়ি বেরিয়ে যায়। শরীরের নানা স্থানে কুপিয়ে শফিকুলকে মারাত্মক জখম করে ফেলে রেখে সন্ত্রাসীরা দ্রুত মাহিন্দ্রযোগে পালিয়ে যায়।
এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার রাতে শফিকুল ইসলামের মা মোছা. মমতাজ বেগম বাদি হয়ে মঠবাড়িয়া থানায় ৭ জন নামীয় ও অজ্ঞাত ৩ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় আসামিরা হলো, তুষখালী ইউপি চেয়ারম্যান শাহজাহান হাওলাদারের ছোট ভাই মো. নাসির হাওলাদার (৫০), চেয়ারম্যানের ছেলে শামীম হাওলাদার (৪২), ছোট মাছুয়া গ্রামের মৃত ছালাম হাওলাদারের ছেলে ছগির হাওলাদার (৪৫), মধ্য তুষখালী গ্রামের মৃত গণি আকনের ছেলে হাবিব আকন (৫৫), হাবিব আকনের ছেলে হুমায়ূন (২৫), তুষখালী গ্রামের জুলফিকার আলী শরীফের ছেলে খায়রুল ইসলাম মুছা শরীফ (৫০), ছোট মাছুয়া গ্রামের মৃত. আলী হোসেন পঞ্চায়েতের ছেলে বশির পঞ্চায়েত (৪২)।
ঘটনার দিন বৃহস্পতিবার পুলিশের হাতে আটক হওয়া মামলার প্রধান আসামি ইউপি চেয়ারম্যান শাহজাহান হাওলাদারের ছোট ভাই মো. নাসির হাওলাদারকে ওই মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে শুক্রবার আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
এদিকে এঘটনার প্রতিবাদে রোববার সকালে উপজেলা জাতীয় পর্টির উদ্যোগে মঠবাড়িয়া শহীদ মিনার সামনের সড়কে মানববন্ধনে শত শত নেতা কর্মি অংশ নেয়।
এসময় জাতীয় পার্টির উপজেলা সভাপতি নুরুজ্জামান লিটনের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন, সম্পাদক রফিকুল ইসলাম টুকু, এম পি সাহেবের গনসংযোগ কর্মকর্তা আলীরেজা রন্জু, অধ্যাপক মো. মোতালেব, অধ্যাপক ফারুক সরদার, শফিকুলের পিতা মো. আইউব আলী সিকদার, উপজেলা যুব সংহতির সভাপতি মিজানুর রহমান দুলাল, জাতীয় স্বেচ্ছাসেবক নেতা আ. ওহমান আল-আমান, যুব সংহতি নেতা আলমগীর হোসেন, মো. হিরু শরীফ প্রমূখ।
শফিকুলের বাবা জানান, আমার ছেলের ওপর হামলাকারীরা এলাকার অনেক প্রভাবশালী ও বিপুল অর্থ বিত্তের মালিক। তারা টাকার বিনিময় আইনের ফাঁক ফোকর দিয়ে বেড়িয়ে যেতে চাইবে। বর্তমানে আসামীরা বিভিন্ন মাধ্যমে মামলা তুলে নেয়ার জন্য হুমকি দিয়ে আসছে। না হয় তোমাদের জন্য আরকটি দুর্ঘটনা অপেক্ষা করছে।
থানা অফিসার ইনচার্জ মুহাঃ নুরুল ইসলাম বাদল বলেন, শফিকুলের উপর হামলায় ব্যবহৃত মাহিন্দ্রা গাড়িটি পাশর্^বর্তী ভান্ডারিয়া উপজেলার শিংখালী এলাকা থেকে জব্ধ করা হয়েছে। ধারনা করা হচ্ছে এ সব লোকজন দুর থেকে ভাড়া করে আনা হয়েছিল। বাকী আসামীদেরও দ্রুত গ্রেফতার করতে সক্ষম হবো তিনি জানান।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন