শুরুতে ঝড় তুলে ‘রান হবে’র উদ্বোধনটা করলেন মেহেদী হাসান মিরাজ। ফরচুন বরিশালের হয়ে নতুন চমক জাগিয়ে টি-টোয়েন্টিতে ফের ওপেনিংয়ে নেমে খেললেন মাত্র ১১ বল খেলে ৩টি চার ও এক ছক্কায় খেললেন ২৪ রানের ছোট্ট ক্যামিও। পরে থিতু হবার আগেই অধিনায়ক সাকিব আল হাসানকে হারিয়ে ব্যাকফুটে যাওয়া দলটিকে ইব্রহিম জাদরানকে নিয়ে পথ দেখালেন আনামুল হক বিজয়। তাদের সেই দেখানো পথে শেষ পর্যন্ত চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের বোলারদের উপর তাণ্ডব চালালেন ইফতিখার আহমেদ। তার ২৬ বলে অপরাজিত ফিফটিতে রানপাহাড়ে চড়ে বরিশাল।
২০৩ রানের বিশাল লক্ষ্য তাড়ায় এক প্রান্তে ঝড় তুলে স্বাগতিকদের আশা জিইয়ে রেখেছিলেন জিয়াউর রহমান। কিন্তু অন্য প্রান্তে সতীর্থদের কাছ থেকে সে অর্থে সমর্থন পেলেন না এ ব্যাটার। তাতে ঘরের মাঠে শুরুটা ভালো হলো চ্যালেঞ্জার্সের। তাদের হারিয়ে টানা দ্বিতীয় জয় তুলে নিয়েছে সাকিবের বরিশাল। গতকাল চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে দিনের প্রথম ম্যাচে স্বাগতিক চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সকে ২৬ রানের ব্যবধানে হারিয়েছে ফরচুন বরিশাল। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ২০২ রান করে তারা। জবাবে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৪ উইকেটে ১৭৬ রানের বেশি করতে পারেনি স্বাগতিক দলটি। তাতে এই শীতেও সাগরিকা মাতাতে আসা প্রায় হাজার বারো দর্শক চট্টগ্রাম পর্বের শুরুতেই হলেন রানবন্যার সাক্ষী।
লক্ষ্য তাড়ায় শুরুটা ভালো করলেও মাঝে রানের গতি বাড়াতে পারেনি চট্টগ্রাম। তাতেই মূলত পিছিয়ে যায় দলটি। এক পর্যায়ে শেষ তিন ওভারে জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ৭২ রানের। ১৮তম ওভারের শুরুতেই আউট হয়ে যান আফিফ হোসেন। সে ওভারের শেষ তিন বলে টানা তিনটি বাউন্ডারি মারেন জিয়া। পরের ওভারের শেষ তিন বলেও মারেন তিনটি বাউন্ডারি। তাতে শেষ ওভারে প্রয়োজন ছিল ৩৬ রানের। কিন্তু সে ওভারে ৯ রানের বেশি আসেনি।
তবে আগের ম্যাচের জয়ের নায়ক উসমান খানকে নিয়ে শুরুটা ভালোই করেছিলেন ম্যাক্স ও’ডড। ৪৮ রানের ওপেনিং জুটি গড়েন এ দুই ব্যাটার। আগের দিনের মতোই ঝড়ো ব্যাটিংয়ে ভালো শুরু করেছিলেন উসমান। ৩টি করে চার ও ছক্কায় ১৯ বলে ৩৬ রান করে করে কভার পয়েন্টে সানজামুল ইসলামের দারুণ ক্যাচের শিকার হয়ে সাজঘরে ফেরেন এ পাক ব্যাটার। এরপর আরেক ওপেনার ও’ডডকে নিয়ে দলের হাল ধরেন উন্মুখ চাঁদ। এ দুই ব্যাটার দ্বিতীয় উইকেটে যোগ করেন ৩৩ রান। ও’ডয়েডকে ফিরিয়ে এ জুটি ভাঙেন সাকিব। আর উন্মুখকে বোল্ড করে দেন করিম জানাত। এরপর আফিফ হোসেনের সঙ্গে ৪২ রানের জুটি গড়েন জিয়া। আর পঞ্চম উইকেটে শুভাগত হোমের সঙ্গে গড়েন ৩৬ রানের জুটি। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৪৭ রানের ইনিংস খেলেন জিয়া। ২৫ বলে ৩টি চার ও ৪টি ছক্কায় এ রান করেন তিনি। এছাড়া ও’ডয়েড ২৯ ও আফিফ ২৮ রান করেন।
এর আগে টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নামে বরিশাল। চতুরঙ্গ ডি সিলভার জায়গায় এদিন ওপেনিংয়ে নামেন মেহেদী হাসান মিরাজ। এনামুল হক বিজয়ের সঙ্গে ৩৩ রানের জুটি গড়ে এ অলরাউন্ডার আউট হন তাইজুল ইসলামের বলে। তিন নেমে প্রথম দুই বলেই বাউন্ডারি মেরে শুরু করেছিলেন সাকিব। তবে তৃতীয় বলে মৃত্যুঞ্জয়ের বলে বোল্ড হয়ে যান অধিনায়ক। এরপর খুব বেশি টিকতে পারেননি আরেক ওপেনার বিজয়। লংঅনে ক্যাচ দিয়ে আসার আগে খেলেন ৩০ রানের ইনিংস। এরপর অভিজ্ঞ মাহমুদউল্লাহকে নিয়ে দলের হাল ধরেন ইব্রাহীম জাদরান। চতুর্থ উইকেটে ৪৯ রানের জুটি গড়েন এ দুই ব্যাটার। মাহমুদউল্লাহকে ফিরিয়ে এ জুটি ভাঙেন জিয়াউর রহমান। আর ইব্রাহীমকে ফেরান আবু জায়েদ রাহী। তবে এক প্রান্ত আগলে রেখে দলকে এগিয়ে নিয়ে যেতে থাকেন ইফতেখার আহমেদ। অষ্টম উইকেটে কামরুল ইসলাম রাব্বিকে নিয়ে গড়েন ৩৪ রানের জুটি। যেখানে রাব্বির অবদান মাত্র ২ রান।
ঝড়ো ব্যাটিংয়ে দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৫৭ রানের ইনিংস খেলে অপরাজিত থাকেন ইফতেখার। ২৬ বলে ৩টি চার ও ৫টি ছক্কায় নিজের ইনিংস সাজান এ পাক ব্যাটার। ৩৩ বলে ৪টি চার ও ৩টি ছক্কায় ৪৮ রানের ইনিংস খেলেন ইব্রাহীম। এছাড়া মাহমুদউল্লাহর ব্যাট থেকে আসে ২ রান। চট্টগ্রামের পক্ষে ৪৯ রানের খরচায় ৩টি উইকেট নিয়েছেন রাহী।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন