বিএনপি’র শনিবারের গনসমাবেশকে সামনে রেখে শুক্রবার সকাল থেকে সমগ্র দক্ষিণাঞ্চলই সারা দেশকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। দশ দিন আগে ৪ ও ৫ নভেম্বর বরিশালে পরিবহন ধর্মঘট আহবান করা হলেও বৃহস্পতিবার রাত থেকে একে বেেক পটুয়াখালী,বরগুনা,পিরোজপুরও সড়ক পরিরবহন ধর্মঘটের আওতায় আসে। শুক্রবার সকাল থেকে ঝালকবাঠীতেও ইক্ভাএব ধর্মঘট কার্যকর হয়েছে। মহাসড়কে তিন চাকা যান চলাচল বন্ধোর দাবীতে দশ দিন আগে এ পরিবহন ধর্মঘট আহবান করা হলেও বিষয়টি নিয়ে প্রশাসন ও পুলিশ সমস্যা সমাধানে মালিক সমিতিগুলোর সাথে আলাপ আলোচনা দুরের কথা, কোন ধরনের যোগাযোগ পর্যন্ত করেনি। অথচ শুক্রবার সকাল থেকে সমগ্র দক্ষিণাঞ্চল অনেকটাই অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছে। বাস টার্মিনালগুলোতে শুনশান নিরবতা। অনেক এলাকায়ই মুমূর্ষ রোগী পর্যন্ত পরিবহন করা যাচ্ছেনা। সমগ্র দক্ষিণাঞ্চরে সরকারী স্বাস্থ্যৗ পরিসেবার প্রায় পুরোটাই বরিশাল শের এ বাংলা মেডিকেল কলেজ হ্সাপাতালালের ওপর নির্বরশীল। সড়কের পাশাপাশি এ অঞ্চলের নৌযোগাযোগও বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। তবে ইতোমধ্যে বরিশালের বঙ্গবন্ধু উদ্যানÑবেলপার্কে ইতোমধ্যে ৩০ হাজার নেতাকর্মী সমবেত হয়েছেন।
সার্ াদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন বরিশাল শুক্রবার সকাল থেকে অনেকটা করোনাকালের লক ডাউনের রূপ নিয়েছে। পরিবহন মালিকদের আগাম ঘোষিত সড়ক পরিবহন ধর্মঘটের সাথে অঘোষিতভাবে নৌ যোগাযোগও বন্ধ করে দেয়ায় সমগ্র দক্ষিণাঞ্চলই যোগাযোগ শূণ্য । বরিশাল মহানগরী সারা দেশ থেকে প্রায় বিচ্ছিন্ন। সড়ক ও নৌপরিবহন ধর্মঘটের পাশাপাাশি সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়ায় মহানগরীতে এখন শুনশান নিরবতা। নৌ পরিবহন ধর্মঘটের আনুষ্ঠানিক ঘোষনা না থাকলেও বুধবার রাত থেকে ভোলা ও বরিশালের মধ্যে স্পীডবোট সহ বৃহস্পতিবার সকাল থেকে যাত্রীবাহী নৌযান চলাচলও বন্ধ করে দেয়া হয়। আর শুক্রবার সকালে বরিশালের ১২টি সহ দক্ষিণাঞ্চলের প্রায় ২৫টি রুটেই নৌযান চরলাচল অঘোষিতভাবে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
তবে বৃহস্পতিবার রাতের মধ্যেই বরিশাল মহানগরীতে বিপুল সংখ্যক বিএনপি নেতা-কর্মী ও সমর্থক পৌছে গেছেন বলে জানা গেছে। গত রাতভরই সমগ্র দক্ষিণাঞ্চল থেকে বিপুল সংখ্যক নেতা কর্মী এ নগরীতে পৌছেন। নগরীর যে বঙ্গবন্ধু উদ্যান-বেলপার্কে শনিবার গনসমাবেশের আয়োজন করা হয়েছে, সেখানে বৃহস্পতিবার দিনভর প্রায় ৩ হাজার নেতা-কর্মীর অবস্থান লক্ষ করা গেলেও রাত বাড়ার সাথে সে সংখ্যা বেড়ে ১০ হাজারে উন্নীত হয়। শুক্রবার দুপুর ১২টায় সংখ্যটা প্রায় ৩০ হাজারে পৌছেছে বলে প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবী। দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন জেলা-উপজেলা থেকে আগত এসব নেতা-কর্মী ও সমর্থকগন বেলপার্কের খোলা আকাশের নিচে রাতযাপন করেন। এদের অনেকেই চুলা ও তৈজসপত্র নিয়ে সভাস্থলে অবস্থান করে রান্না করে খাবার তৈরী করে খাচ্ছেন।
এদিকে শুক্রবার সকাল থেকে সারা দেশের সাথে বিচ্ছিন্ন বরিশাল মহানগরীতে ইজিবাইক ও গ্যাস চালিত থ্রী-হুইলার সহ সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ করেন দেয়া হয়েছে। এমনকি নগরী যুড়ে হাতে গোনা কিছু রিক্সার চললেও চালকদের যথেষ্ঠ ভয় ভীতি কাজ করছে। ফলে নিত্য যানযটের এ নগরীতে শুক্রবার সকাল থেকে বেশীলভাগ রাস্তাঘাটই প্রায় ফাঁকা। নিত্যকার যানযটে নাকাল হবার কোন বিড়ম্বনসা নেই। থেমে গেছে ট্রাফিক পুলিশের বাঁশির হুইসালও।
এদিকে বিএনপি’র মিডিয়া সেলের প্রধান সাবেক এমপি জহিরউদ্দিন স্বপন জানিয়েছেন, কোন বঁধা বিঘœ বরিশালের গনসমাবেশকে রুদ্ধ করতে পারবে না। এ গনসমাবেশ মহাসমাবেশর রূপ নেবে বলেও দাবী করেন তিনি। কেন্দ্রীয় নেতা ও যুব দলের সাবেক সভাপতি সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল শুক্রবারেই নিজের শহরে পৌছে শণিবারের গনসমাবেশ সফল করতে কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দের সাথে সমন্বয় করে জনসংযোগ সহ নানা তৎপড়তায় অংশ নিচ্ছেন। কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান ডাঃ এবিএম জাহিদ হোসেন পুরো গনসমাবেশ বাস্তবায়নে সমন্বয়কের দায়িত্বে রয়েছেন।
এদিকে ১০ নভেম্বর বরিশালে যুব লীগের কর্মসূচীকে সামনে রেখে বৃহস্পতিবার রাতেও আওয়ামী লীগ, যুব লীগ ও ছাত্র লীগ নগরীর বিভিন্ন ওয়ার্ডের অলিগলিতে মিছিল করেছে। তবে বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরাও নগরীর বিভিন্ন এলাকায় বিক্ষিপ্তভাবে মিছিল নিয়ে শণিবারের গনসমাবেশের পক্ষে প্রচারনা চালায়।
নানা ধরনের প্রতিবন্ধকতা অতিক্রম করে শণিবার বরিশালে বিভাগীয় গনসমাবেশ চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ, খুলনা ও রংপুরের মত কতটা সফল হয় তা দেখার অপেক্ষায় আছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহল। কারণ বরিশাল সহ দক্ষিণাঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থা এখনো অনেকটাই নৌপথ নির্ভর। সড়ক ও নৌযোগাযোগ বন্ধ করে দেয়ায় দলীয় নেতা-কর্মী ও সমর্থকগন কোন পথে কিভাবে সমাবেশস্থলে পৌছবেন তার ওপরই নির্ভর করছে এ গনসমাবেশে লোক সমাগম সহ পরিপূর্ণ সাফলতা। এ মন্তব্য রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহলের।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন