বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৮ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আন্তর্জাতিক সংবাদ

মিয়ানমারের ওপর নতুন করে নিষেধাজ্ঞা ইইউ-যুক্তরাষ্ট্রের

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১০ নভেম্বর, ২০২২, ১২:০০ এএম

সহিংসতার জেরে মিয়ানমারের সামরিক কর্মকর্তা, কোম্পানি ও অস্ত্র ব্যবসায়ীদের ওপর নতুন করে নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন। সহিংসতা বন্ধে মানবাধিকার সংগঠনগুলো দ্রæত ব্যবস্থা নেওয়ার আহŸান জানানোর পর এ সিদ্ধান্ত এলো। মঙ্গলবার ইউরোপীয় কাউন্সিল এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, মিয়ানমারের জান্তা সরকারের প্রধান বিচারপতি ও একজন মন্ত্রীসহ ১৯ কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। দুই বছর আগে ক্ষমতা নেওয়ার পর থেকে জান্তা সরকারের আগ্রাসন, সহিংসতা বৃদ্ধি ও মানবাধিকার লংঘনের অভিযোগে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। অপরদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়েছে অস্ত্র ব্যবসায়ী কিয়াও মিন উ ও তার প্রতিষ্ঠান স্কাই এভিয়েটর কোম্পানি। মার্কিন ট্রেজারি বিভাগের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, কিয়াও মিন উর মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। একই সাথে তিনি উচ্চপদস্থ বিদেশি সামরিক কর্মকর্তাদের, মিয়ানমারে সফরের ব্যবস্থা করতে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে কাজ করেছেন। জান্তা সরকারের সাথে অস্ত্র বাণিজ্যেও অংশ নেয় তার স্কাই এভিয়েটর। মার্কিন ট্রেজারি বিভাগের আন্ডার সেক্রেটারি ব্রায়ান নেলসন বলেন, সামরিক অভ্যুত্থানের পর থেকে সহিংসতার জেরে মুনাফা লাভ করেছেন অস্ত্র ব্যবসায়ী কিয়াও মিন উ। এ ছাড়া কালো তালিকাভুক্ত ছিলেন তায় জা ও অং মিও মিন্ট। তারা মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর অস্ত্র ব্যবসার সাথে জড়িত। নাইং হুতুত অং, যিনি রোহিঙ্গাদের ওপর দমন-পীড়নের ক্ষেত্রে সামরিক বাহিনীকে অর্থায়ন করেন বলে অভিযোগ রয়েছে এবং তিনিও নিষেধাজ্ঞার তালিকায় রয়েছেন । এ নিয়ে মোট ৮৪ ব্যক্তি ও ১১টি প্রতিষ্ঠান ইইউর নিষেধাজ্ঞার আওতায় এলো। তাদের মধ্যে অনেকের ভিসা ও সম্পদ জব্দ করার নির্দেশও রয়েছে। মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল গত সপ্তাহে সহিংসতা বন্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার আহŸান জানায়। সংগঠনটি স¤প্রতি, ২০২১ সালের মার্চ মাস থেকে ২০২২ সালের আগস্ট পর্যন্ত দেশটির কায়া, কায়িন ও চিন রাজ্যের পাশাপাশি কেন্দ্রীয় সাগাইং অঞ্চলে ১৬টি বিমান হামলার ঘটনার একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। বিমান হামলায় কমপক্ষে ১৫ জন বেসামরিক লোক নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও ৩৬ জন। ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালানো হয়েছে বাড়িঘরে। দুটি হামলায়, সামরিক বাহিনী ক্লাস্টার যুদ্ধাস্ত্র ব্যবহার করেছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। অথচ এসব অস্ত্রের ব্যবহার আন্তর্জাতিকভাবে নিষিদ্ধ। গত ১ ফেব্রুয়ারি অভ্যুত্থানের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক সরকারকে উৎখাত করে ক্ষমতা দখল করে নেয় মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী। তবে দেশটির সিংহভাগ জনগণ বিষয়টি মেনে নেয়নি। রাস্তায় বিক্ষোভ, সরকারি কাজকর্ম বয়কটসহ সশস্ত্র বিদ্রোহের মাধ্যমে জান্তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাচ্ছে তারা। স্থানীয় মনিটরিং গ্রæপগুলো বলছে, মিয়ানমারে সেনা অভ‚ত্থানের পর গত দুই বছরে সহিংসতায় এ পর্যন্ত ২ হাজার চারশ মানুষ নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া জাতিসংঘের শিশুবিষয়ক সংস্থা বলছে, দেশটির ১০ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। এদিকে, দেশটির গণতান্ত্রিক নেত্রী অং সান সূচি এখনও কারাবন্দি। তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও জালিয়াতির মামলা চলছে। এ পর্যন্ত বেশ কয়েকটি মামলায় সাজা দেওয়া হয়েছে অং সান সূচিকে। আল-জাজিরা।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন