ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাস বলেন, ২০২১ সালে যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানিগুলো বাংলাদেশের বাজারে ৪ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছে। সামনে এটা আরও বাড়বে আশা করি। তিনি বলেন, প্রথম এই ট্রেড শো হয়েছিল ১৯৯২ সালে। তখনকার সময়ে এক বিলিয়ন ডলারের বাণিজ্য আজ বেড়ে হয়েছে ৮ বিলিয়ন ডলার। গতকাল গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকায় প্যানপ্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে আমেরিকান চেম্বার অব কমার্স ইন বাংলাদেশ (অ্যামচ্যাম) আয়োজিত ২৮তম ইউএস ট্রেড শো-২০২২-এর উদ্বেধনী অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রদূত এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক চমৎকার। প্রায় দুই দশক ধরে অ্যামচেমের সঙ্গে কো-স্পন্সর হিসেবে কাজ করছি আমরা। এই শো-এর মাধ্যমে আমরা যুক্তরাষ্ট্রের সর্বোৎকৃষ্ট পণ্যগুলো বাংলাদেশের বাজারে উন্মুক্ত করতে চাই।
বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অনেক পণ্য বাংলাদেশে আমদানি হয়। বর্তমানে এ আমদানির পরিমাণ প্রায় ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। আমদানি পণ্যের মধ্যে রয়েছে অ্যারোপ্লেন, কটন, গম, সয়াবিন তেল এবং আইসিটি পণ্য। বাংলাদেশে অ্যানার্জি, অবকাঠামো নির্মাণ, যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন, অ্যাগ্রো বিজনেস, আইসিটি, শিক্ষা, পর্যটনখাতে বিনিয়োগের বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। ফরেন ডাইরেক্ট ইনভেস্টমেন্টের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সরকার বেশকিছু সুযোগ সুবিধা ঘোষণা করেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশে বিনিয়োগ করলে অধিক লাভবান হবেন।
তিনি বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের বড় বাণিজ্যিক এবং উন্নয়ন সহযোগী। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য ও বিনিয়োগের অনেক সুযোগ রয়েছে, এ সুযোগকে কাজ লাগাতে হবে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের বৈদেশিক বাণিজ্য দিনদিন বাড়ছে। বাংলাদেশের প্রধান রফতানি পণ্য তৈরি পোশাক। চলমান বিশ্বঅস্থির পরিস্থিতিতেও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রফতানি একক দেশ হিসেবে সর্ববৃহৎ বাজার।
তিনি বলেন, বিশ্ববাজারে তৈরি পোশাক রফতানিকারক দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান এখন দ্বিতীয়। পোশাক ছাড়াও বাংলাদেশ হিমায়িত খাদ্যপণ্য, চামড়াজাত পণ্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সুনামের সঙ্গে রফতানি হচ্ছে। এছাড়া, আইটি খাতের আউটসোর্সিং এর বড় বাজার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। বিগত ২০২১-২০২২ অর্থ বছরে বাংলাদেশ প্রায় ১০ দশমিক ৪১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য রফতানি করেছে। বাংলাদেশের মোট রফতানির প্রায় বিশভাগ আসে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে।
আমেরিকান চেম্বার অব কমার্স ইন বাংলাদেশের (অ্যামচ্যাম) প্রেসিডেন্ট সৈয়দ এরশাদ আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য করেন ঢাকায় সফররত অ্যাসিসটেন্ট সেক্রেটারি অব কমার্স ফর গেøাবাল মার্কেট অ্যান্ড ডাইরেকটর জেনারেল অব দ্য ইউএস অ্যান্ড ফরেন কমার্সিয়াল সার্ভিস অরুণ ভেনকাটারাম্যান।
ইউএস ট্রেড শো-তে বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ কোম্পানিগুলো অংশগ্রহণ করেছে। এতে যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা, যুক্তরাষ্ট্রে উচ্চশিক্ষার সুযোগ, বাংলাদেশে বেসরকারি খাতের উন্নয়নে ইউএসএইডের কর্মকান্ড ও মেধাস্বত্ব বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস সেমিনারের আয়োজন করেছে। জ্বালানি, ব্যাংকিং ও আর্থিক সেবা, খাদ্য ও পানীয়সহ বিভিন্ন খাতে বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের চল্লিশটির বেশি ব্র্যান্ড এতে অংশগ্রহণ করেছে।
ট্রেড শো প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত থাকবে। এতে প্রবেশমূল্য ধরা হয়েছে ৩০ টাকা। তবে পরিচয়পত্র দেখিয়ে শিক্ষার্থীরা বিনামূল্যে প্রবেশ করতে পারবেন। শোতে ৪৪টি দেশি-বিদেশি স্টলে একশরও বেশি পণ্য প্রদর্শন করা হচ্ছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন