শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

ঋণের প্রথম কিস্তি ফেব্রুয়ারিতে

তিন কিস্তি, নতুন ভ্যাট আইন প্রণয়নসহ আইএমএফ’র ৫ শর্ত যেভাবে চেয়েছিলাম, সেভাবেই ঋণ দিচ্ছে : অর্থমন্ত্রী :: ৪৫০ কোটি ডলার সাত কিস্তিতে ২০২৬ পর্যন্ত আসবে :: বাংলাদেশ ব্যাংকের স্বায়ত্ত

হাসান সোহেল | প্রকাশের সময় : ১০ নভেম্বর, ২০২২, ১২:০০ এএম

অবশেষে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কাছ থেকে সাড়ে ৪০০ কোটি ডলার বা সাড়ে ৪ বিলিয়ন ঋণ পাচ্ছে বাংলাদেশ। ইতোমধ্যে সংস্থাটির কাছ থেকে সবুজ সঙ্কেত মিলেছে। অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালও নিশ্চিত করেছেন, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) বাংলাদেশের প্রত্যাশা অনুযায়ী ৪৫০ কোটি ডলার ঋণ দিচ্ছে। অর্থমন্ত্রী বলেছেন, আইএমএফ-এর সাথে এর আগে একাধিকবার বৈঠক হয়েছে। চলমান ঋণ আলোচনার পর্বটি আমরা সফলভাবে সমাপ্ত করলাম। আইএমএফের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, ঋণের ব্যাপারে বাংলাদেশের সঙ্গে স্টাফ লেভেলে সমঝোতা হয়েছে। একে ওই ঋণের ব্যাপারে আইএমএফের গ্রিন সিগন্যাল বলা হতে পারে।

নতুন কোনো শর্ত না থাকলেও নতুন ভ্যাট আইন প্রণয়নসহ ৫ শর্তে তিন কিস্তিতে ওই ঋণ ছাড় করবে বাংলাদেশের ঘনিষ্ঠ উন্নয়ন সহযোগী আইএমএফ। এর মধ্যে রয়েছে, রাজস্ব বাড়ানো ও যৌক্তিক ব্যয় ব্যবস্থা চালু করা, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ ও আধুনিক মুদ্রানীতি তৈরি করা, আর্থিক খাতের দুর্বলতা দূর করা। এক্ষেত্রে নজরদারি বাড়ানো, সরকার ও নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষের আওতা বৃদ্ধির পাশাপাশি পুঁজিবাজারের উন্নয়ন করা। একই সঙ্গে বাণিজ্য ও বৈদেশিক বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে পরিবেশে তৈরি, মানব দক্ষতা বৃদ্ধি, আর্থিক খাতে সুশাসন নিশ্চিত করে ব্যবসায়িক পরিবেশ উন্নত করা। এছাড়া জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতি কাটাতে প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্তিশালী করে তোলা, পরিবেশের উন্নতির পদক্ষেপ নেয়া এবং জলবায়ু সংক্রান্ত খাতে আরও বিনিয়োগ ও আর্থিক সরবরাহ নিশ্চিত করার শর্তারোপ করা হয়েছে। আইএমএফ-এর এ সফর নিয়ে একটি সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশের অর্থমন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামাল বলেছেন, যেভাবে আমরা চেয়েছিলাম, আইএমএফ সেভাবেই আমাদের ঋণ দিচ্ছে। আইএমএফ যেসব শর্ত দিয়েছে, যেমন রেভিনিউ বাড়ানো, সরকারও অনেকদিন ধরেই এসব নিয়ে কাজ করছে। অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি করার মতো শর্ত-এ নিয়ে আমরা অনেকগুলো মিটিং করেছি। তাদের শর্ত আমাদের শর্ত একই হলো। যেগুলো আমরা নিজেরাই শুরু করছিলাম।

এদিকে, ঋণের বিষয়ে জারি করা আইএমএফের একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, আইএমএফের এক্সটেন্ডেড ক্রেডিট ফ্যাসিলিটি (ইসিএফ) এবং এক্সটেন্ডেড ফান্ড ফ্যাসিলিটি থেকে ৩২০ কোটি ডলার এবং রেজিলিয়েন্স অ্যান্ড সাসটেইনিবিলিটি ফ্যাসিলিটির (আরএসএফ) আওতায় ১৩০ কোটি ডলার ঋণ দেয়ার বিষয়ে কর্মকর্তা পর্যায়ে তারা একমত হয়েছেন। একই সঙ্গে এ ঋণের উদ্দেশ্য বাংলাদেশের সামষ্টিক অর্থনীতিকে স্থিতিশীল রাখা এবং অসুবিধাগ্রস্ত মানুষকে রক্ষা করে শক্তিশালী, অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং সবুজ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে সহায়তা করা। ৪২ মাস ধরে বিভিন্ন কিস্তিতে এ ঋণ দেয়া হবে বলে উল্লেখ করেছে তারা।

গতকাল সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে আইএমএফ’র ঋণের বিষয়টি নিশ্চিত করেন অর্থমন্ত্রী। দুই সপ্তাহের লম্বা সফরের শেষ দিনে গতকাল আইএমএফ প্রতিনিধিদল অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে শেষ বৈঠক করেন। এখন যে কোনো সময় ঢাকা ছাড়বে প্রতিনধিদল। কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রতিনিধিদলটি বাংলাদেশে তাদের নানা আলোচনার তথ্য তুলে ধরে আইএমএফের ওয়াশিংটন সদর দফতরে ইতিবাচক প্রতিবেদন দেবে। সেই প্রতিবেদনের ভিত্তিতে সংস্থাটির বোর্ড সভায় এই ঋণ অনুমোদন দেয়ার সম্ভাবনা আছে। সচিবালয়ে অর্থ মন্ত্রলালয়ের সম্মেলন কক্ষে আইএমএফ প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন সংস্থার এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় বিভাগের প্রধান রাহুল আনন্দ। অন্যদিকে বাংলাদেশের প্রতিনিধিদলে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের পাশাপাশি উপস্থিত ছিলেন অর্থ বিভাগের সিনিয়র সচিব ফতিমা ইয়াসমিন, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদার প্রমুখ। রাহুল আনন্দ বলেছেন, ঋণের অর্থফেরত পাওয়া নিয়ে আইএমএফ’র কোনো শঙ্কা নেই।

অর্থমন্ত্রী বলেন, যেভাবে আমরা চেয়েছিলাম, আইএমএফ সেভাবেই আমাদের ঋণ দিচ্ছে। আইএমএফের ঋণ আমরা পেতে যাচ্ছি ইনশাআল্লাহ। তিনি বলেন, ঋণের পরিমাণ সাড়ে ৪ বিলিয়ন ডলার (বর্তমান বিনিময় হার অনুযায়ী ১ ডলার ১০০ টাকা ধরলে ৪৫ হাজার কোটি টাকা)। সাত কিস্তিতে ২০২৬ পর্যন্ত ঋণ আসবে। প্রথম কিস্তি আসবে আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে। আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, প্রথম কিস্তিতে আসবে ৪৪৮ মিলিয়ন ডলার। এর জন্য বাংলাদেশকে কোনো সুদ দিতে হবে না। পরবর্তী সাত কিস্তিতে বাকি অর্থ আসবে। প্রতি কিস্তিতে অর্থের পরিমাণ হবে ৫৫৯ দশমিক ১৮ মিলিয়ন ডলার। এটার জন্য বাংলাদেশকে সুদ দিতে হবে দুই দশমিক দুই শতাংশ।

আইএমএফ’র এই ঋণ কর্মসূচির ক্ষেত্রে অর্থনীতির বহিঃখাত-কে স্থিতিশীল করা, ২০২৬ সালে এলডিসি হতে উত্তরণকে সামনে রেখে অর্থনীতিকে শক্তভিত্তি দেয়া, আর্থিক খাতকে শক্তিশালী করা এবং বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ঝুঁকি মোকাবিলা করে উচ্চ প্রবৃদ্ধি অর্জন এবং সরকারের পরিকল্পনা অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই উচ্চমধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হওয়া- এই চারটি মূল লক্ষ্য হিসেবে উল্লেখ করেন অর্থমন্ত্রী। একই সঙ্গে আইএমএফ টিম আমাদের চলমান অর্থনৈতিক সংস্কারের সাথে একমত পোষণ করেছে। সে অনুযায়ী আমরা চার বছর মেয়াদি ঋণ কর্মসূচি নিতে যাচ্ছি। এছাড়া অর্থমন্ত্রী দেশের চলমান সংস্কার কার্যক্রমের বিষয় উল্লেখ করে বলেন, সরকারের বাজেট ঘাটতি ধারণযোগ্য পর্যায়ে রাখা হবে, যা গত প্রায় ১৪ বছর যাবত আমরা করে আসছি।
আইএমএফ নন-পারফর্মিং ঋণ কমাতে এবং রাজস্ব আদায় বাড়ানোরও পরামর্শ দিয়েছে উল্লেখ করেন তিনি। তবে সরকারি ভর্তুকি নিয়ে আন্তর্জাতিক অর্থঋণদাতা সংস্থাটি কিছু বলেনি বলে জানান অর্থমন্ত্রী।

আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, সারা বিশ্বের অর্থনীতিই এখন একটি ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। উন্নত থেকে উন্নয়নশীল সকল দেশে অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি ঘটেছে। প্রায় সকল দেশের মুদ্রার মান ডলারের বিপরীতে কমে গিয়েছে। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমেছে। বৈশ্বিক অর্থনীতিতে এ উত্তাপের আঁচ আমাদের অর্থনীতিতেও কিছুটা লেগেছে। এ অস্থিরতা যাতে কোন ধরনের সঙ্কটে ঘনীভূত না হয় তা নিশ্চিত করতেই আমরা আগাম সতর্কতা হিসেবে আইএমএফ-এর ঋণের জন্য অনুরোধ করেছিলাম।

আইএমএফ-এর সফররত দলটি বাংলাদেশ সরকারের সকল স্টেকহোল্ডারদের সাথে আলোচনা করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমাদের সামষ্টিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা অন্যান্য অনেক দেশের তুলনায় ভালো বলে তারা আমাদের জানিয়েছেন। আমাদের সরকারের সবসময় প্রচেষ্টা থাকে বাজেট ঘাটতিকে জিডিপির ৫ শতাংশের মধ্যে সীমিত রাখা। গত বছর আমাদের বাজেট ঘাটতি ছিল ৫ দশমিক ১ শতাংশ যা এই অর্থবছরে ৫ দশমিক ৫ শতাংশ ধরা আছে। স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও সামাজিক নিরাপত্তার মতো সামাজিক খাতে সরকারের ব্যয় বৃদ্ধি করা যা আমরা প্রতি অর্থবছরে ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি করছি। অর্থমন্ত্রী জানান, সামাজিক নিরাপত্তা খাতে চলতি অর্থবছরে সরকারের বরাদ্দ রয়েছেÑ ১ লাখ ১৩ হাজার ৫৭৬ কোটি টাকা যা মোট বাজেটের প্রায় ১৭ শতাংশ। আর্থিক খাতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ নতুন কয়েকটি আইন প্রণয়ন এবং পুরোনো কয়েকটি আইনের সংশোধনের চলমান কার্যক্রম ত্বরান্বিত করা; রাজস্ব ব্যবস্থার সংস্কার জোরদার এবং কর প্রশাসনের দক্ষতা বাড়ানোর মাধ্যমে সরকারের রাজস্ব আদায় বৃদ্ধি করা হবে বলে উল্লেখ করেন আ হ ম মুস্তফা কামাল।

তিনি বলেন, ভ্যাট আদায়ের জন্য আমরা ইএফডি মেশিন স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছি। এযাবত ৬ হাজার ৭৩২টি মেশিন স্থাপন করা হয়েছে। আগামী বছরে আরো ৬০ হাজার মেশিন স্থাপন করা হবে এবং পরবর্তী ৪ বছরে ২ লাখ ৪০ হাজার মেশিন স্থাপিত হবে। সামনে আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের মূল্য কমলে দেশের অভ্যন্তরেও যেন তা একইভাবে কমানো যায়, তার জন্য জ্বালানি তেলের মূল্য সমন্বয়ের ব্যবস্থাটি আন্তর্জাতিক বাজারের মূল্যের সাথে সময়ে সময়ে সমন্বয় করা হবে বলে জানান তিনি।

অর্থমন্ত্রী বলেন, টাকার বিনিময় হার নির্ধারণের কাজটি ধীরে ধীরে বাজারের উপর ছেড়ে দেয়া (যা আমরা ইতোমধ্যে শুরু করেছি), সরকারের উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রণয়ন এবং বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকির বিষয়টিকে গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করা এবং সেদিকে লক্ষ্য রেখে উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ করা; একটি দুর্যোগ ঝুঁকি অর্থায়নের পরিকল্পনা করা, যার মধ্যে দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তার বিষয়টিও থাকবে পরিকল্পনায়।

সূত্র মতে, আড়াই বছরের করোনা মহামারির পর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ধাক্কায় বাংলাদেশের অর্থনীতিতে যে চাপ সৃষ্টি হয়েছে, সেই চাপ সামাল দিতে বিশ্ব আর্থিক খাতের অন্যতম প্রধান মোড়ল আইএমএফের ঋণ পাওয়া যাবে কি না, সেটা নিয়ে নানা আলোচনা ছিল। সরকারের নীতিনির্ধারক থেকে শুরু করে অর্থনীতিবিদ, ব্যবসায়ী নেতা থেকে শুরু করে সবার মনেই ছিল একই প্রশ্ন। পাশাপাশি আইএমএফ ঋণের জন্য যেসব শর্ত দিচ্ছে, সেসব শর্তের কতটা সরকার মানবে, সেসব প্রশ্নও আছে অনেকের মধ্যে।

ঋণের বিষয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেছেন, যুদ্ধের কারণে আমাদের অর্থনীতি একটু চাপে পড়েছে। সেই চাপ সামাল দিতে তাদের কাছে সহায়তা চেয়েছি। আর আরেকটি বিষয় হচ্ছে, আমরা অত্যন্ত ভালো ঋণগ্রহীতা, আমাদের ভাবমূর্তি খুবই ভালো। আইএমএফ, বিশ্বব্যাংক, এডিবিসহ সব দাতা দেশ ও সংস্থার ঋণ আমরা নিয়মিত পরিশোধ করেছি। কখনোই খেলাপি হইনি। তাই আইএমএফ থেকে অবশ্যই আমাদের সাড়ে ৪ বিলিয়ন ডলারের এই ঋণের পুরোটাই পাব বিশ্বাস ছিল। ঋণের শর্ত প্রসঙ্গে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, প্রথা অনুযায়ী সফর শেষে আইএমএফ একটি প্রতিবেদন দেবে। সেই প্রতিবেদন আমরা ভালোভাবে পড়ব। সেটা থেকে যেগুলো ভালো, আমাদের জন্য ভালো হবে, দেশের জন্য মঙ্গল হবেÑ সেগুলো অবশ্যই বিবেচনা করব।

বেসরকারি গবেষণা সংস্থা পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক এবং দীর্ঘদিন আইএমএফের গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করে আসা অর্থনীতিবিদ আহসান এইচ মনসুর বলেছেন, দুই সপ্তাহ ধরে আইএমএফ কর্মকর্তারা বাংলাদেশ ব্যাংক, অর্থ মন্ত্রণালয়, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডসহ সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও সংস্থার সঙ্গে বৈঠক করেছেন। সেসব বৈঠকে তারা কিছু শর্তের কথা বলছেন। তবে মনে রাখতে হবে, এসব শর্তের কোনোটাই কিন্তু নতুন নয়। বিভিন্ন সময় তারা এসব পরামর্শ দিয়েছে। এখন যেহেতু মোটা অঙ্কের একটা ঋণ দিচ্ছে। তাই আবার মনে করিয়ে দিচ্ছে।

সূত্র মতে, বাংলাদেশের অর্থনীতির ভিত মজবুত করতে বিভিন্ন সময়ে ব্যাংকিং খাতের প্রধান সমস্যা খেলাপি ঋণের হার হ্রাস, রাজস্ব আদায় বাড়াতে রাজস্ব খাতের ব্যাপক সংস্কারের কথা বলে আসছিল। এ ছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংককে পূর্ণ স্বায়ত্তশাসন প্রদান, বিদেশি মুদ্রার সঞ্চয়ন বা রিজার্ভের হিসাব পদ্ধতি আন্তর্জাতিক মানের করা, বিদেশি মুদ্রার বিনিময় হার বাজারের ওপর ছেড়ে দেয়া, আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে জ্বালানি তেলের দাম সমন্বয়সহ নানা পরামর্শ দিয়ে আসছে সংস্থাটি। যদিও আইএমএফের ওপর কোনো কারণে নির্ভরশীল না থাকায় এতদিন সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংক এসব পরামর্শ আমলে নেয়নি। করোনা মহামারির দীর্ঘ ধাক্কার পর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে বিশ্বের অনেক দেশের মতো বাংলাদেশের অর্থনীতিও বেশ চাপে পড়েছে। আর চাপ সামলাতে সরকার আইএমএফের কাছে সাড়ে ৪ বিলিয়ন ডলার ঋণ চেয়েছে। ঋণ নিয়ে আলোচনা করতে আসা আইএমএফের প্রতিনিধিরা প্রতিদিন অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করে জানিয়ে দিয়েছেন কোথায় কী ধরনের সংস্কার করতে হবে।

উল্লেখ্য, বৈশ্বিক ও অভ্যন্তরীণ সঙ্কটের পরিপ্রেক্ষিতে অর্থনীতিতে যে চাপ সৃষ্টি হয়েছে, তা মোকাবিলায় বাংলাদেশের অন্যতম উন্নয়ন সহযোগী যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ঋণদানকারী সংস্থা আইএমএফের কাছে ৪৫০ কোটি ডলার ঋণ চায় বাংলাদেশ। অর্থ বিভাগ চিঠিতে আইএমএফের ম্যানেজিং ডিরেক্টর ক্রিস্টালিনা জর্জিভার কাছে চাওয়া ঋণের বিষয়ে সংস্থাটিকে প্রয়োজনীয় আলোচনা শুরুর জন্য অনুরোধ করা হয়। তিন বছরের জন্য তিন কিস্তিতে এই ঋণ চায় সরকার। এ বিষয়ে চলতি বছরের জুলাইয়ের শেষ দিকে ওয়াশিংটনে আইএমএফের প্রধান কার্যালয়ে আনুষ্ঠানিক চিঠি পাঠায় বাংলাদেশ সরকার। তারই অংশ হিসেবে ঋণ দেয়ার বিষয়ে আনুষ্ঠানিক আলোচনা করতে আইএমএফের দক্ষিণ এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের প্রধান রাহুল আনন্দের নেতৃত্বে ১০ সদস্যের প্রতিনিধিদল গত ২৬ অক্টোবর ঢাকায় আসে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (6)
Md Masud ১০ নভেম্বর, ২০২২, ৬:৪১ এএম says : 0
আমরা সাধারণ মানুষ আমাদের অবস্থা এমনিতেই খারাপ আমাদের নিজের ঋণের জন্য আমরা বিব্রত আমাদের উপরে আর কোন ঋণের বোঝা যেন চাপে যে টাকা বিদেশগেছে সেটা ই ফিরিয়ে আনতে হবে আমাদের উপরে আর ঋন যেন না চাপে অনুরোধ করছি।
Total Reply(0)
hassan ১০ নভেম্বর, ২০২২, ৫:০৫ পিএম says : 0
আমাদের ট্যাক্সের টাকা সব লুট করে বিদেশে পাঠিয়ে দিয়ে আবার ঋণ নেওয়া হচ্ছে আমাদের মাথার পরে কত লক্ষ টাকা জেরিন হয়েছে সেটা আল্লাহ জানে এবং যারা ইকোনমিক্স তারা জানে আমাদেরকে সুদসহ এই ঋণ শোধ করতে হবে আরে সরকারতো রাজা রানীর মত আমাদের ট্যাক্সের টাকায় বসবাস করে তাদের তো কোন অসুবিধা হবে না তারা তো কিছু হলেই সব বিদেশে পালিয়ে যাবে আর আমরা না খেয়ে থাকবো এ দেশে এদের পরে গজল দাও গজল দাও গজল দাও ধ্বংস করো এদেশ থেকে বিতাড়িত করো এবং কোরআন দিয়ে দেশ শাসন করা ও তাহলে আমাদের দেশ উন্নত হবে বিদেশ থেকে এক পয়সাও সুদে ঋণ নিবনা আমরা সুদ হারাম সবথেকে নিচের গুনা হচ্ছে সুদের নিজের মায়ের সাথে যেনা করা আরে সরকাররা সব সময় মার সাথে যিনা করছে এই সুদের কারবার করে তাদের ধ্বংস অনিবার্য
Total Reply(0)
ফাহমিদা নিশাত ১০ নভেম্বর, ২০২২, ৬:৪০ এএম says : 0
আবার সব ধরণের ট্যাক্স আরেকদফা বাড়বে। সাথে আরও কতকিছু
Total Reply(0)
Habib Yaasin ১০ নভেম্বর, ২০২২, ৬:৪০ এএম says : 0
বিশ্লেষকরা বলে দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেলে নাকি আইএমএফের দারস্থ হয়!!!!
Total Reply(0)
AH Sawon ১০ নভেম্বর, ২০২২, ৬:৩৮ এএম says : 0
কিছুদিন পর পর সিঙ্গাপুর কে ছাড়িয়ে যাওয়া দেশ আইএমএফ কাছ থেক ঋণ নেবে সেটা বড্ড বেমানান!
Total Reply(0)
ফারজানা ইসলাম বুশরা ১০ নভেম্বর, ২০২২, ৬:৩৯ এএম says : 0
১৪ বছর ধরে উন্নয়নের রচনা মুখস্থ করতে করতে ঘুমিয়ে পড়ছিলাম, হঠাৎ পরীক্ষা দিতে এসে দেখি রচনার নাম "দুর্ভিক্ষ" লে.....
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন