দেশের বিভিন্ন বন্দরে (পণ্য আমদানিতে) ভ্যাট হার ভিন্ন হওয়ায় আমদানিকারকদের পণ্যের দাম নির্ধারণ করতে গিয়ে প্রতিযোগিতায় পড়তে হচ্ছে। এছাড়া স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় পণ্য আমদানি করতে উচ্চহারে ভ্যাট দিতে হচ্ছে। এ অবস্থায় ব্যবসায়ীরা পণ্য হাতে পৌঁছে দেওয়ার চুক্তি করে তা আমদানি করছেন। এতে খরচ কিছুটা কম হলেও অবৈধভাবে আমদানি বাড়ছে। একই সঙ্গে বাড়ছে নকল পণ্য। গতকাল বুধবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে টিসিবি ভবনে এক মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন বক্তারা। কসমেটিকস পণ্য আমদানিকারক, বাজারজাতকারী ও ব্যবসায়ীদের অংশগ্রহণে এই মতবিনিময় সভার আয়োজন করে ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর। মতবিনিময় সভায় মিনাবাজার, মোস্তফা মার্ট, ঢালি সুপার শপ, আল হেরামাইন সহ বিভিন্ন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা বক্তব্য রাখেন। এসময় ব্যবসায়ীরা বলেন, আমদানি করা পণ্যে ভ্যাট বেশি দিতে হয় বলে দাম বেশি নির্ধারণ করতে হয়। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে নকল পণ্য। এসব নকল পণ্যের দাম কম হওয়ায় আসল পণ্য বাজারে টিকে থাকতে পারছে না। রাজধানীর মৌলভীবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আজমল হোসেন বাবু বলেন, দাম নির্ধারণ এক করতে হবে। একেক বন্দরে ভ্যাট একেক হলে দাম নির্ধারণ ভিন্ন ভিন্ন হয়। এতে আমদানিকারকরা দাম নির্ধারণ করলে (দাম বেশি হওয়ায়) সেই পণ্য বিক্রি হবে না।
কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) প্রতিনিধি কাজী আব্দুল হান্নান বলেন, ভোক্তাদের অধিকারের পাশাপাশি আমরা আমদানিকারক এবং ব্যবসায়ীদের অধিকার নিয়েও চিন্তা করি। তাই অনেক সময় পণ্যের নাম উল্লেখ করি না আমরা, যাতে ব্যবসায়ীরা তাদের অর্জিত সুনাম হারিয়ে না ফেলেন। তবে আমদানিকারক ও ব্যবসায়ীদের মাথায় রাখতে হবে, দেশের এবং জনগণের ক্ষতি হয় এমন পণ্য বাজারে ছাড়া যাবে না। এটা ব্যবসায়ীদেরকেই নিশ্চিত করতে হবে।
মতবিনিময় সভায় জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের মহাপরিচালক এএইচএম সফিকুজ্জামান বলেন, আমরা একদিনেই সব পরিবর্তন করতে পারবো না। নকল পণ্য-বিদেশে কল্পনাই করা যায় না। আমরা সেটা দ্রুত সময়ে কীভাবে সমাধান করা যায় চেষ্টা করবো। তিনি বলেন, বিভিন্ন মাধ্যমকে ম্যানেজ করা হয়। সবকিছু কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায় সেটা দেখতে হবে। ভ্যাট কমিয়ে আমদানি বাড়াতে হবে। ডিউটি ফাঁকি দিয়ে আমদানি করা যাবে না। আমাদের দেশে ব্যবসায়ীরা পণ্যের দাম নির্ধারণ করেন জানিয়ে তিনি বলেন, পণ্যে উৎপাদনের তারিখ ও তার মেয়াদ থাকতে হবে। বিএসটিআই’র মাধ্যমে পণ্যের মান অবশ্যই করতে হবে। পণ্যের দাম নির্ধারণ করতে হবে এবং এটা করবেন আমদানিকারকরা। কিন্তু আমাদের এখানে যিনি বিক্রি করেন তিনিই দাম নির্ধারণ করেন। আমাদের অভিযানে দেখা যাচ্ছে এসব মানা হচ্ছে না। মতবিনিময় সভায় জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের পরিচালক (প্রশাসন ও অর্থ) মনজুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার, ঢাকা জেলা কার্যালয়ের অফিস প্রধান মো. আব্দুল জব্বার মন্ডল, প্রধান কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. শরিফুল ইসলাম ও সহকারী পরিচালক মো. শাহ আলম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন