পূর্বাচলের ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার স্থায়ী প্যাভিলিয়নে ২য় আসরের ৮ম দিনে ফের কমেছে বেচাকেনা। এদিন ছুটির দিন না থাকায় এমনটা জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। তবে গতকাল রোববার দুপুরে জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরিন শারমীন চৌধুরী মেলা পরিদর্শনে আসায় আনন্দঘন পরিবেশ বিরাজ করতে দেখা গেছে। এ সময় মেলার আয়োজনে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। পরিবারের সদস্যদের নিয়ে স্টল ঘুরে কেনাকাটাও করেছেন তিনি। এর আগে সরকারী ছুটির দিন শুক্রবার ও শনিবার বিপুল পরিমাণ দর্শনার্থী থাকলেও রোববার ফের কমে গেছে বেচাকেনা ।
গতকাল মেলার ঘুরে দেখা যায়, দুপুরে জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরিন শারমীন চৌধুরী স্বপরিবারে মেলা পরিদর্শনের ফলে নিরাপত্তাজনিত পরিবেশ বিরাজ করে। মেলায় দায়িত্বরত আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ছাড়াও রূপগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার এএফএম সায়েদের নেতৃত্বে অতিরিক্ত সদস্যার স্পিকারকে নিরাপত্তা দিতে কাজ করতে দেখা গেছে।
মেলার পরিচালক ও রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর সচিব ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী বলেন, পূর্বাচলে স্থায়ী এক্সিবিশন সেন্টারে (বিবিসিএফইসি) স্পিকার ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা ঘুরে দেখেছেন। প্রথমে বঙ্গবন্ধু গ্যালারী পরে মেলার স্টল থেকে কুটির শিল্পের কিছু তৈজস ও শীতের কাপড়, কাঞ্চনের তাঁতীদের তৈরি শাল ক্রয় করেন। এ সময় মেলার সার্বিক পরিবেশ দেখে সন্তোষ প্রকাশ করেন তিনি।
এদিকে বাণিজ্যমেলার ৮ম দিনে অব্যাহত শৈত্য প্রবাহের কারণে তেমন জমে ওঠেনি। তবে শুক্রবার ও শনিবার মেলায় প্রায় ৩ লাখের অধিক দর্শনার্থী হয়েছিলো বলে জানিয়েছেন আয়োজকরা। সেদিন বেচাকেনাও হয়েছে বেশ। কিন্তু রোববার ফের কমে গেছে দর্শনার্থীর সংখ্যা। ফলে কমে যায় বেচাকেনাও। তারা অপেক্ষায় থাকেন পূনরায় সরকারি ছুটির দিনের।
কথা হয়, মেলায় স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে দায়িত্বরত ও রূপগঞ্জ ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি আব্দুল আজিজের সঙ্গে। তিনি বলেন, মেলার সরকারী ছুটির দিনে জমে বেশি। আর সাধারণ দিনে কিছুটা কম। তবে বিকাল হলে বাড়তে থাকে দর্শনার্থী। এবার করোনার বিধি নিষেধ না থাকায় গতবারের তুলনায় দর্শনার্থী হবে বহুগুণ বেশি।
মেলার আগত দর্শনার্থী হানকুর এলাকার বাসিন্দা নাছিম মোল্লাহ বলেন, পূর্বাচলে দ্বিতীয়বারের মতো বাণিজ্যমেলা শুরু হলো। প্রথমবার যখন এখানে বাণিজ্যমেলা হয়, করোনার বিধিনিষেধের কারণে তেমন না জমলেও এবার জমে উঠতে শুরু করেছে। তবে মেলার সব পণ্যের দাম রাখা হচ্ছে বেশি। যা সাধারণ ক্রেতার জন্য স্বস্তিদায়ক নয়।
সূত্রমতে, এবার মেলায় সাধারণ, প্রিমিয়াম, সংরক্ষিত, ফুড স্টল ও রেস্তোরসহ ১৩ ক্যাটাগরিতে স্টল রয়েছে। এছাড়া মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস জানতে রয়েছে বঙ্গবন্ধু প্যাভিলিয়ন। দেশি-বিদেশি মিলে মেলায় মোট ৩৫১টি স্টল, প্যাভিলিয়ন, মিনি প্যাভিলিয়ন রয়েছে। গতবার এই সংখ্যা ছিল ২২৫টি।
দেশি প্রতিষ্ঠান ছাড়াও সিঙ্গাপুর, ইন্দোনেশিয়া, কোরিয়া, ভারতসহ ১০টি বিদেশি রাষ্ট্রের ১৭টি প্রতিষ্ঠান মেলায় অংশ নিয়েছে। এছাড়া গতবার শিশুপার্ক ছিল না, এবার মিনি শিশুপার্ক রয়েছে। যদিও এটি বেসরকারি উদ্যোগে।
এদিকে ট্রাফিকের দায়িত্বরত এটিএসআই নাজমুল ইসলাম বলেন, মেলাকে ঘিরে ঢাকা বাইপাস সড়কের যানজট তৈরি হয়। এসব নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যস্ত সময় পার করছি। রাজধানী থেকে আসা দর্শনার্থীরা সহজে যাতায়াত করতে পারছেন কিন্তু ঢাকা বাইপাসে কাজ চলমান থাকায় কিছুটা সমস্যা তৈরী হচ্ছে। আর বাণিজ্য মেলার অবস্থান এ সড়কের পাশেই।
মেলায় প্রবেশদ্বার ইজারাদার কর্তৃপক্ষ মাসুম চৌধুরী অপু বলেন, মেলা উপলক্ষে কুড়িল থেকে মেলার ভেন্যু পর্যন্ত যাত্রীদের আনা-নেওয়ার জন্য ৫০টি শাটল বাস চালু করেছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন করপোরেশন। বাসের ভাড়া যাত্রীপ্রতি ৩৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। বিকাশের মাধ্যমে ভাড়া পরিশোধ করলে যাত্রীরা ৫০ শতাংশ ছাড়ও পাবেন। এবার মেলায় প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য ৪০ টাকা এবং অপ্রাপ্তবয়স্কদের জন্য ২০ টাকা প্রবেশ মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও প্রতিবন্ধীদের জন্য প্রবেশ মূল্য ফ্রি। মেলা খোলা থাকবে সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত। তবে ছুটির দিনে এক ঘণ্টা বাড়িয়ে সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। এছাড়া মেলায় প্রায় ১ হাজার গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা রাখা রয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন