মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪, ৩১ বৈশাখ ১৪৩১, ০৫ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

খেলাধুলা

হৃদয় জিতেই চলেছেন তৌহিদ

উত্তেজনার ম্যাচ জিতল বরিশাল

স্পোর্টস রিপোর্টার, মিরপুর থেকে | প্রকাশের সময় : ১১ জানুয়ারি, ২০২৩, ১২:০০ এএম

বিপিএল মানেই মাঠের বাহিরের বিতর্ক এবং উত্তেজনা। গতকালও তার ব্যতিক্রম ঘটল না। দিনের প্রথম খেলার দ্বিতীয় ইনিংসে কোন বোলারের বিপক্ষে কোন ব্যাটসম্যান স্ট্রাইক নিবেন তা নিয়ে সৃষ্টি হল লজ্জাজনক নাটক, যার জের ধরে মাঠে ঢুকে গেলেন ফরচুন বরিশাল অধিনায়ক সাকিব আল হাসান! তবে মাঠের খেলায় কিন্তু সেই উত্তাপ ছড়াতে পারলেন না কোন দলের ক্রিকেটারই। রংপুর রাইডার্সের ৭ উইকেটের বিনিময়ে তোলা ১৫৮ রানের চ্যালেঞ্জ বরিশাল পেরিয়ে যায় ৬ উইকেট ও ৪ বল হাতে রেখেই। এই রান তারা সহজ হয়ে যায় আসরে প্রথম খেলতে নামা ইব্রাহিম জাদরানের অর্ধশতকের কল্যাণে, তবে ২ উইকেটের সঙ্গে ব্যাট হাতে ৪৩ রান করা মেহেদি হাসান মিরাজ জেতেন ম্যাচসেরার পুরষ্কার।
মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে গতকাল টসে জিতে যথারীতি ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন সাকিব। বল হাতে ইনিংসের প্রথম বলেই নাঈম শেখের উইকেট নিয়ে নিজের সিদ্ধান্তের যথার্ততা প্রমাণ করেন এই অলরাউন্ডার। রংপুরের এক প্রান্তে যেমন উইকেট যাচ্ছিল আরেক প্রান্তে ঠিকই রানের চাকা ঘোরাচ্ছিলেন প্রথম ইনিংসেও দারুণ খেলা রনি তালুকদার। এই ডানহাতি ব্যাটার ২৮ বলে ৪০ রান করেন। তবে তিনি যখন নবম ওভারে চতুরঙ্গের বলে ফেরেন তখন দলীয় ৭৬ রানে চার উইকেট নেই তাদের। সেখান থেকে শোয়েব মালিকের সর্বোচ্চ ৫৪ রানের সুবাদে ১৫৮ রানের পুঁজি পায় রংপুর। টি-টোয়েন্টিতে এই পাকিস্তানি ব্যাটারের ৭৪তম ফিফটি ইনিংসে ছিল ৫টি বাউন্ডারির সঙ্গে ২টি ছক্কার মার। আগের ম্যাচে ১৯ বলে হাফ সেঞ্চুরি করে হইচই ফেলে দিয়েছিলেন তিনি। মিরাজ ছাড়াও ২ উইকেট নিয়েছেন চতুরঙ্গ।
বরিশালের রান তাড়ার শুরুতেই বাধে বিপত্তি। প্রথম ওভারে বাঁহাতি স্পিনার রাকিবুল হাসানকে বল হাতে দেখে স্ট্রাইকে যান বরিশালের বাঁহাতি ওপেনার চতুরঙ্গ ডি সিলভা। রংপুর অধিনায়ক নুরুল হাসান সোহান তখন রকিবুলকে সরিয়ে বোলিংয়ে আনেন অফ স্পিনার মেহেদি হাসানকে। এটি দেখে সাকিব ড্রেসিং রুম থেকে বেয়ে ইশারায় স্ট্রাইকে যেতে বলেন ডানহাতি ওপেনার এনামুল হককে। এসব নিয়েই এক পর্যায়ে সাকিব ঢুকে যান মাঠে। আম্পায়ারদের সঙ্গে তর্ক করতে দেখা যায় তাকে।
সব নাটকীয়তার পর খেলা শুরু হলে চতুরঙ্গ ফিরে যান কেবল ১ রানে। এনামুল হক বিজয় ফেরেন দলীয় ১৮ রানে। জাদরান এবং মিরাজের ৮৪ রানের জুটিই বরিশালকে জয়ের পথ দেখায়। মিরাজ আউট হওয়ার পর ৫২ রান করা জাদরানও বেশিক্ষণ থাকেননি। এ সময় দলীয় রান ছিল ১২৪ । যথাক্রমে ২৫ ও ২১ রান করে বরিশালকে নিরাপদে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেন ইফতিখার আহমেদ এবং করিম জানাত। রংপুরের হয়ে সিকান্দার রাজা নেন ২ উইকেট। ১টি করে উইকেট নেন রাকিবুল হাসান এবং রবিউল হক।
ম্যাচ শেষে রংপুর কাপ্তান নুরুল হাসান সোহান সম্মেলন কক্ষে প্রবেশের পূর্বে জেনে নিলেন বরিশালের পক্ষ থেকে আসা মিরাজ কি বলেছেন। সাকিব ইস্যু যে ঘুরেফিরে আসবেই, সে জন্য সোহানের মানসিক প্রস্তুত্তি। সোহান জানান, ‘সাকিব ভাইয়ের সঙ্গে যখন আম্পায়ারের তর্কাতর্কি হয়েছে, তখন তো আমি অন্যদিকে ছিলাম। কী কথা হয়েছে, আমি জানি না।’ বারবার বোলার বদলানোর ব্যাখ্যায় বলেন, ‘সাকিব ভাই বাইরে থেকে যখন চিল্লাচ্ছিলেন, আমিও বোলার বদলাচ্ছিলাম। আমি চাইছিলাম বাঁহাতির বিপক্ষে মেহেদী আর ডানহাতির বিপক্ষে রকিবুল বল করুক। আম্পায়ার তো কিছু বলেননি। ওনারা কথা বললে আরেকটু আগে সমাধান হতাম।’ মিরাজও বলে গিয়েছিলেন, ‘ওরাও বোলার বদলে সুবিধা নিতে চাইছিল। হয়তো দুষ্টামি করছিল সোহান ভাই।’
অন্যদিকে দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে নায়কের স্থানে আবারও সেই তৌহিদ হৃদয়। আগের দুই ম্যাচে দুর্দান্ত ব্যাটিং করে জিতিয়েছিলেন সিলেট স্ট্রাইকার্সকে। এদিনও ব্যাট হাতে দুর্বার তিনি। আগের দুই ম্যাচে রান তাড়া করতে গিয়ে খেলেছেন ৫৫ এবং ৫৬ রানের দুটি ক্যামিও ইনিংস। গতরাতে ব্যাট করতে নেমে ৫টি করে চার ও ছক্কার মারে খেললেন ৪৬ বলে ৮৪ রানের এক টর্নেডো। অর্ধশতকে পৌঁছান ৩২ বলে। ওপেনার নাজমুল হোসেন শান্ত করেছেন কার্যকরী ৫৪ রান। এই দুজনের ৮৮ রানের জুটির সুবাদে এবারের বিপিএলে প্রথম দুইশোর্ধ্বো রান গড়লো সিলেট স্ট্রাইকার্স। টসে জিতে সিলেটকে ব্যাটিংয়ে পাঠান ঢাকা ডমিনেটর্সের কাপ্তান নাসির হোসেন। শিশিরের সুবিধা নিয়ে ৮ উইকেট হারিয়ে ২০১ রান করে মাশরাফি বিন মর্তুজার সিলেট স্ট্রাইকার্স। জয়ের জন্য ২০২ রান করতে হতো ঢাকাকে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন