মাদরাসা শিক্ষার মধ্যেও হিন্দুত্ববাদী শিক্ষা সংযোজন করে ইসলামী ও মাদরাসা শিক্ষার স্বতন্ত্র ও বৈশিষ্ট্য নষ্টের গভীর ষড়যন্ত্র চলছে। ইসলামী বিরোধী ষড়যন্ত্র বাস্তবায়ন করার খায়েশ পূরণ হবে না। অবিলম্বে শিক্ষার সকলস্তরে ইসলামী শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক করতে হবে। গতকাল বুধবার বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ পৃথক পৃথক বিবৃতিতে এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টি ঃ স্কুল কলেজের শিক্ষা কারিকুলাম থেকে পরিকল্পিতভাবে ইসলামি শিক্ষাকে বাদ দিয়ে হিন্দুত্ববাদের এজেন্ডা বাস্তবায়নের চক্রান্তের তিব্র নিন্দা ও ক্ষোভ জানিয়েছে বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টির আমীর আল্লামা ছরওয়ার কামাল আজিজি ও মহাসচিব মওলানা মুসা বিন ইজহার। নেতৃদ্বয় এক বিবৃতিতে গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, হিন্দুত্ববাদের দোসররা বাংলাদেশের ইসলামী কৃষ্টি কালচার ধ্বংস করে ভারতীয় সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য নিয়ে ষড়যন্ত্র করছে। এদেশের ধর্মপ্রাণ তৌহিদী জনগণকে সাথে নিয়ে তা নস্যাৎ করতে হবে। সরকারকে এই বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার জোর দাবি জানিয়ে নেতৃদ্বয় হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, অন্যথায় পরিণতি ভালো হবে না।
জাতীয় ওলামা মাশায়েখ আইম্মা পরিষদ ঃ জাতীয় ওলামা মাশায়েখ আইম্মা পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি আল্লামা নূরুল হুদা ফয়েজী, সাধারণ সম্পাদক মাওলানা গাজী আতাউর রহমান ও প্রচার সম্পাদক মুফতী রফিকুন্নবী হাক্কানী বলেছেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনে কর্মরত অনেকেই ইসলাম বিদ্বেষী মনোভাব চিন্তা-চেতনা থেকে সরকারকে বিতর্কিত করছে। সিলেবাস থেকে ইসলামী শিক্ষা কৌশলে বাদ দেয়ার কাজ প্রায় সম্পন্ন। ২০২৩ সালের বই বাজারে আসলে বুঝা যাবে, শিক্ষা সিলেবাস নিয়ে কতই না ষড়যন্ত্র হচ্ছে। অপরদিকে মাদরাসা শিক্ষার মধ্যেও হিন্দুত্ববাদী শিক্ষা সংযোজন করে ইসলামী ও মাদরাসা শিক্ষার স্বতন্ত্র ও বৈশিষ্ট্য নষ্টের গভীর ষড়যন্ত্র চলছে। ইসলামী বিরোধী ষড়যন্ত্র বাস্তবায়ন করার খায়েশ পূরণ হবে না।
গতকাল এক বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, সিলেবাসে মোদীর আদর্শ প্রতিষ্ঠার চক্রান্ত বাস্তবায়ন হতে দেয়া হবে না। তারা অবিলম্বে শিক্ষার সকলস্তরে ইসলামী শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক করার দাবি জানান।
জাতীয় তাফসীর পরিষদ ঃ মাদরাসা শিক্ষা ও ইসলামী শিক্ষার বিরুদ্ধে যে কোনো চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্র রুখে দিতে দেশের বিরানব্বই ভাগ মুসলমান বদ্ধপরিকর বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় তাফসীর পরিষদের চেয়ারম্যান মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূম, মহাসচিব হাফেজ মাওলানা মাকসুদুর রহমান, যুগ্ম মহাসচিব শায়খুল হাদীস প্রিন্সিপাল মুফতী বাকিবিল্লাহ, মুফতী ওমর ফারুক যুক্তিবাদী ও হাফেজ মাওলানা নাযীর আহমাদ শিবলী।
এক বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, ভারতের মোদির আদর্শের আলোকে যে সিলেবাস প্রণয়ন করছে সরকারকে তা থেকে ফিরে আসতে হবে। অন্যথায় দেশময় আন্দোলনের দাবানল জ্বলে উঠলে আখের রক্ষা হবে না।
জাতীয় শিক্ষক ফোরাম ঃ শিক্ষা সিলেবাসে মোদির আদর্শ বাস্তবায়ন করতে দেয়া হবে না বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় শিক্ষক ফোরাম এর কেন্দ্রীয় সভাপতি অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, সিনিয়র সহ-সভাপতি মাওলানা এবিএম জাকারিয়া, সেক্রেটারী জেনারেল অধ্যাপক নাসির উদ্দিন খান ও অধ্যাপক আব্দুস সবুর। এক যৌথ বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, এসএসসি’র মত গুরুত্বপূর্ণ পাবলিক পরীক্ষা ২০২২ এ করোনার অজুহাত দেখিয়ে “ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা” বাদ দেয়া হয়েছে। ২০২৩ সালেও ইসলামী শিক্ষা সিলেবাস থাকবে কিন্তু পরীক্ষা হবে না। একদিকে বিজ্ঞানমনস্ক বানানোর নামে ৯ম-১০ম শ্রেণির বিজ্ঞান বইয়ে বিতর্কিত ‘ডারউইন তত্ত্ব’ বহাল রাখা হয়েছে অথচ নীতি-নৈতিকতা শিক্ষার অন্যতম মাধ্যম “ধর্মশিক্ষা” বাদ দেয়ার প্রস্তাবনা দেয়া হয়েছে যা সচেতন জনগণ গভীর চক্রান্তের অংশ হিসেবে দেখছে।
তারা বলেন, সিলেবাসে হিন্দুত্ববাদ প্রতিষ্ঠার চক্রান্ত চলছে। তারা অবিলম্বে শিক্ষা সিলেবাসে ইসলামী শিক্ষা বাধ্যতামূলক করার দাবি জানান।
বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রসমাজ ঃ শিক্ষা কারিকুলাম থেকে পরিকল্পিতভাবে ইসলামী শিক্ষাকে বাদ দিয়ে হিন্দুত্ববাদের এজেন্ডা বাস্তবায়নের চক্রান্তের তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ জানিয়েছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রসমাজের মহাসচিব এহতেশামুল হক সাখী। গতকাল বিকেলে পুরানা পল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রসমাজ ঢাকা মহানগর নেতাকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় কালে তিনি এ ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, হিন্দুত্ববাদের দোসরদের মাদরাসা শিক্ষার বিরুদ্ধে যে কোনো ষড়যন্ত্র প্রতিহত করা হবে। স্কুল কলেজ ও বিশ্ব বিদ্যালয়ের সকল ক্ষেত্রে ধর্মীয় শিক্ষা বাধ্যতামূলক করতে হবে। অন্যথায় দেশের বিরাজমান অস্থিারতা ও নৈতিকতার সঙ্কট আরও ঘনীভূত হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন