রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আন্তর্জাতিক সংবাদ

‘আজাদ কাশ্মীর’‍ নিয়ে প্রশ্ন! বিতর্কে ভারতের মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৭ জানুয়ারি, ২০২৩, ৭:৫৪ পিএম

মাধ্যমিকের টেস্ট পেপারে ইতিহাসের প্রশ্নপত্রে ‘আজাদ কাশ্মীর’! পশ্চিমবঙ্গের মালদহের স্কুলের প্রশ্ন ঘিরে তুঙ্গে বিতর্ক। এদিকে এই ঘটনায় সরকারি পাঠ্যপুস্তকের দিকেই কার্যত বল ঠেলে দিল মালদহের রামকৃষ্ণ মিশন বিবেকানন্দ বিদ্যামন্দির কর্তৃপক্ষ।

মঙ্গলবার ওই বিদ্যামন্দিরের প্রধান শিক্ষক স্বামী তপহারানন্দ মহারাজ বলেন, ‘ইতিহাস পাঠ্যপুস্তকে আজাদ কাশ্মীর বিষয়টির উল্লেখ রয়েছে। সেই সরকারি পাঠ্যপুস্তক থেকেই মানচিত্রে জায়গাটি চিহ্নিত করতে বলা হয়েছে।’ ঘোলা পানিতে মাছ ধরার চেষ্টা চালাচ্ছে বিজেপিও। বিতর্ক উসকে কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সুভাষ সরকার বলেন, ‘রাজ্য সরকারের একটা তোষণ মনোবৃত্তি আছে। এটা তারই ন্যারেটিভ হয়তো।’ যদিও মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের স্পষ্ট বার্তা, কারওর ভাবাবেগকে আঘাত করা হয়নি। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। বোর্ডের নিয়ম মেনে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

মাধ্যমিকের টেস্ট পেপারের ১৩২ নম্বর পৃষ্ঠায় একটি প্রশ্নের উত্তরের চারটি অপশনের মধ্যে ‘আজাদ কাশ্মীর’ শব্দটি লেখা হয়েছে। আর তা নিয়েই শুরু হয়েছে বিতর্ক। মাধ্যমিকের টেস্ট পেপারের ১৩২ নম্বর পৃষ্ঠায় বিভাগ ‘খ’-এর উপ-বিভাগ ২.৪-এর প্রথম প্রশ্নটি হল, প্রদত্ত ভারতবর্ষের রেখা মানচিত্রে নিম্নলিখিত স্থানগুলো চিহ্নিত বা নামাঙ্কিত কর। প্রশ্নের ৪টি উত্তরের প্রথমটিতে উত্তর হিসাবে ‘আজাদ কাশ্মীর’ বলা হয়েছে। সরকারি টেস্ট পেপারে কেন এই বিতর্কিত ‘আজাদ কাশ্মীরে’র উল্লেখ? এনিয়েই শোরগোল পড়ে যায় মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডে।

রাজ্যের বিভিন্ন স্কুল থেকে সংগৃহীত প্রশ্নপত্রগুলি নিয়ে টেস্ট পেপার ছাপা হয়। ইতিহাসের এই প্রশ্ন নিয়ে বিতর্ক উঠতেই কোন্ স্কুলের প্রশ্নপত্র তা জানতে শুরু হয় তদন্ত। বোর্ড সূত্রে জানা যায়, স্কুলটিকে শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে। ওই প্রশ্নপত্রটি মালদহের রামকৃষ্ণ মিশন বিবেকানন্দ বিদ্যামন্দিরের। এরপরই মালদহের সেই স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ থেকে যোগাযোগ করা হয়।

মালদহের রামকৃষ্ণ মিশন বিবেকানন্দ বিদ্যামন্দিরের প্রধান শিক্ষক স্বামী তপহারানন্দ মহারাজ বলেন, ‘আমাদের প্রশ্নপত্র নিয়ে একটা বিতর্ক হয়েছে। যিনি প্রশ্নপত্রটি করেছেন তার সঙ্গে আমরা কথা বলেছি। তিনি যেটা বলেছেন, সেটাই আমি বলছি। এখানে বইতে যে তথ্য রয়েছে সেই তথ্যই প্রশ্নপত্রে তুলে ধরা হয়েছে। যে প্রশ্নটা নিয়ে বিতর্ক হচ্ছে, সেটি ইতিহাসের একটা অংশ। সিলেবাস থেকেই প্রশ্ন তুলে ধরা হয়েছে। সরকারি বইতে ওরকম ধরনের উল্লেখ আছে। পরীক্ষায় ম্যাপ পয়েন্টিং থাকে। সেখানে এমন একটা জায়গা চিহ্নিত করা হয়েছে, সেই জায়গাটাকে ভারত সরকার স্বীকৃতি দেয় না। ‘আজাদ কাশ্মীর’টা কিন্তু পাঠ্যপুস্তক থেকেই উল্লেখ করা হয়েছে।’

প্রধান শিক্ষক বলেন, ‘মাস দেড়েক আগে ইতিহাসের টেস্ট পরীক্ষা হয়েছে। বোর্ড থেকে ফোন এসেছিল। প্রশ্নপত্রটা দেখতে চেয়েছেন। আমরা সেই প্রশ্নপত্রটি পাঠিয়ে দিয়েছি।’ বোর্ডের সভাপতি রামানুজ গঙ্গোপাধ্যায় জানান, যারা টেস্ট পেপার তৈরি করেন, ‘তাদের বলেছি বিষয়টি খতিয়ে দেখতে। তবে কোনও স্কুলের স্বায়ত্বশাসনে আমরা হস্তক্ষেপ করি না। এক্ষেত্রেও তাই হচ্ছে।’

এই ইস্যুতে ইতিমধ্যে রাজনৈতিক কাদা ছোড়াছুড়ি শুরু হয়ে গিয়েছে। কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী তথা বিজেপি সাংসদ সুভাষ সরকার বলেন, ‘রাজ্য সরকারের একটা তোষণ মনোবৃত্তি আছে। এটা তারই ন্যারেটিভ হয়তো। নাহলে ভারত সরকারে যাকে স্বীকৃতি দেয় না, সেই আজাদ কাশ্মীর কেন বইতে জায়গা পাবে?’ সূত্র: টাইমস নাউ।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন