বিশ্ববাজারে চীনের পরেই পোশাক শিল্প রফতানিতে বাংলাদেশের অবস্থান। সারাবিশ্বে মোট পোশাক রফতানির ৬ দশমিক ৮ শতাংশও বাংলাদেশের দখলে। তারপরও প্রভাবশালী ম্যাগাজিন ফোর্বসের গবেষণা অনুযায়ী, শ্রমিকপ্রতি উৎপাদনশীলতার হার সর্বনিম্ন পর্যায়ে রয়েছে। কর্মীদের এই অদক্ষতার জন্য চিহ্নিত প্রাথমিক কারণগুলির মধ্যে রয়েছে পুষ্টিহীনতা। বিশেষ করে নারী শ্রমিকদের মধ্যে এটি দেখা যায়।
প্রায় ২৫ লাখ নারী বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের সঙ্গে জড়িত। যা মোট শ্রমিকদের ৬০ শতাংশ। বাংলাদেশের মোট রফতানি আয়ের ৮৪ শতাংশই আসে পোশাক শিল্প থেকে। জিডিপিতে এর ভূমিকা ২০ শতাংশ। ইউনিসেফ বলছে, বাংলাদেশে আনুমানিক ৩ হাজার ৫০০ কারখানা আছে এবং এর উপরে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে আড়াই কোটি মানুষ নির্ভরশীল। গবেষণায় তুলে ধরা হয়েছে তিন বছর আগে গার্মেন্টস কর্মী হিসেবে সাতক্ষীরা থেকে ঢাকায় আসা সাদিকা তুন-নেছা এবং তার ছোট বোনের গল্প। সেখানে বলা হয়েছে, যখন তারা শহরে আসেন তখন সাদিকা এবং তার বোনকে প্রায়ই সকালের নাস্তা বাদ দিতে হতো। তার মতো বাকি সবারই এমন অবস্থা দেখা যায়। তাদেরকে প্রায়ই কার্বোহাইড্রেট আছে এমন ভারী খাবার খাওয়ার জন্য বিকেল পর্যন্ত অপেক্ষা করত। সেটিই তাদের দিনের প্রথম খাবার। তাদের মাইক্রো-নিউট্রিয়েন্ট এবং প্রোটিন গ্রহণের পরিমাণ খুব কম ছিল। জানা যায়, তাদের মধ্যে ৭৭ শতাংশই রক্ত স্বল্পতায় ভুগছে। জাতীয় পর্যায়ে এই হার ৪১ দশমিক ৮ শতাংশ।
মহামারী চলাকালীন সুইস এনজিও গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ইমপ্রুভড নিউট্রিশন, ভিএফ কর্পোরেশন এবং স্নোটেক্স আউটারওয়্যার লিমিটেডের সঙ্গে কাজ শুরু করে বাংলাদেশি এনজিও রিসার্চ ইভালুয়েশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট ইনিশিয়েটিভ। এর উদ্দেশ্য ছিল, স্নোটেক্সে কারখানার শ্রমিকদের পুষ্টির চ্যালেঞ্জগুলি কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করা। প্রোগ্রামটির নাম ছিল ‘স্ট্রেংথেনিং ওয়ার্কার্স অ্যাকসেস টু পারটিনেন্ট নিউট্রিশন অপরচুনিটিস’ বা স্বপ্ন।
স্নোটেক্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এসএম খালেদ বলেন, আমরা মনে করি আমাদের কর্মীদের সুস্থ জীবন নিশ্চিত করা আমাদের কর্তব্য। তাই আমরা মানসম্পন্ন মধ্যাহ্নভোজ দেয়ার পরিকল্পনা নিয়ে এসেছি। যদি কর্মীরা স্বাস্থ্যকর খায়, তাহলে তারা ফিট থাকবে। এতে কর্মী এবং কোম্পানি উভয়েই লাভবান হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন