রায়ান বার্ল প্রতিপক্ষ পেসার সাফওয়ান শরিফের বল মিড-অন ফিল্ডারের মাথার ওপর দিয়ে মারলেন। বল বাউন্ডারি সীমানা ছোঁয়ার আগেই হুঙ্কার দিয়ে উঠলেন এই বাঁহাতি ব্যাটার। একই সাথে উদযাপন চললো ডাগআউটেও, সিকান্দার রাজা মুষ্টিবদ্ধ হাত ছুড়লেন বাতাসে। গ্যালারিতে জিম্বাবুয়ের সমর্থকরা মেতে উঠলেন বাধহারা আনন্দে। প্রথমবারের মতো টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সুপার টুয়েলভে ওঠা বলে কথা! ম্যাচের আগে সমীকরণটা সহজ ছিল। যে জিতবে সেই যাবে মূল পর্বে। প্রথম পর্বের শেষ ম্যাচে স্কটল্যান্ডের ৬ উইকেটের বিনিময়ে গড়া ১৩২ রানের চ্যালেঞ্জটা, ৯ বল ও ৫ উইকেটে হাতে রেখেই ছুঁয়ে ফেলল জিম্বাবুয়েনরা। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের মূল পর্বে দুই নাম্বার গ্রুপে বাংলাদেশের সঙ্গী হলো জিম্বাবুয়ে।
হোবার্টের বেলেরিভ ওভালে সহজ জয়ের লক্ষ্যে খেলতে নেমে প্রথম ওভারেই হোয়েলের বলে বিদায় নেন চাকাভা। ড্যাভের বলে লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়ে কোন রান না করেই আউট হন ৩ নাম্বারে নামা ওয়েসলি মাধেভেরে । অবস্থা বেগতিক হয় যখন নির্ভরযোগ্য ও অভিজ্ঞ ব্যাটার শন উইলিয়ামস দলীয় ৪২ রানের সময় সাজঘরে ফেরেন। তবে এরপরই অধিনায়ক ক্রেইগ আরভিন ও অলরাউন্ডার সিকান্দার রাজা সাবলিল ব্যাটিং করতে থাকেন। চতুর্থ উইকেটে এই দুইজনের জুটি দলকে সঠিক কক্ষপথে রাখে। এই দুই ব্যাটার মিলে দলকে নিয়ে যান ১০৬ রান পর্যন্ত। এই সময় ২৩ বলে ৪০ রান করা রাজা উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন। তার ইনিংসে ৩টি চারের পাশাপাশি ছিল ২টি ছক্কার মার। বল হাতেও সবচেয়ে কম খরচে ১ উইকেট পাওয়া রাজাই জেতেন ম্যাচসেরার পুরষ্কার।
তবে আরভিন পেয়েছেন অর্ধশতকের দেখা। জয় থেকে ১৪ রান দূরে থাকার সময় সাজঘরে ফেরেন জিম্বাবুয়ান কাপ্তান। তার আগে খেলে যান ৫৪ বলে ৬টি চারে ৫৮ রানের উজ্জল এক ইনিংস। মিল্টন শুম্বা ও রায়ান বার্লের দক্ষতায় ৫ উইকেট হাতে রেখেই ১৩৩ রানে পৌঁছে যায় জিম্বাবুয়ের।
এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে প্রথম ওভারেই উইকেট হারায় স্কটল্যান্ড। চাতারার বলে বিদায় নেন ওপেনার মাইকেল জোন্স। তবে অপর প্রান্তে থাকা জর্জ মুনসে ছিলেন মারমুখী। এনগারাভার বলে দ্বিতীয় উইকেট খোয়ায় স্কটিশরা দলীয় ২৪ রানে। কিপার ব্যাটার ম্যাথু ক্রসও থিতু হবার আগে ফেরেন সাজঘরে। এরপর মুনসের অর্ধশতক ও মিডল অর্ডারের ব্যাটারদের সুষম রানে এগিয়ে যেতে থাকে স্কটল্যান্ড। মুনসে ৭টি চার হাঁকান ৫১ বলে ৫৪ রানের ইনিংস খেলার পথে। ২৬ বলে ২৫ রান করেন কালাম ম্যাকলিওড। স্কটিশদের ইনিংসে ছিল না কোনো ছক্কার মার।
উল্লেখ্য ২০০৭ সালে প্রথম বিশ্বকাপে গ্রুপপর্ব থেকে বাদ যাওয়া জিম্বাবুয়ে পরের আসরে খেলেনি। ২০১০ থেকে ২০১৬, চার আসরে খেললেও পার হতে পারেনি গ্রুপপর্বের বৈতরণী। গত বছরের আসরে নিষেধাজ্ঞার জন্য খেলতে পারেনি জিম্বাবুয়ে। তবে চলমান বিশ্বকাপে নিজেদের সক্ষমতার জানান দিচ্ছে আরভিন-সিকান্দাররা। বিশ্বকাপের মূল আসরে গ্রুপ-২’য়ে বাংলাদেশে ও জিম্বাবুয়ের সঙ্গে বকি দল গুলো হলো ভারত, পাকিস্তান, দক্ষিণ আফ্রিকা ও নেদারল্যান্ডস।
ভিলা ছাড়তেই হলো জেরার্ডকে
স্পোর্টস ডেস্ক : পরশুরাতে প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচে ফুলহ্যামের বিপক্ষে ৩-০ ব্যবধানে বাজেভাবে হেরে যায় অ্যাস্টন ভিলা। বিরতির সময়ই ভিলার সমর্থকরা কেউ কেউ বলছিল, ‘জেরার্ড আমাদের ক্লাব ছেড়ে চলে যাও।’ কতৃপক্ষও যেন শুনতে পেয়েছিল ক্লাব সমর্থকদের আরজি। তাই কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই কোপটা পড়ল ক্লাবটির কোচ স্টিভেন জেরার্ডের ওপর। চাকরিচ্যুত করা হলো সাবেক এই ইংলিশ ও লিভারপুল মিডফিল্ডারকে।
এই মৌসুমে মাঠে বাজে পারফরম্যান্সের মাশুল দিতে হয়েছে জেরার্ডকে। এখন পর্যন্ত ১১ ম্যাচে ৯ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের ১৭তম স্থানে ধুঁকছে ভিলা। অবনমন অঞ্চল থেকে মাত্র এক ধাপ ওপরে আছে বার্মিংহ্যামের ক্লাবটি। গত বছরের নভেম্বর অ্যাস্টন ভিলার ম্যানেজারের দায়িত্ব নিয়েছিলেন সাবেক এই অলরেড কাপ্তান। এই সময়ের মধ্যে ২২ ম্যাচে মাত্র ৪ জয় এনে দিতে পেরেছেন তিনি। গত জেরার্ডের অধীনে ভিলা মৌসুমে ১৪তম হয়েছিল ভিলা। এই মৌসুমে প্রিমিয়ার লিগে মাত্র দুই ম্যাচ জিতেছে ভিলা, হেরেছে ছয়টি। এমন পারফরম্যান্সের পর সমর্থক বা ম্যানেজম্যান্ট, কেউই চুপ থাকবে না স্বাভাবিক! অথচ তাকে ঘিরে ক্লাবটির ছিল অনেক আশা অ পরিকল্পনা। তাইতো সাড়ে ৩ বছরের চুক্তিতে, জেরার্ডকে তাদের ডেরায় ভিড়িয়েছিল ভিলা।
পরশু ফুলহ্যামের বিপক্ষে হারার ঘন্টা দুয়েকের মাঝেই অ্যাস্টন ভিলার পক্ষ থেকে বিবৃতিতে জেরার্ডকে ধন্যবাদ দিয়ে জানানো হয়, ‘তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া হিসেবে ক্লাব ছেড়েছেন স্টিভেন জেরার্ড। আমরা তাকে তার কঠোর পরিশ্রম এবং প্রতিশ্রুতির জন্য ধন্যবাদ জানাই। তার জন্য শুভকামনা।’ দলের পারফরম্যান্স নিয়ে হতাশ ছিলেন জেরার্ড নিজেও। ফুলহ্যামের বিপক্ষে হারার পর তিনি বলেন, ‘আমি একজন মানুষ, আমারও মেনে নিতে কষ্ট হয়। এটা বুঝতে পারছি যে, আমি তাদের হতাশা করেছি এবং আমিও তাদের সঙ্গে হতাশ।’
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন