‘বিংশ শতাব্দীর প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ গণহত্যা: পরিণাম, প্রতিরোধ ও ন্যায়বিচার’ শীর্ষক দুই দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক সম্মেলনের উদ্বোধন আজ শুক্রবার সকালে খুলনা জেলা শিল্পকলা একাডেমি অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় প্রতিমন্ত্রী বলেন, ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধকালীন নয় মাস এদেশের মানুষ পাকিস্তানি বাহিনীর দ্বারা নিদারুণ নির্যাতন ও নারকীয় হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছে। খুলনার চুকনগরে ইতিহাসের সর্ববৃহৎ গণহত্যা সংঘটিত হয়েছিলো। মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি বাহিনীর নির্যাতনক্যাম্পে নিজে আটক থাকার কথা স্মরণ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, মুক্তিযুদ্ধকালে দেশপ্রেমিক বাঙালিদের অমানুষিক নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে। ব্রহ্মপুত্র নদের পানিতে প্রতিদিন অসংখ্য নারী-পুরুষের লাশ ভেসে যেতে দেখেছি। বিজয়ের পর দেখা যায় ময়মনসিংহসহ সারাদেশের বধ্যভূমিগুলোতে হাজার হাজার মানুষের লাশ শেয়াল-শকুনে খাচ্ছে আর মানুষেরা তাদের হারানো স্বজনের লাশ খুঁজে ফিরছে। আজকের তরুণ প্রজন্ম যারা মুক্তিযুদ্ধ দেখেনি তাদের এই ইতিহাস জানাতে হবে। তিনি আরও বলেন, আমাদের প্রতিবেশী দেশ ভারত থেকে আজকের সম্মেলনে অনেকেই এসেছেন। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ভারতের সাহায্য ও সহযোগিতার কথা আমরা ভুলিনি। ভারত আমাদের এক কোটি মানুষকে আশ্রয় দিয়েছিলো এবং দেশ স্বাধীন হওয়ার পরে পাকিস্তানের কারাগার হতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মুক্তির জন্য ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর অবদান ছিলো।
গণহত্যা-নির্যাতন ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গবেষণা কেন্দ্র এবং ইতিহাস সম্মিলনীর উদ্যোগে আয়োজিত আন্তর্জাতিক সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ১৯৭১: গণহত্যা-নির্যাতন আর্কাইভ ও জাদুঘর ট্রাস্টের সভাপতি অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন। অনুষ্ঠানে স্বাগত জানান সম্মেলন আয়োজক কমিটির আহবায়ক অধ্যাপক মোঃ মাহবুবর রহমান। শুভেচ্ছা বক্তৃতা করেন ভারতের জহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সঞ্জয় কে ভরদ্বাজ। দুই দিনব্যাপী সম্মেলনের চারটি অধিবেশনে দেশ-বিদেশের ২০ জন গবেষক ও বিশেষজ্ঞ বাংলাদেশ, মুক্তিযুদ্ধ, গণহত্যা ও বঙ্গবন্ধুর ওপর প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন