একদিকে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন, অন্যদিকে স্বাগতিক। এই দুই শক্তির বাইরেও বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দলের স্বস্তির আরেকটি জায়গা হচ্ছে তিন ম্যাচের দুটিতেই দাপুটে জয়। যে দলটির সঙ্গে হেরেছে নিগার সুলতানা জ্যোতির দল, সেই পাকিস্তানের কাছে গতকাল হেরেছে ভারতও। সেই হিসেবে ভারতের চেয়ে খুব বেশি পিছিয়ে নেই বাংলাদেশও! নারীদের এশিয়া কাপে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে আজ মুখোমুখি এই দুই দল। সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে দুপুর দেড়টায় শুরু হবে ম্যাচটি। এই ম্যাচের আগে আত্মবিশ্বাস বেশ তুঙ্গে টিম বাংলাদেশের। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানের কাছে হারে আহত ভারতকে চেপে ধরার এই সুযোগ হারাতে চায় না সালমা-তৃপ্তি-রুমানারা।
বাংলাদেশ নারী দলের বিপক্ষে ভারত নারী দল সর্বশেষ দ্বিপক্ষীয় সিরিজ খেলেছে সেই ২০১৪ সালে। এর পর থেকেই দুই দলের দেখা হয় এশিয়া কাপ না হয় বিশ্বকাপে। বিশ্বের অন্যতম সেরা নারী দলের বিপক্ষে খেলে বাংলাদেশ দলের নিজেদের যাচাই করার সুযোগ মেলে শুধু বহুজাতিক টুর্নামেন্টই। আজ বাংলাদেশ দলের জন্য আরও একটি ভারত-পরীক্ষা অপেক্ষা করছে। প্রতিপক্ষ ভারত বলেই বাংলাদেশের মেয়েদের মধ্যে বিশেষ কিছু করে দেখানোর তাড়না কাজ করে। গতকাল সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামের ২ নম্বর মাঠে নিগারদের অনুশীলনেও সে আবহ টের পাওয়া গেল। অনুশীলন শেষে গতকাল মালয়েশিয়ার বিপক্ষে ৫৬ রান করা মুর্শিদা খাতুনের কথায়ও সে প্রসঙ্গ এল। মুর্শিদা বলছিলেন, ‘ভারতের বিপক্ষে ভালো খেলার চিন্তা আমার সব সময় বেশি থাকে। প্রস্তুতি ভালো থাকে। আমি নিজের দায়িত্বটা ঠিকমতো পালন করার চেষ্টা করব। কে বল করছে, ওটা দেখব না। আমি যেটা খেলতে পারি, ওটাই চেষ্টা করব।’ শুধু মুর্শিদা নন, পুরো দলই নাকি ভারতকে পেলে চাঙা হয়ে ওঠে, ‘অবশ্যই। ভারত, পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ খেললে ৯০ থেকে ১০০ শতাংশে এনার্জি লেভেল চলে আসে।’
তবে ভারতের শক্তিমত্তাও মাথায় আছে নারী দলের। মুর্শিদা যেমন বললেন, ‘ওরা তো আমাদের চেয়ে অনেক শক্তিশালী। আমাদের চেয়ে অনেক বেশি ম্যাচ খেলেছে। সম্প্রতি ইংল্যান্ডে খেলে এল। আমরাও মোটামুটি ভালো অবস্থানে আছি, বিশেষ করে কয়েকজন ব্যাটার। আমরা যদি নিজেদের প্রক্রিয়া অনুযায়ী খেলতে পারি, তাহলে ভালো কিছু হবে।’
এখন পর্যন্ত এবারের নারী এশিয়া কাপে ভীতি ছড়াচ্ছে ভারতের ব্যাটিং। বাকি দলগুলো যেখানে রান করতে হিমশিম খাচ্ছে, সেখানে প্রতি ম্যাচেই ভারতের রান দেড় শ ছাড়িয়েছে। গতকাল পাকিস্তান বাদে বাকি তিন ম্যাচেই আগে ব্যাট করে সহজে জিতেছে তারা। বোলিং ও ফিল্ডিং এ ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা পালন করছে। মুর্শিদা সে জন্যই ভারতীয় দলে কোনো দুর্বলতা খুঁজে পাচ্ছেন না। তিনি বলছিলেন, ‘ওদের বোলিংটাও শক্তিশালী। তিন বিভাগেই শক্তিশালী।’ তবে বাংলাদেশও খুব বেশি পিছিয়ে আছে মনে করছেন না জাতীয় দলের এই ওপেনার। তার যুক্তি, ‘আমরাও প্রায় একই। কারণ, আমরা ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন আর আমাদের ঘরের মাঠে খেলা। আমরা যদি তিনটা বিভাগেই ভালো করতে পারি, ভালো কিছু হবে। সালমা আপু আছে, মেঘলা আছে, নাহিদা আছে, উনারা অনেক ভালো করছে।’ ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি সংস্করণে জয় মাত্র দুটি। দুটিই এসেছে সর্বশেষ এশিয়া কাপে। নারী দলকে অনুপ্রাণিত করছে সেই স্মৃতিও।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন