কন্টেইনার ডিপো বলতে বাংলাদেশের মানুষের চোখের সামনে ভেসে ওঠে কদিন আগের এক বিভীষিকাময় এক অগ্নিকাÐ। তবে এই কন্টেইনার ডিপোই যে হয়ে উঠতে পারে একটি স্টেডিয়াম তারই জ¦লজ¦লে দৃষ্টান্ত দেখাল কাতার। দূর থেকে ঠিক স্টেডিয়াম মনে না হলেও বাস্তবতা তাই। চারদিকে কন্টেইনারের সারি। একটার পাশে আরেকটা, উপরে আরেকটা, সারি সারি সাজানো। সমুদ্র বন্দর এলাকায় যেমন দেখা যায়। কিন্তু এর ভেতরেই সবুজ আঙিনা। কন্টেইনারগুলো গ্যালারি, সেখানে চেয়ার পাতা, ফুটবলপ্রেমীদের বসার জায়গা। এখানে বসে তারা গলা ফাটান, নিজেদের দলকে অনুপ্রেরণা জোগান। কিন্তু সময় হয়েছে ‘স্টেডিয়াম ৯৭৪’ নামের এই মাঠটি শুধুই গল্পে হারিয়ে যাবার!
কাতার বিশ্বকাপে সাত ম্যাচের ভেন্যু ছিল এই স্টেডিয়াম। মেক্সিকো-পোল্যান্ড ড্র ম্যাচ দিয়ে শুরু, গতপরশু রাতে ব্রাজিল-দক্ষিণ কোরিয়া ম্যাচ দিয়ে শেষ। এবারের আসরে এখানে আর কোনো ম্যাচ হবে না। এই স্টেডিয়ামটিও ইতিহাসে থাকবে শুধু অস্তিত্বহীন নাম হয়ে। কাতার বিশ্বকাপের আটটি স্টেডিয়ামের মধ্যে এর নামটি বড়ই অদ্ভ‚ত। ল্সুাইল, আল জানোব কিংবা খলিফা ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়ামের মতো নাম নয় এটির। কাতারের ডায়ালিং কোড নম্বর হচ্ছে নাইন সেভেন ফোর। তার সাথে মিল রেখে ৯৭৪টি শিপিং কনটেইনার দিয়ে তৈরি বলে এই নাম স্টেডিয়াম ৯৭৪। ফিফা বিশ্বকাপের ইতিহাসে এই একমাত্র স্টেডিয়াম, যেটি পুরোপুরি অপসারণযোগ্য। মডিউলার স্টিল ও শিপিং কন্টেইনার দিয়ে তৈরির কারণেই বিশ্বকাপের শেষে সহজেই ভেঙে ফেলা যাবে এই স্টেডিয়াম। স্টেডিয়াম ভাঙার সময় যাতে দ‚ষণ না হয়, তা আলাদা ভাবনাও নিয়েছে কাতার প্রশাসন। বিশ্বকাপের পর এই কনটেইনারগুলো সরিয়ে ফেলা হবে, পুনরায় ব্যবহার করা হবে আগের কাজে।
এমন কথাও শোনা যাচ্ছে, যে দেশগুলি স্টেডিয়াম নির্মাণে অসমর্থ, চাইলে এর অংশগুলো তাদেরকে দিয়ে দেওয়া হবে। সেটা হলে হয়তো এশিয়ার নানা প্রান্তে ছড়িয়ে ছিটিয়ে যাবে এই কনটেইরারের টুকরোগুলো, হারিয়ে যাবে কালের ¯্রােতে। কিন্ত কিন্তু ইতিহাসে, ফুটবলপ্রেমীদের স্মৃতিতে, সাফল্য-ব্যর্থতার কাহনে গল্প হয়ে ঠিকই রয়ে যাবে ৪৪ হাজার দর্শক ধারণক্ষমতা সম্পন্ন এই মাঠ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন