শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সাহিত্য

গৃহদাহ

জোবায়ের রাজু | প্রকাশের সময় : ২৮ অক্টোবর, ২০২২, ১২:০১ এএম

চৌধুরী বাড়ি থেকে আজকের টিউশনিটা শেষ করে শাহেদ যখন বাড়ি ফিরে, তখন শেষ বিকেল। ঘরে ঢুকতেই পাশের ঘর থেকে মা আর সুমির কথোপকথন কানে এল শাহেদের।
- দুধটুকু খেয়ে নে সুমি।
- রোজ এত দুধ খেতে ভাল্লাগে না তো মা।
- তবুও যে খেতে হবে। সামনে তোর পরীক্ষা, ভালো রেজাল্ট করতেই হবে।
- অসহ্য লাগছে তো মা। দুধ শুধু একা আমি খাই কেন? শাহেদ ভাইয়াকে দাও না কেন?
- চুপ কর। ও তোর সৎভাই। আপন ভাই নয়। ওর জন্য এত মায়া দেখাতে হবে না।
- ভাইয়া কখনো আমাকে সৎবোনের চোখে দেখে না। সব ঝামেলা তুমিই করো।
তারপর হঠাৎ একটা চড়ের শব্দ আসে শাহেদের কানে। সুমি উচ্চস্বরে কাঁদতে থাকে। শাহেদ বুঝতে পারে মুখে মুখে তর্ক করার অপরাধে সুমিকে জোরে চড় মারা হয়েছে। অথচ তার তর্কে যুক্তি ছিল।
মরিয়ম বেগম শাহেদকে সহ্য করতে পারেন না। কিন্তু সৎমা হিসেবে শাহেদ কখনো মরিয়ম বেগমকে অবহেলা করেনি। সাত বছর বয়সে শাহেদের মা মারা গেলে বাবা আবার বিয়ে করেন। শুরু থেকে সতীনের সন্তান শাহেদের প্রতি মরিয়ম বেগমের বাঁকা দৃষ্টি। তাও আবার সুমির জন্মের পর নিজেই মা হতে পেরে শাহেদকে এই সংসার থেকে আলাদা করার ধূর্তামি করেও সফল হতে পারেননি স্বামী আওলাদ হোসেনের কড়া শাসনের কারণে।
সুমির কান্না থামছে না। চড়টা বোধহয় জোরেই লেগেছে! শাহেদের খারাপ লাগতে লাগল। সৎভাই হলেও সুমির যে তার প্রতি টান আছে, শাহেদ তা বোঝে।
অনেক রাতে ধীরু পায়ে সুমি এল শাহেদের ঘরে। কি একটা উপন্যাস পড়ছিল শাহেদ তখন। সুমির উপস্থিতি টের পেয়ে শাহেদ কাছে ডাকে বোনকে।
- ভাইয়া, তোর কাছে ব্যথার ট্যাবলেট আছে?
- কার ব্যথা সুমি?
- ব্যথায় আমার গাল টনটন করছে।
- কেন, কি হয়েছে তোর গালে?
- ব্যথা।
- আঘাত পেয়েছিস?
- ইয়ে মানে...! বাথরুমে পা পিছলে পড়ে গেছি।
- ওহ।
শাহেদ ড্রয়ার তলব করে প্যারাসিটামল পেয়ে সুমিকে দিল। ট্যাবলেট নিয়ে সুমি চলে গেল। কত সুন্দর করে মিথ্যা বলে গেল সে। ব্যথায় কেন তার গাল টনটন করছে, সে রহস্য তো শাহেদ জানে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন