বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স বলেছেন, আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘণ্টা বাজতে শুরু করেছে, গণ অভ্যূত্থানের পদধ্বনি শোনা যাচ্ছে। সরকারের বাঁধা বিঘœ সন্ত্রাস, নৈরাজ উপেক্ষা করে এক একটি গণসমাবেশ জনসমুদ্রে পরিণত হচ্ছে। জনগণ রাজপথে নেমে আসছে। শুধু গণসমাবেশ নয়, প্রতিটি কর্মসূচিতেই জনগণ সম্পৃক্ত হচ্ছে। কর্মীসভাও গণসমাবেশে পরিণত হচ্ছে। যার মাধ্যমে গণঅভ্যূত্থানের প্রেক্ষাপট তৈরি হচ্ছে ।
শনিবার (০৫ নভেম্বর) বিকেলে ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট ঊপজেলা ও পৌর বিএনপির কর্মী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন ।
এমরান সালেহ প্রিন্স বলেন, গণ অভ্যূত্থানে গণবিরোধী সরকারের পতন ঘটিয়ে গুম-খুনের হোতা ও দুর্নীতিবাজদের বিচার করা হবে, কাউকে পালাতে দেয়া হবে না। তিনি বলেন, দেশের বারোটা বাজিয়ে প্রধানমন্ত্রী এখন জনগণকে মিতব্যয়ী হবার পরামর্শ দিচ্ছেন। তীব্র অর্থনৈতিক সঙ্কটে বিশাল লটবহর নিয়ে অপ্রয়োজনীয় ভারত, আমেরিকা সফর, লবিস্ট নিয়োগ, প্রশাসনের অনুগত কর্তাব্যক্তিদের উৎকোচ হিসেবে অর্ধশত কোটি টাকার বাড়ী দিয়ে জনগণকে নসিহত করা হচ্ছে। নিজেদের বেতন, ভাতা কমিয়ে, দুর্নীতি, চুরি ও অনুৎপাদনশীল খাতে অপচয় বন্ধ করে যদি নসিহত করা হতো তবে জনগণ মেনে নিত। এসব নসিহত না করে ব্যর্থতা স্বীকার করে পদত্যাগ করুন।
বিএনপির এই সাংগঠনিক সম্পাদক বলেন, ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপি নাকি গণসমাবেশের নামে নাটক করছে। আন্দোলনকে নাটক বলছেন, এসব কথা বলে জনগণকে অপমানিত করছেন। যাত্রা পালার খল নায়কের মত কথা বলছে তারা। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের দুর্নীতি, লুটপাটে দেশের অর্থনীতি ল-ভ-। দেশ ও দেশের মানুষ তীব্র অর্থনৈতিক সঙ্কটে নিপতিত। বিদ্যুৎ ও গ্যাসের অভাবে মিল কারখানা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। ব্যাবসায়ীরা শত কোটি টাকার অর্ডার উৎপাদন মারাত্মকভাবে হ্রাস পাচ্ছে, শ্রমিকরা বেকার হচ্ছে। মানুষ নিত্যদিন খাদ্যের সাথে কম্প্রমাইজ করছে, নিরব দুর্ভিক্ষ চলছে। সামনে আরও দুরবস্থা অপেক্ষা করছে। দেশ ও জনগণের এই দুঃসহ পরিস্থিতির জন্য আওয়ামী লীগ সরকার দায়ী। অথচ সরকার বিভিন্ন অজুহাত তুলে নিজেদের ব্যর্থতা আড়াল করতে চায় ।
বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ওয়ারেস আলী মামুন বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। নচেৎ জনগণ তাদেরকে হঠাতে যা যা করা দরকার তা করবে। জনগণের পিঠ আজ দেয়ালে ঠেকে গেছে, আন্দোলনের মাধ্যমেই জনগণ গণতন্ত্রকে মুক্ত করবে।
আরেক সাংগঠনিক সহ-সম্পাদক শরীফুল আলম বলেন, বাধা, বিঘœ, সন্ত্রাস, নৈরাজ্য সৃষ্টি করে জনগণকে সরকার আন্দোলন থেকে নিবৃত্ত করতে পারছে না। এটা সরকারের নৈতিক পরাজয়। তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেও তাঁকে জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন করতে পারেনি।
হালুয়াঘাট পৌর শহরের পাগলপাড়া মেলার মাঠে অনুষ্ঠিত কর্মী সমাবেশ বিশাল গণসমাবেশে পরিণত হয়। এতে উপজেলার ১২ টি ইউনিয়ন ও পৌর এলাকার প্রতিটি ওয়ার্ড থেকে বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী, সমর্থক রং বেরংয়ের টুপি পরে, ব্যানার, ফেস্টুন হাতে নিয়ে স্বতঃস্ফূর্ত মিছিল নিয়ে সমাবেশে যোগ দেন। দলের সাংগঠনিক পুনর্গঠন প্রক্রিয়ার শুরুর প্রাক্কালে ধারাবাহিক কর্মীসমাবেশের অংশ হিসেবে আয়োজিত কর্মী সমাবেশে ময়মনসিংহ উত্তর জেলা বিএনপির অহ্বায়ক অধ্যাপক এনায়েত উল্লাহ কালাম সভাপতিত্ব করেন। সঞ্চালনা করেন জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মোতাহার হোসেন তালুকদার। সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন ময়মনসিংহ দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহবায়ক ডা.মাহবুবুর রহমান লিটন, ময়মনসিংহ উত্তর জেলা বিএনপির সদস্য শাহ নূরুল কবীর শাহীন, আবুল বাশার আকন্দ, ইয়াসির খান চৌধুরী, মফিজ উদ্দিন, হাফেজ আজিজুল হক, কামরুজ্জামান লিটন, হারুন অর রশিদ, বীরমুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক আমজাদ আলী, আসলাম মিয়া বাবুল, হানিফ মোহাম্মদ শাকের উল্লাহ, আবু হাসনাত বদরুল কবির, আরফান আলী, আব্দুল হামিদ, আলী আশরাফ, বীরমুক্তিযোদ্ধা কাজিম উদ্দিন, আলমগীর আলম বিপ্লব, উপজেলা বিএনপির আব্দুল হাই, কাজী ফরিদ আহমেদ পলাশ, মিজানুর রহমান মিজান প্রমুখ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন