দেশজুড়ে আলোচিত কুষ্টিয়ায় বঙ্গবন্ধুর নির্মাণাধীন ভাস্কর্য ভাঙচুর ঘটনায় দায়ের করা মামলা থেকে আসামি ইউসুফ আলী (২৮) ও আল আমিনকে (২৮) অব্যাহতি দিয়েছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (১৯ জানুয়ারি) বিকালে কুষ্টিয়া জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক শেখ আবু তাহের এ রায় দেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) অনুপ কুমার নন্দী।
খালাসপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন - কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার ধুবইল গ্রামের আব্দুর রহমানের ছেলে আল আমীন (২৭) এবং পাবনার দিয়াড় বামুন্দি গ্রামের আজিজুল মন্ডলের ছেলে ইউসুফ আলী (২৭)। তারা দুজন কুষ্টিয়ার জুগিয়া এলাকার মাদ্রাসা ইবনে মাসউদ মাদ্রাসার শিক্ষক ছিলেন। রায় ঘোষণার সময় তারা আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
এঘটনায় মিঠুন (২০) ও নাহিদ (২১) নামে দুই আসামি কারাগারে রয়েছেন। কুষ্টিয়া শিশু আদালতে বর্তমানে বিচারাধীন রয়েছে। তারা একই মাদ্রাসার হেফজ বিভাগের ছাত্র ও কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার শিংপুর গ্রামের মো. আবু বক্কর ওরফে মিঠুন এবং জেলার দৌলতপুর উপজেলার ফিলিপনগর (গোলাবাড়িয়া) এলাকার সবুজ ইসলাম ওরফে নাহিদ। সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে দুজনকে শনাক্ত করা হয়। পরে অভিযান চালিয়ে মাদ্রাসা থেকে তাদের আটক করা হয়েছিল।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০২১ সালের ৪ ডিসেম্বর রাতে কুষ্টিয়া শহরের পাঁচ রাস্তার মোড়ে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্মাণাধীন ভাস্কর্য ভাঙচুর করা হয়। পরদিন কুষ্টিয়া পৌরসভার সচিব কামাল উদ্দীন কুষ্টিয়া মডেল থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা করেন।
এ ঘটনায় ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনের ১৫(৩) ধারা এবং দণ্ডবিধির ৪২৭/৩৪ ধারার মামলায় চার জনকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করে রিমান্ড আবেদন করা হয়। পরে রিমান্ড শুনানি শেষে মাদ্রাসার দুই ছাত্রের পাঁচ দিন এবং দুই শিক্ষকের চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত। তারা চারজনই আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কুষ্টিয়া সদর মডেল থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) নিশিকান্ত সরকার তদন্ত শেষে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।
আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) অনুপ কুমার নন্দী বলেন, বঙ্গবন্ধুর নির্মাণাধীন ভাস্কর্য ভাঙচুর ঘটনায় দায়ের করা মামলা থেকে আসামি ইউসুফ আলী (২৮) ও আল আমিনকে (২৮) অব্যাহতি দিয়েছেন আদালত। এঘটনায় অপর দুই আসামি মিঠুন ও নাহিদ কারাগারে রয়েছে। শিশু আদালতে বিচারাধীন রয়েছে।
উল্লেখ্য, বঙ্গবন্ধুর নির্মাণাধীন ভাস্কর্য ভাঙচুরে অংশ নেয় দুই ব্যক্তি। ঘটনাস্থলের পাশের একটি সিসিটিভি ফুটেজে এই ঘটনা ধরা পড়ে। রাত ২টার পর দুই ব্যক্তি পিঠে ব্যাগ নিয়ে এসে মই দিয়ে ওপরে ওঠে। এরপর তারা ব্যাগ থেকে হাতুড়ি বের করে ভাস্কর্য ভেঙে নিরাপদে চলে যায়। বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যটির ডান হাত, পুরো মুখমণ্ডল ও বাঁ হাতের আংশিক ভেঙে ফেলা হয়েছিল। ওই ঘটনার পর থেকে সেই সময় কয়েকদিন ধরে কুষ্টিয়া শহরে বিক্ষোভ সমাবেশ, মিছিল ও মানববন্ধন করেছিল আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতাকর্মীরা।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন