ঢাকা পর্বে টানা চার দিনে চারটি ম্যাচ খেলে চারটিতেই জয় তুলে নিয়েছিল সিলেট স্ট্রাইকার্স। তবে চট্টগ্রাম পর্বে মাঠে নামার আগে পাঁচ দিনের দিনের বিরতি। তাতে ছন্দ না হারানোর শঙ্কা তো ছিলই। তবে তেমন কিছুই হয়নি। বন্দর নাগরীতেও শুভ সূচনা হয়েছে তাদের। জমজমাট লড়াইয়ে ঢাকা ডমিনেটর্সকে হারিয়ে টানা পঞ্চম জয় তুলে নিয়েছে মাশরাফি বিন মুর্তজার দল। গতকাল চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে দিনের প্রথম ম্যাচে ঢাকা ডমিনেটর্সকে ৫ উইকেটে হারিয়েছে সিলেট স্ট্রাইকার্স। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ১২৮ রান তোলে ঢাকা। জবাবে ৪ বল হাতে রেখেই জয় তুলে নেয় সিলেট। ম্যাচের শুরুটা এক পেশে হলেও শেষ দিকে ম্যাচ জমিয়ে দিয়েছিলেন ঢাকার বোলাররা। এক পর্যায়ে জয়ের জন্য শেষ দুই ওভারে প্রয়োজন ছিল ২০ রানের। কিন্তু সে সময় পাকিস্তানি পেসার সালমান ইরশাদ এক ওভারেই দেন ১৮ রান। ফলে হারতেই হয় ঢাকাকে। প্রথম ম্যাচে জয়ের পর টানা তৃতীয় হার দেখে দলটি।
লক্ষ্য তাড়ায় এদিন শুরুটা দারুণ করে সিলেট। ৫২ রানের ওপেনিং জুটি গড়েন দুই ওপেনার মোহাম্মদ হারিস ও নাজমুল হোসেন শান্ত। তবে নবম ওভারে বল হাতে নিয়েই সিলেট শিবিরে জোড়া ধাক্কা দেন অধিনায়ক নাসির হোসেন। প্রথম বলে শান্তকে ফিরিয়ে ভাঙেন জুটি। শেষ ওভারের শেষ বলে ফেরান জাকির হোসেনকে। পরের ওভারের প্রথম বলে আরেক ওপেনার মোহাম্মদ হারিসকে স্টাম্পিংয়ের ফাঁদে ফেলেন আরাফাত সানি। তাতে দারুণভাবে ম্যাচে এরে ঢাকা। সানির পরের ওভারের প্রথম বলে মুশফিকুর রহিমের বিরুদ্ধে নেওয়া রিভিউর সিদ্ধান্ত পক্ষে গেলে ম্যাচের পরিস্থিতি সম্পূর্ণই পাল্টে হেতে পারতো। তার ফ্লাইটেড ডেলিভারিটি এগিয়ে এসে খেলতে চেয়েছিলেন মুশফিক। বল করলে লাগে প্যাডে। রিপ্লেতে দেখা যায় লেগ স্টাম্পে ছিল ইমপ্যাক্ট। বল স্টাম্প মিস করতো কি-না স্পষ্ট বোঝা না গেলে ব্যাটারের পক্ষেই থাকে সিদ্ধান্ত।
পাকিস্তানি অলরাউন্ডার ওয়াসিমকে নিয়ে ৩২ রানের জুটি গড়েন মুশফিক। ইমাদ রান আউটে কাটা পড়লে ভাঙে এ জুটি। অবশ্য ডাইভ দিলে হয়তো বাঁচতে পারতেন। কিন্তু সে চেষ্টায় করেননি। তাতে কিছুটা হলেও চাপে পড়ে যায় সিলেট। সে চাপ আরও বাড়িয়ে দেন মুশফিক। তাসকিন আহমেদের দুর্দান্ত এক ইয়র্কারে বোল্ড হয়ে যান এ উইকেটরক্ষক-ব্যাটার। তাতে জমে ওঠে লড়াই। কিন্তু এরপর থিসারা পেরেরা ও আকবর আলীর আগ্রাসনে শেষ রক্ষা করতে পারেনি ঢাকা। সিলেটের পক্ষে সর্বোচ্চ ৪৪ রানের ইনিংস খেলেন হারিস। ৩২ বলে ৫টি চার ও ২টি ছক্কায় এ রান করেন তিনি। ২৭ রান আসে মুশফিকের ব্যাট থেকে। ১১ বলে ২টি চার ও ১টি ছক্কায় ২১ রান করে অপরাজিত থাকেন থিসারা। ঢাকা পক্ষে ১৯ রানের খরচায় ১৯ রান করেন নাসির।
এর আগে টস জিতে প্রথমে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় ঢাকা। তবে শুরুটা ভালো হয়নি। রুবেল হোসেনের বলে এলবিডাব্লিউর ফাঁদে পড়ে খালি হাতে ফেরেন সৌম্য সরকার। এরপর দিলশান মুনাবিরাকে নিয়ে দলের হাল ধরেন উসমান গনি। ৩১ রানের জুটিতে প্রাথমিক চাপ সামলে নেওয়ার চেষ্টা করেন তারা। তবে ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠার আগেই এ জুটি ভাঙেন ইমাদ ওয়াসিম। মুনাবিরাকে কভার-পয়েন্টে আকবর আলীর ক্যাচে পরিণত করেন। এর পরের বলে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ইংলিশ ক্রিকেটার রবিন দাসকে বোল্ড করে হ্যাটট্রিকের সুযোগ তৈরি করেছিলেন তিনি ইমাদ। তবে এর পরের বলটি সহজেই সামলে নেন মোহাম্মদ মিঠুন। এরপর অবশ্য খুব বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি আরেক ওপেনার উসমানও। দলীয় ৫১ রানে নাজমুল ইসলাম অপুর বলে বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফিরলে বড় চাপে পড়ে যায় দলটি। তবে এক প্রান্ত আগলে রেখে দলকে এগিয়ে নিয়ে যেতে থাকেন অধিনায়ক নাসির হোসেন। আরিফুল হকের সঙ্গে গড়েন ৫০ রানের জুটি। তাতেই লড়াইয়ের পুঁজি পায় দলটি। ইনিংসের শেষ বলে রানআউট হওয়ার আগে দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৩৯ রানের ইনিংস খেলেন নাসির। ৩১ বলে ৩টি চার ও ১টি ছক্কায় এ রান করেন তিনি। এছাড়া উসমান ২৭ ও আরিফুল ২০ রান করেন। লো স্কোরিং ম্যাচে সিলেটের পক্ষে ২০ রানের খরচায় ৩টি উইকেট নেয়া ইমাদ হন ম্যাচসেরা।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন