আক্রমণাত্মক ব্যাটার হিসেবে পরিচিত হলেও বিপিএলে খুব একটা সুবিধা করে উঠতে পারছিলেন না খুশদিল শাহ। অবশেষে স্বরূপে ফিরেছেন তিনি। বিধ্বংসী এক ইনিংসে তা-ব চালিয়ে দলকে এনে দিলেন বিশাল পুঁজি। তবে ঢাকা ডমিনেটর্সের দারুণ লড়াই করেছিলেন নাসির হোসেন। তবে শেষ রক্ষা করতে পারেননি। তার ঝড় থামিয়ে দুর্দান্ত এক জয় পেয়েছে কুমিল্লা ভিক্টরিয়ান্স। গতকাল চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে দিনের প্রথম ম্যাচে ঢাকাকে ৩৩ রানে হারিয়েছে ইমরুল কায়েসের দল। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৪ উইকেটে ১৮৪ রান তোলে তারা। জবাবে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৪ উইকেটে ১৫১ রানের বেশি করতে পারেনি ঢাকা। মিরপুরে বিবর্ণ এক পর্ব শেষে সাগরিকাতেও প্রথম ম্যাচে হারের পর টানা তিন ম্যাচ জিতল কোচ মোহাম্মদ সালাউদ্দিনের শিষ্যরা। তাতে ৬ ম্যাচ শেষে পয়েন্ট তালিকার তিনে উঠে গেছে বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা।
সাগরিকায় টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নামে কুমিল্লা। চট্টগ্রাম পর্বে আগের তিন ম্যাচেই দারুণ ব্যাটিং করা লিটন দাস এদিন ইনিংসের দ্বিতীয় বলেই থার্ডম্যানে ক্যাচ দিয়ে ফিরেছেন খালি হাতে। শুরুতেই দলের সেরা ব্যাটারের বিদায়ের ধাক্কাটা অবশ্য ভালোভাবে সামলে নেন অধিনায়ক ইমরুল কায়েস। দ্বিতীয় উইকেটে আরেক ওপেনার মোহাম্মদ রিজওয়ানের সঙ্গে ৪৭ রানের জুটি গড়ে আউট হন অধিনায়ক।
অধিনায়কের বিদায়ের পর রিজওয়ানের সঙ্গে জুটি বাঁধেন জনসন চার্লস। স্কোরবোর্ডে ৪০ রান যোগ করেন এ দুই ব্যাটার। চার্লসকে ফিরিয়ে এ জুটি ভাঙেন মোহাম্মদ ইমরান। তবে রিজওয়ানের সঙ্গে চতুর্থ উইকেটে গড়া স্বদেশী খুশদিল শাহর গড়া জুটিই বদলে দেয় ম্যাচের পরিস্থিতি। মাত্র ২৪ বলে ৭টি চার ও ৫টি ছক্কায় ৬৪ রানের বিধ্বংসী এক ইনিংস খেলেন খুশদিল। অথচ প্রথম ছয়টি বল দেখেই খেলেছিলেন। এ সময় আসে ৪ রান। পরের ১৮ বলে আসে ৬০ রান। আমির হামজার করা ১৬তম ওভারে মারেন তিনটি ছক্কা ও দুটি চার। সে ওভারে আসে ২৯ রান।
পরের ওভারে মুক্তার আলীকে মারেন টানা দুই ছক্কা। এর পরের ওভারে মোহাম্মদ ইমরানের বলে মারেন টানা তিনটি চার। ১৯তম ওভারে বল হাতে নিয়ে খুশদিলের তা-ব ঠেকান সৌম্য সরকার। এলবিডাব্লিউর ফাঁদে ফেলেন এ পাকিস্তানি ব্যাটারকে। তবে ফেরানো যায়নি রিজওয়ানকে। শেষ পর্যন্ত ব্যাট করে দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৫৫ রানের ইনিংস খেলে অপরাজিত থাকেন তিনি। ৪৭ বলে ১টি চার ও ৩টি ছক্কায় এ রান করেন তিনি। এছাড়া ইমরুল ৩৩ ও চার্লস ২০ রান করেন।
বিশাল লক্ষ্য তাড়ায় শুরুটা বিবর্ণ ছিল ঢাকার। ওপেনার সৌম্য সরকার এদিনও খালি হাতে ফেরেন। এরপর বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ইংলিশ ক্রিকেটার রবিন দাসও ফেরেন খালি হাতে। আগের ম্যাচেও কোনো রান করতে পারেননি এ ক্রিকেটার। আর খুব বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি আরেক ওপেনার আহমেদ শেহজাদও। তাতে বড় চাপে পড়ে যায় ঢাকা। তবে মোহাম্মদ মিঠুনের সঙ্গে দারুণ এক জুটিতে সে চাপ সামলে নিয়েছিলেন অধিনায়ক নাসির। যদিও রানের গতি খুব একটা বাড়াতে পারেননি। তবে ৫১ রানের জুটিতে লড়াইয়ের আভাস দেন। তবে ভয়ঙ্কর কিছু করার আগে এ জুটি ভাঙেন মোসাদ্দেক হোসেন। মিডঅফে ইমরুল কায়েসের ক্যাচে পরিণত করেন মিঠুনকে।
এরপর আরিফুল হককে নিয়ে দলের হাল ধরেন নাসির। গড়েন অবিচ্ছিন্ন ৬৬ রানের জুটি। কিন্তু তা যথেষ্ট ছিল না দলের জন্য। ফলে হার নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয় তাদের। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ অপরাজিত ৬৬ রানের ইনিংস খেলেন নাসির। ৪৫ বলে ৭টি চার ও ২টি ছক্কায় এ রান করেন তিনি। এছাড়া মিঠুন ৩৬ ও আরিফুল অপরাজিত ২৪ রান করেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন