বুধবার ০৬ নভেম্বর ২০২৪, ২১ কার্তিক ১৪৩১, ০৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

খেলাধুলা

ইতিবাচক সাকিব, আশাবাদী শ্রীরাম

‘শেষ ১০ ওভারের চ্যালেঞ্জ নিতে শিখতে হবে’

স্পোর্টস রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৪ অক্টোবর, ২০২২, ১২:০২ এএম

অস্ট্রেলিয়ায় বাজছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দামামা। তার আগে তাসমান প্রতিবেশি নিউজিল্যান্ডে পাকিস্তানকে নিয়ে ত্রিদশীয় সিরিজ যেন প্রস্তুতির সেরা সুযোগটি দিয়েছিল বাংলাদেশকে। তবে ‘শিক্ষা সফর’ থেকে খুব বেশি কিছু নিয়ে ক্যাঙ্গারুর দেশে পাড়ি জমাতে পারছে না সাকিব আল হাসানের দল। ক্রাইস্টচার্চে বাংলা ওয়াশ সিরিজের সবগুলো ম্যাচই হারে বাংলাদেশ। গতকাল শেষ ম্যাচে কিছুটা লড়াকু মনোভাব দেখিয়ে বাংলাদেশ খেলা নিতে পেরেছে শেষ ওভারে। তবে ক্যাচ হাতছাড়া করার পাশাপাশি বাজে ফিল্ডিং আবার বাড়াল আক্ষেপ। ম্যাচটি পাকিস্তানের কাছে ৭ উইকেটে হেরেছে লাল সবুজের প্রতিনিধিরা। আগে ব্যাট করে জোড়া ফিফটিতে ১৭৩ রান করেছিল বাংলাদেশ। এক বল আগে ওই রান পেরিয়ে যায় পাকিস্তান।
এর আগে প্রথম তিন ম্যাচে প্রতিপক্ষের সঙ্গে লড়াই জমানোই যায়নি। উদ্বোধনী ম্যাচে পাকিস্তানের কাছে ২১ রানের হারে শুরু। দ্বিতীয় ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে হারটি ৮ উইকেটে। ফিরতি ম্যাচে এবার স্বাগতিকদের বিপক্ষে হার ৪৮ রানে। গতকাল পাকিস্তানের সঙ্গে আলগা বোলিং আর বাজে ফিল্ডিং না হলে ফল হতে পারত ভিন্ন। কাছে গিয়েও আরেকটি হারের হতাশা আড়াল করে অধিনায়ক সাকিব দেখছেন কিছু ইতিবাচক দিক।
ক্রাইস্টচার্চে এদিন সকালের প্রথম ভাগটা ছিল আগ্রাসী সাকিব ও লিটন দাসের ব্যাটে ঝলমলে। আগে ব্যাটিং বেছে লিটনের ৪২ বলে ৬৯ ও সাকিবের ৪২ বলে ৬৮ রানে ১৯তম ওভার পর্যন্ত বাংলাদেশের স্কোর ছিল ১৭০। কিন্তু শেষ ওভারে আসে আর স্রেফ ৩ রান। এই অবস্থা থেকে আরেকটু বেশি রানের আক্ষেপ অধিনায়কের, ‘কঠিন ছিল সিরিজ। তবে আজ আমরা আমাদের সেরা খেলাটা খেলেছি এই সিরিজের। শেষ ওভারে আমরা আরও বেশি রান করতে পারতাম। যে অবস্থায় ছিলাম সেখান থেকে আরও বেশি হতে পারত।’
আক্ষেপের জায়গাটা বললেও ইতিবাচক দিকই বেশি দেখছেন অধিনায়ক। যেহেতু এটা বিশ্বকাপ প্রস্তুতির টুর্নামেন্ট। এখান থেকে প্রক্রিয়া, পরিকল্পনা ও ঘাটতির জায়গা পূরণ করতে পারাই তার কাছে তৃপ্তির, আমরা মাঝের ওভারে ভাল খেলেছি, যেটার ঘাটতি ছিল আগে। এটা আমাদের সামনে বিশ্বকাপে ভাল খেলতে সাহায্য করবে। ওই অবস্থা থেকে আরও কিছু রান হতে পারত কিন্তু খেলার আগে কেউ যদি ১৭৩ রানের কথা বলত, তাহলে আমি সানন্দেই তা নিতাম। বিশ্বকাপের পরিকল্পনায় আমরা পরিষ্কার আছি। এটা ভাল দিক।’
আগের দিন নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সাকিব করেন ৪৪ বলে ৭০, এবার পাকিস্তানের সঙ্গে করলেন ৪২ বলে ৬৮। তবে বোলিংটা তার হচ্ছে না ঠিকঠাক। আগের দিন বল হাতে ৪ ওভারে ৪০ রান দিয়ে ছিলেন উইকেটশূন্য। এদিন ৩ ওভারে ২৮ রান দিয়ে পাননি উইকেটের দেখা। ব্যাটিং বেশ ভালো গেলেও নিজের বোলিংয়ে খুশি নন সাকিব, ‘আমার কাজ হচ্ছে দলের জন্য রান করা। আমার বোলিং খুব ভাল হচ্ছে না। যেখানটায় উন্নতি করতে হবে। আমরা অনেক উন্নতি করেছি এই টুর্নামেন্টে সেটা সবচেয়ে ইতিবাচক দিক।’
ত্রিদেশীয় সিরিজে পাকিস্তানের সঙ্গে দুইবারের দেখায় শেষ দিকে দুই ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয় বাংলাদেশ। একবারও সফল হতে পারেনি তারা। দুই ম্যাচেই পেয়েছে হারের তেতো স্বাদ। বাবর আজমের দলের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে রান তাড়ায় শেষ ১০ ওভারে বাংলাদেশের প্রয়োজন ছিল ১০৪ রান। হাতে তখনও ৮ উইকেট। কিন্তু এই সমীকরণ মেলাতে পারেননি দল। ম্যাচ হারে ২১ রানে। গতকালের চ্যালেঞ্জটা ছিল রান ডিফেন্ড করার। এখানেও ব্যর্থ তারা। ১৭৪ রানের লক্ষ্য তাড়ায় পাকিস্তানের শেষ ১০ ওভারে প্রয়োজন পড়ে ১০১ রানের। কিন্তু এবার বোলারদের হতাশাময় পারফরম্যান্সে ম্যাচ হারতে হয় ১ বল বাকি থাকতে।
রান তাড়া কিংবা ডিফেন্ড করার ক্ষেত্রে শেষের সমীকরণ মেলাতে পারছে না বাংলাদেশ। বারবার গড়বড় হচ্ছে সেখানে। টি-টোয়েন্টির সফল দলগুলোর সঙ্গে এখানেই বাংলাদেশের পার্থক্য দেখছেন শ্রীধরন শ্রীরাম। দলের টেকনিক্যাল কনসালটেন্টের মতে, শেষ দিকে ওভারে ১০ করে রান করা কিংবা এই পরিমাণ রান ডিফেন্ড করা শিখতে হবে তাদের, ‘পাকিস্তানের বিপক্ষে আমাদের সুযোগ ছিল। প্রথম ম্যাচে শেষ ১০ ওভারে ১০০ রান দরকার ছিল আমাদের, এই ম্যাচেও ১০ ওভারে ১০০ রান ডিফেন্ড করতে হতো। দুই ম্যাচেই অল্পের জন্য হয়নি। এই ছোট মার্জিনগুলোই আমাদের শিখতে হবে। দল যখন ধারাবাহিকভাবে জিতবে, দল জানবে শেষদিকে কীভাবে ওভারে ১০ করে রান করতে হয় বা ১০ রান ডিফেন্ড করতে হয়, যেটা ভালো দলগুলো করে থাকে। আমি মনে করি না, এটা কেবল নির্দিষ্ট একটি জায়গা বা নির্দিষ্ট একজনের বিষয় নয়। এটা পুরো দলের সমন্বিত ব্যাপার।’

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন