চীনে করোনভাইরাসের সংক্রমণ রোধে দীর্ঘ সময় ধরে লকডাউনের কারণে ব্যবসায়িক কার্যক্রম এবং ভোক্তা উভয়ের ওপরই নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে, ফলে অর্থনৈতিক সূচকগুলো উত্সাহজনক বলে মনে হচ্ছে না। বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির এই দেশে মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) জুনের শেষে তার আগের প্রান্তিকের চেয়ে ২ দশমিক ৬ শতাংশ কমেছে।
জিও-পলিটিকের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বছরের প্রথম প্রান্তিকের তুলনায় দ্বিতীয় প্রান্তিকের শেষে প্রধান আর্থিক ও উত্পাদন কেন্দ্র সাংহাইসহ চীনের প্রধান শহরগুলোতে সম্পূর্ণ বা আংশিক লকডাউন চলছিল। প্রধান এই শহরগুলোতে ১২ কোটি ৭০ লাখ মানুষের বাস।
ওয়াশিংটন পোস্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এপ্রিল মাসে সাংহাইতে একটিও অটোমোবাইল বিক্রি হয়নি। বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে অর্থাৎ জুনের শেষে সাংহাইয়ের অর্থনীতি ১৩ দশমিক ৭ শতাংশ কমে গেছে।
সাংহাইয়ের দীর্ঘ লকডাউন বিশ্বব্যাপী সরবরাহ চেইনে ধাক্কা দিয়েছে। এমনকি খাদ্যের ঘাটতির অভিযোগ এবং যথেচ্ছা কোয়ারেন্টাইনের প্রতিবাদকারী জনগণ ব্যাপক ক্ষিপ্ত হয়েছেন। ব্যক্তি পর্যায়ে ভোক্তা ব্যয়ে শিথিলতা দেখা গেছে বিশেষভাবে, যদিও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির চালক হিসেবে কর্তৃপক্ষ ব্যয় বাড়ানোর চেষ্টা করেছেন।
ভোক্তারা ব্যাপকভাবে খরচ কমিয়ে দিয়েছে। সেটা গাড়ি কেনার মতো বড় ধরনের ব্যয় হোক, কিংবা ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মগুলো থেকে অনলাইনে সস্তায় প্রসাধনী সামগ্রী হোক।
গ্রাহকের ঋণ চাহিদা পূরণে চীনের কেন্দ্রীয় ব্যাংক গত ১৫ অগাস্ট ঋণের সুদ হার কমিয়েছে। প্রবৃদ্ধি থমকে গেছে, যুব বেকারত্ব রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছেছে এবং কোম্পানিগুলো সাপ্লাই চেইনে সীমাবদ্ধতার সঙ্গে লড়ছে।
চীনের চাকরির বাজার গত কয়েক মাসে তীব্রভাবে খারাপ হয়েছে। সাম্প্রতিক তথ্যে দেখা গেছে, ১৬ থেকে ২৪ বছর বয়সীদের মধ্যে বেকারত্বের হার গত জুলাই মাসে সর্বকালের রেকর্ড ১৯ দশমিক ৯ শতাংশে পৌঁছেছে। তার মানে চীনে এখন শহর ও নগরে প্রায় ২ কোটি ১০ লাখ বেকার যুবক রয়েছে। গ্রামীণ বেকারত্বের বিষয়টি সরকারি পরিসংখ্যানে অন্তর্ভুক্ত না হওয়ায় বেকারত্বের সামগ্রিক সংখ্যাটি অনেক বেশি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন