মঙ্গলবার ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ০৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৬ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আন্তর্জাতিক সংবাদ

সম্ভাব্য অভিশংসনের হুমকিতে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট

অনলাইন ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১ ডিসেম্বর, ২০২২, ১২:০৮ পিএম

দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা সম্ভাব্য অভিশংসনের হুমকির সম্মুখীন হতে যাচ্ছেন। তাঁর বিরুদ্ধে উত্থাপিত ‘ফার্মগেট’ কেলেঙ্কারির কারণে তিনি অভিশংসনের মুখোমুখি হবেন বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি।
প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসার বিরুদ্ধে প্রায় ৪০ লাখ মার্কিন ডলার চুরির বিষয় ধামাচাপা দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। বিষয়টি ফার্মগেট কেলেঙ্কারি নামে পরিচিত। এ ছাড়া অপহরণ ও ঘুষের অভিযোগও রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। গতকাল বুধবার একটি স্বাধীন সংসদীয় প্যানেলের ফাঁস হওয়া প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, রামাফোসা তাঁর পদের অপব্যবহার করেছেন এবং দুর্নীতিবিরোধী আইন লঙ্ঘন করেছেন।
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসার। বলেছেন, তিনি কোনো অর্থ চুরি করেননি।
বিবিসি জানিয়েছে, প্যানেলের তদন্ত প্রতিবেদন সংসদে হস্তান্তর করা হয়েছে। প্রতিবেদনের ফলাফল পরীক্ষা করে আগামী সপ্তাহে অভিশংসন প্রক্রিয়া শুরু করা হবে কি না, সে ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে সংসদ।
২০২৪ সালে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে দক্ষিণ আফ্রিকায়। সেই নির্বাচনে রামাফোসা তাঁর দল আফ্রিকান ন্যাশনাল কংগ্রেস (এএনসি) থেকে দ্বিতীয় মেয়াদে প্রার্থী হতে পারবেন কি না, সে ব্যাপারে আগামী মাসে অনুষ্ঠিতব্য কংগ্রেসে সিদ্ধান্ত গৃহীত হওয়ার কথা রয়েছে। এই মুহূর্তে তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ উত্থাপন ও অভিশংসন রামাফোসার জন্য বিশেষভাবে ক্ষতি ডেকে আনবে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আগামী বৃহস্পতিবার এএনসির কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যরা বৈঠক করবেন। বৈঠকে রামাফোসার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসার বিরুদ্ধে ফার্মগেট কেলেঙ্কারির সূত্রপাত গত জুন মাসে। ওই সময় আর্থার ফ্রেজার নামের একজন সাবেক শীর্ষ গুপ্তচর প্রেসিডেন্ট রামাফোসার বিরুদ্ধে চুরি ধামাচাপা দেওয়ার অভিযোগ তুলেছিলেন। পুলিশের কাছে দায়ের করা অভিযোগে তিনি বলেছিলেন, রামাফোসা ২০২০ সালে ‘ফালা ফালা ফার্ম’ থেকে ৪০ লাখ ডলার চুরির বিষয়টি ধামাচাপা দিয়েছেন।
আর্থার ফ্রেজার দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক প্রেসিডেন্ট জ্যাকব জুমার ঘনিষ্ঠ মিত্র হিসেবে পরিচিত। তিনি আরও অভিযোগ করে বলেছেন, রামাফোসা অর্থ পাচার ও দুর্নীতির মাধ্যমে টাকা কামিয়েছেন। শুধু তাই নয়, তিনি চোরদের ঘুষ দিয়েছেন।
এত বড় অঙ্কের টাকা ডলারে রূপান্তর করে রাখা বৈদেশিক মুদ্রা নিয়ন্ত্রণ আইনের লঙ্ঘন বলেও অভিযোগ করেছেন আর্থার ফ্রেজার।
রামাফোসা অর্থ কেলেঙ্কারির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তবে যে পরিমাণ অর্থ চুরির অভিযোগ তোলা হয়েছে, তা সত্য নয়। চুরির পরিমাণ আরও কম বলে জানিয়েছেন তিনি। রামাফোসা অর্থ চুরির বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার অভিযোগও অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘মহিষ কেনা বাবদ এক ব্যক্তি ৫ লাখ ৮০ হাজার ডলার নগদ দিয়েছিলেন। সেই টাকা খামারবাড়ির সোফার কুশনের নিচে থেকে চুরি হয়ে গেছে।’
বার্তা সংস্থা এএফপিকে রামাফোসা বলেছেন, ‘হ্যাঁ, এটা ঠিক যে, চুরির ব্যাপারে তদন্ত করতে আমি কোনো নির্দেশ দিইনি।’
স্বাধীন সংসদীয় প্যানেলটি প্রতিবেদনের শেষে বলেছে, এই কেলেঙ্কারির পেছনে অনেক উত্তরহীন প্রশ্ন রয়েছে। বিষয়গুলো ‘খুব গুরুতর’। যে ব্যক্তি মহিষের জন্য টাকা দিয়েছিলেন, তার সম্পর্কে খুব বেশি তথ্য নেই। এমনকি টাকা দেওয়ার আড়াই বছর পরেও তিনি খামার থেকে মহিষ নেননি।
তদন্তকারী প্যানেলটি আরও বলেছে, এটি খুবই বিস্ময়কর ব্যাপার যে এতগুলো টাকা ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা না করে সোফার কুশনের নিচে রাখা হয়েছিল।
এদিক মার্কিন গণমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে, রামাফোসাকে প্রেসিডেন্ট পদ থেকে অপসারণ করা উচিত কি না- এ বিষয়য়ে আগামী সপ্তাহে শুনানি হবে। শুনানিতে সংসদ সদস্যদের দুই-তৃতীয়াংশ ভোট পড়লে রামাফোসাকে প্রেসিডেন্টের পদ থেকে অপসারণ করা হবে।
গতকাল বুধবার প্রেসিডেন্টে কার্যালয় থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, রামাফোসা তাঁর সাংবিধানিক শপথ লঙ্ঘন করার মতো কিছুই করেনি। সিরিল রামাফোসার ২০১৭ সাল থেকে দক্ষিণ আফ্রিকার ক্ষমতায় রয়েছেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন