টানা পাঁচ কার্যদিবস দরপতনের পর দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) মূল্যসূচক সামান্য বেড়েছে। তবে গতকাল বৃহস্পতিবার লেনদেনে অংশ নেওয়া যে কয়টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে, কমেছে তার থেকে বেশি। সেই সঙ্গে কমেছে লেনদেনের পরিমাণও। ডিএসই লেনদেন কমে দুই মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে চলে গেছে। এদিকে ডিএসইতে মূল্যসূচক কিছুটা বাড়লেও অন্য শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) পতন অব্যাহত রয়েছে। সূচক কমার পাশাপাশি বাজারটিতে যে কয়টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বেড়েছে, কমেছে তার দ্বিগুণের বেশি। অবশ্য দুই বাজারেই দাম বাড়া বা কমার তুলনায় দাম অপরিবর্তিত থাকা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা বেশি।
এর আগে চলতি সপ্তাহের প্রথম চার কার্যদিবস শেয়ারবাজারে টানা দরপতন হয়। চার কার্যদিবসের টানা দরপতনে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ১০৪ পয়েন্ট কমে যায়। গত সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসেও শেয়ারবাজারে দরপতন হয়। ফলে টানা পাঁচ কার্যদিবস পতনের মধ্যে থাকে শেয়ারবাজার।
বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়ার মাধ্যমে লেনদেন শুরু হয়। ফলে শেয়ারবাজার খুলতেই ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১৩ পয়েন্ট বেড়ে যায়। লেনদেনের শুরুতে সূচক বাড়লেও ১০ মিনিটের মধ্যে সূচক ঋণাত্মক হয়ে পড়ে। লেনদেনের প্রথম সাড়ে ৩ ঘণ্টায় বেশিরভাগ সময় সূচক ঋণাত্মক থাকে। তবে শেষ ২০ মিনিটের লেনদেনে বেশি কিছু প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দরপতন থেকে বেরিয়ে আসে। এতে পাঁচ কার্যদিবস পর সূচকের কিছুটা ঊর্ধ্বমুখীতার দেখা মিলে।
অবশ্য সূচক বাড়লেও দাম বাড়ার তুলনায় দাম কমার তালিকায় স্থান করে নিয়েছে বেশি সংখ্যক প্রতিষ্ঠান। দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে ৬০টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৭৮টির। আর ২২৫টির দাম অপরবর্তিত রয়েছে।
এতে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ২ পয়েন্ট বেড়ে ৬ হাজার ৩৯২ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। অন্য দুই সূচকের মধ্যে বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৬ পয়েন্ট বেড়ে ২ হাজার ২৭৭ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর ডিএসই শরিয়াহ্ আগের দিনের তুলনায় দশমিক ৫২ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৪০৭ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
প্রধান মূল্যসূচক বাড়লেও বাজারটিতে লেনদেনের পরিমাণ কমে গেছে। দিনভর ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৯৭৫ কোটি ৬২ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় ১ হাজার ১৭৮ কোটি ৭১ লাখ টাকা। সে হিসেবে লেনদেন কমেছে ২০৩ কোটি ৯ লাখ টাকা। লেনদেন শুধু আগের দিনের তুলনায় কমেনি, ডিএসইতে চলতি বছরের ১৪ আগস্টের পর সর্বনিম্ন লেনদেন হলো।
ডিএসইতে টাকার অঙ্কে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে বেক্সিমকোর শেয়ার। কোম্পানিটির ১১৭ কোটি ২ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ওরিয়ন ফার্মার ৭৭ কোটি ২২ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। ৬০ কোটি ৪৭ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে আনোয়ার গ্যালভানাইজিং। এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে-ইস্টার্ন হাউজিং, জেমিনি সি ফুড, কেডিএস এক্সসরিজ, জেএমআই হসপিটাল অ্যান্ড ম্যানুফ্যাকচারিং, এডিএন টেলিকম, সোনালী পেপার এবং বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন।
অন্য শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ২০ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ২৬ কোটি ২৯ লাখ টাকা। লেনদেনে অংশ নেওয়া ২০১টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৩৪টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৭৬টির এবং ৯১টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন