যে সব বিশিষ্ট লেখকের লেখনীর স্পর্শে বাংলা সাহিত্য ধন্য হয়েছে মাইকেল মধুসূদন দত্ত তাঁদের অন্যতম।
বাংলা সাহিত্যের প্রথম আধুনিক কবি ও নাট্যকার মাইকেল মধুসূদন দত্ত ১৮২৪ খ্রিষ্টাব্দের ২৫ জানুয়ারি যশোর জেলার কেশবপুরের অন্তর্গত কপোতাক্ষ নদের তীরে সাগরদাড়ি গ্রামের বিখ্যাত দত্ত পরিবারে জন্মগ্রহন করেন। পিতা রাজ নারায়ণ দত্ত। মাতা জাহৃবী দেবী। বাংলা কাব্যে তিনিই অমিত্রাক্ষর ছন্দের প্রবর্তন করেন। মা’ জাহৃবীর বড়ো আদরের দুলাল ছিলেন মধুসূদন। মধুসূদনের আরো দুটি সহোদর ভাই জন্মেছিল প্রসন্ন কুমার ও মনেন্দ্রনাথ। তারা বেশিদিন বাঁচেনি।
মাইকেল মধুসূদন দত্ত ছিলেন আধুনিক বাংলা কবিতার জনক। জীবিত ছিলেন মাত্র উনপঞ্চাশ বছর (১৮২৪-১৮৭৩ খ্রি.)। উনপঞ্চাশ বছরের মধ্যে কাব্য চর্চ্চা করেছেন মাত্র সাত বছর (১৮৫৯-১৮৬৬ খ্রি.)। কাব্য গ্রন্থ মোট পাঁচটি তিলোত্তমা সম্ভব কাব্য (১৮৬০ খ্রি.), মেঘনাদ বধ (১৮৬১ খ্রি.) [১ম খন্ড মহাকাব্য, ২য় খন্ড মহাকাব্য], ব্রজাঙ্গনা কাব্য (১৮৬১ খ্রি.), বীরাঙ্গনা কাব্য (১৮৬২ খ্রি.) [পত্র কাব্য], চতুর্দশ পদী কবিতাবলী (১৮৬৬ খ্রি.), হেক্টর বধ (১৮৭১ খ্রি.) [গদ্য কাব্য]। মধুসূদন প্রতিভার গুণে মাত্র সাত বছরের মধ্যে বিখ্যাত হলেন আধুনিক বাংলা কবিতার জনক হিসেবে। তিনিই প্রথম বাংলা সনেট রচনার পথিকৃৎ। সব মিলিয়ে বাংলা সাতিহ্যের চর্চ্চা করেছেন প্রায় পনের বছর (১৮৫৯-১৮৭৩ খ্রি.)। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (১৮৬১-১৯৪১ খ্রি.) আশি বছরের জীবনকালে পয়ষট্টি বছর, কাজী নজরুল ইসলাম (১৮৯৯-১৯৭৬ খ্রি.) তাঁর তেতাল্লিশ বছরের সুস্থ্যবস্থায় তেইশ বছর, রূপসী বাংলার কবি খ্যাত জীবনানন্দ দাস (১৮৯৯-১৮৫৪ খ্রি.) তার পঞ্চাশ বছরের জীবন কালে চল্লিশ বছর কবিতা চর্চ্চা করেছেন।
মধুসূদন নাট্যকার হিসেবেই প্রথম বাংলা সাহিত্যের অঙ্গণে আত্মপ্রকাশ করেন। এই সময় তিনি অনুবাদ করেন রামনারায়ন তর্করতেœর (১৮২২-১৮৮৬ খ্রি.) “রত্মাবলী” (১৮৫০ খ্রি.) নাটক। রামনারায়ন তর্করত্মের “রত্মাবলী” ইংরেজি অনুবাদ করতে গিয়েই তিনি সর্বপ্রথম বাংলা নাটকের সঙ্গে সুপরিচিত হন। মাইকেল মধুসূদন দত্তের নাটকগুলো হলো-“শমিষ্ঠা (১৮৫৯ খ্রি.)”, “একেই কি বলে সভ্যতা (১৮৬০ খ্রি.)”, “বুড়ো শালিকের ঘাড়ে রো (১৮৬০ খ্রি.)”, “পদ্মাবতী (১৮৬০ খ্রি.)”, “কৃষ্ণকুমারী (১৮৬১ খ্রি.)” ও সর্বশেষ নাটক “মায়াকানন (১৮৭২ খ্রি.)”। এছাড়াও “বিষ ও ধর্নুগুন” সর্বশেষ নাটক রচনা শুরু করেন শেষ পর্যন্ত এটি তিনি সমাপ্ত করে যেতে পারেন নাই।
সাহিত্য সাধনার পর থেকেই মধুসূদনের চোখে এক সময় মহাকবি হওয়ার প্রবল ইচ্ছা জাগে। বিলেত যাওয়ার জন্য তিনি তখন মরিয়া হয়ে উঠেছেন। বিলেত যাওয়ার সুবিধা হবে এই ভেবে তিনি ১৮৪৩ খ্রিষ্টাব্দের ৯ ফেব্রæয়ারি হিন্দুধর্ম পরিত্যাগ করে খৃষ্টান ধর্ম গ্রহন করেন। নামের আগে যোগ করেন “মাইকেল”। যদিও শেষ পর্যন্ত তার সে সময় আর বিলেত যাওয়া হয়নি। ধর্মান্তরিত হওয়ার ফলে পিতার রোষানলে পড়ে তাজ্য পুত্র হলেন। খৃষ্টধর্ম গ্রহণ করায় একই বছর হিন্দু কলেজ থেকে তাঁকে বিতাড়িত করা হয়। পরে তিনি শিবপুরের বিশপ্স কলেজে ভর্তি হন।
মাইকেল মধুসূদন দত্ত খৃষ্টান ধর্ম গ্রহণের পর তার মা শোকে দুঃখে শয্যা নিলেন। মাইকেল মধুসূদন দত্ত খৃষ্টান ধর্ম গ্রহনের পরও বাবা চেষ্টা করেছিলেন মধুকে হিন্দু ধর্মে ফিরিয়ে আনার জন্য। মধুসূদন বাবার মুখের উপর বললেন “যদি আকাশের চন্দ্র সূর্য না ওঠে যদি পূর্বের বদলে পশ্চিমে সূর্যের উদয় হয় তবু আমি খৃষ্টান ধর্ম পরিত্যাগ করবো না।”
মাইকেল মধুসূদন দত্তের একগুয়েমি এবং বেধর্মী খৃষ্টান হওয়ার উচিত শিক্ষা দেওয়ার নিমিত্তে পিতা রাজনারায়ণ দত্ত পুত্রকে ত্যাজ্য করার জন্য আর একটি পুত্র সন্তান আশা করেছিলেন। এজন্য তিনি শিব সুন্দরী, প্রসন্নময়ী ও হরকামিনি নামে পরপর তিনজন স্ত্রী গ্রহণ করেছিলেন। অপুত্র অবস্থায় মৃত্যুর পর তিনি “পুলাম নরকে” কিছুতেই যেতে রাজি নন। জাহৃবী দেবী পুত্র শোকে কাতর তার উপরে সতিনের আগমনে অতিষ্ট হয়ে স্বামীকে অভিশাপ দিয়েছিলেন “আমি যদি সতি হই তবে অন্য পত্মী দ্বারা তোমার সন্তান উৎপন্ন হবে না।” তার অভিশাপ সত্যে পরিণত হয়েছিল।
১৮৪৭ খ্রিষ্টাব্দের ২৯ ডিসেম্বর মধুসূদন জাহাজে করে মাদ্রাজ যাত্রা করেন। যেদিন তিনি মাদ্রাজে পৌছান সেদিনটি ছিল ১৮৪৮ খ্রিষ্টাব্দের ১৮ জানুয়ারি। মধুসূদনের বয়স তখন ২৪ বছর। রেবেকা না¤œী এক মহিলার সাথে মাদ্রাজে আসার পর পরই মাইকেল মধুসূদন গভীর প্রণয়ে জড়িয়ে পড়েন। রেবেকা মাইকেলের বিয়ে হয় ১৮৪৮ খ্রিষ্টাব্দের ৩১ জুলাই। এ সময় মাইকেল মাদ্রাজ এ্যাসলাইম স্কুলের শিক্ষকের পদলাভ করেন। অধিক অর্থ উপার্জনের জন্য এক সময় তিনি এ্যাসলাইম স্কুলের চাকরি ছেড়ে (১৮৪৮-১৮৫১ খ্রি.) কাজ নিয়েছিলেন মাদ্রাজ ইউনিভার্সিটি স্কুলে। ১৮৫৬ খ্রিষ্টাব্দে মাইকেল মাদ্রাজ ইউনিভার্সিটি স্কুলের চাকরি পরিত্যাগ করেন।
গভীর প্রণয় ও প্রেমের ফলশ্রæতি হিসেবে মাইকেল রেবেকাকে জীবন সঙ্গীনি হিসেবে পেয়েছিলেন। পুরোপুরি ইউরোপীয় না হলেও শ্বেতাঙ্গিনী খৃষ্ট রমনী হিসেবে তাঁর পরিচয় ছিল। রেবেকা ১৮৩১ খ্রিষ্টাব্দে ভারতের নাগপুরে জন্মগ্রহন করেছিলেন। তাঁর গর্ভে মাইকেলের ঔরসে তাদের মোট চার পুত্র কন্যার জন্ম হয়- বার্থা (কন্যা), ফিজি (কন্যা), জর্জ জন ম্যাকটা ভিশ ডাট (পুত্র) ও মাইকেল জেমস (পুত্র)। মাইকেল মধুসূদন দত্ত প্রথম বিয়ের এক বছর পরই ১৩ বছরের কিশোরী অ্যামেলিয়া হেনরিয়েটা সোফিয়ার প্রেমে পড়ে যান এবং তাঁকে স্ত্রী রূপে গ্রহণ করেন। এই হেনরিয়েটাই জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত মাইকেলের সঙ্গে ছিলেন।
মাইকেল মধুসূদন দত্ত ১৮৫৬ খ্রিষ্টাব্দের ২৮ জানুয়ারী মাদ্রাজ হতে কলকাতার জাহাজে চড়ে বসলেন। পেছনে পড়ে রইলো তাঁর প্রিয়তমা স্ত্রী রেবেকা এবং মধুসূদনের অপগন্ড চারটি পুত্র কন্যা। মাইকেল কলকাতা যাওয়ার সময় খুব গভীর ভাবে চিন্তা করেননি সাড়ে ছয় বছরের বড় মেয়ে বার্থা, চার বছর দশ মাসের মেজো মেয়ে ফিজি, সাড়ে তিন বছরের বড়ো ছেলে জর্জ ম্যাকটা ভিশ ডার্ট আর দশ মাসের ছোট ছেলে মাইকেল জেমস কে নিয়ে। কিংবা চিন্তা করেননি তার এক সময়কার “ধ ভরহব ঊহমষরংয রিভব” রেবেকার কথা।
মধুসূদন মাদ্রাজ ত্যাগের পর রেবেকা জেনেছিলেন তার কবি স্বামীর সঙ্গে উনিশ বছরের সুন্দরী হেনরিয়েটা আসনাইর সংবাদ। এরপর ঘৃণায় যন্ত্রনায় তিনি মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিলেন। মাইকেল সবি পেছনে রেখে চলে গেলেন। কোনদিন তিনি রেবেকা ও তাঁর সন্তানদের সামনে গিয়ে দাঁড়াননি। মধুসূদনের মাদ্রাজ ত্যাগের তিন-মাসেরও কম সময়ে তার কনিষ্ঠ পুত্র জুনিয়র মাইকেল মৃত্যু বরণ করে। ফিরে যাননি তাঁর ফেলে আসা পরিবার-পরিজনের কাছে। মধুসূদন মাদ্রাজ ত্যাগের ৩৬ বছর পরে ১৮৯২ খ্রিষ্টাব্দের ২২ জুলাই রেবেকা ক্ষয় রোগে মারা যান। সম্ভবতঃ তার অসহায় তিনটি সন্তানের ভবিষ্যৎ চিন্তা করে রেবেকা দ্বিতীয় বার বিয়ে বন্ধনে আবদ্ধ হননি।
কলকাতা জীবিকা নির্বাহের জন্য মাইকেলকে বহু বিচিত্র পেশা গ্রহণ করতে হয়। প্রথমে পুলিশ আদালতের করনিক ও পরে তিনি দোভাষী রূপে চাকরি করেন। ১৮৬২ খ্রিষ্টাব্দের নভেম্বর মাসে মাইকেল মধুসূদন দত্ত লন্ডনের গ্রেজইন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ব্যারিষ্টারি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন এবং ১৮৬৭ খ্রিষ্টাব্দের জানুয়ারি মাসেই দেশে ফিরে আসেন ও কলকাতা হাইকোর্টে আইন ব্যবসা শুরু করেন। কিন্তু আইন ব্যবসায় তিনি সাফল্য অর্জন করতে পারেন নাই।
মাইকেলের দ্বিতীয় স্ত্রী হেনরিয়েটাও চারটি সন্তান জন্ম দিয়েছিলেন। দুটি সন্তান জন্মেছিল কলকাতায় এবং আর দুটি জন্মেছিল ফ্রান্সের র্ভেসাই শহরে। র্ভেসাইয়ে একটি কন্যা সন্তান জন্মের পরই মারা যায়। হেনরিয়েটার অন্য সন্তানেরা হলেনÑ এলইজা শমিষ্ঠা দত্ত, মেঘনাদ মিল্টন দত্ত, আলবার্ট নেপোলিয়ান দত্ত।
পূর্বেই আলোচিত হয়েছে ১৮৪৮ খ্রিষ্টাব্দের ৩১ জুলাই মধুসূদন রেবেকাকে বিয়ে করেন। রেবেকার গর্ভে মধুসূদনের চারটি পুত্র কন্যা জন্মগ্রহণ করে। চার সন্তানের মধ্যে দু’জন পরিণত বয়স পর্যন্ত জীবিত ছিলেন, কিন্তু রেবেকা মাইকেল পারিবারিক বিচ্ছেদের ফলে তাঁর জীবিত দু’সন্তান এডওয়ার্ড ডটন ও ম্যাকটার্ভিস ডটনের সাথে কবির কোনো যোগাযোগ রক্ষিত হয়নি। রেবেকা আমৃত্যু ছিলেন মধুসূদনের প্রতি নির্লিপ্ত ও অনুযোগহীন।
১৮৫৫ খ্রিষ্টাব্দে মধুসূদনের মাদ্রাজ জীবনের দয়িতা ফরাসি সুন্দরী এমিলা হেনারিয়েটা সোফিয়া মধুসূদনের সাথে যোগাযোগ রেখে কলকাতায় এলে উভয়ে স্বামী স্ত্রী রূপে বসবাস করতে থাকেন। মূলত ঃ তাঁরা চার্চের অনুমতি নিয়ে কিংবা খৃষ্টিয় সামাজিক নিয়মানুসারে বিবাহিত ছিলেন না। দ্বিতীয় স্ত্রী হেনরিয়েটার গর্ভে মধুসূদনের দুইপুত্র ও দুই কন্যা সন্তানের জন্ম হয় যা আগেই উল্লেখ করা হয়েছে। চার সন্তানের মধ্যে মেঘনাদ মিল্টন দত্ত তের বছর বয়সে মৃত্যু বরণ করে এবং তার শিশু সহোদরা মাত্র কয়েক মাস বেঁচে ছিলেন। মধুসূদনের অন্য দুটি সন্তান পরিণত বয়স পর্যন্ত জীবিত ছিলেন। এঁরা হলেন, কন্যা এলিজা শমিষ্ঠা দত্ত ও পুত্র আলবার্ট নেপোলিয়ন দত্ত। ১৮৭৩ খ্রিষ্টাব্দের ২৯ জুন বেলা ২টার সময় মহাকবি মধুসূদন দত্ত বন্ধু, জামাতা, পুত্র-কন্যা পরিবেষ্টিত কলকাতার আলিপুর জেনারেল হাসপাতালে কপর্দকহীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল মাত্র উনপঞ্চাশ বছর।
মাইকেল মধুসূদন দত্তের মৃত্যুর মাত্র দেড়মাস পূর্বে কলকাতা পুলিশ কোর্টে চাকুরিরত জনৈক উইলিয়াম ওয়াল্টার ইভানস ফ্লয়েডের সাথে তিনি তাঁর কন্যা এলিজা শমিষ্ঠা দত্তের বিয়ে দেন। মধুসূদন ও হেনরিয়েটার মৃত্যুর পরে শমিষ্ঠার সাথে ফ্লয়েডের বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে। এরপর ইউলিয়াম নোয়েল নিস শমিষ্ঠাকে বিয়ে করেন। নোয়েল নিস ও শমিষ্ঠার গর্ভে তাদের আটটি পুত্র কন্যার জন্ম দেন। তারা হলেনÑ তানজিল, হ্যারোল্ড, মিস বেরিল, মিসেস লিওনারা আইভি, বুবিটন এ্যারল, ইভান, মিসেস কোরাল লিলিয়ান ও নরম্যান নিস। মধুসূদনের কন্যা শমিষ্ঠা দত্তের বংশধরদের কেউ কেউ ভারতে বসবাসরত আবার অনেকেই ইংল্যান্ড, অষ্ট্রেলিয়া ও আমেরিকায় বসবাস করছেন।
মধুসূদন দম্পত্তির মৃত্যুর তিন বছর আগে অর্থাৎ ১৮৭০ খ্রিষ্টাব্দে তাদের কনিষ্ঠ পুত্র আলবার্ট নেপোলিয়ন দত্ত জন্মগ্রহণ করেন। মধুসূদনের বন্ধু ব্যারিষ্টার মনোমোহনের আশ্রয় ও সহযোগিতায় আলবার্ট নেপোলিয়ন সুশিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে সরকারের আফগারি বিভাগের উচ্চপদে চাকুরিতে থাকাকালে মৃত্যুবরণ করেন। আলবার্টের মৃত্যু যেমন অকস্মাৎ তেমনি দুঃখজনক। মাইকেল পুত্র আলবার্ট লা²ৌ শহর থেকে সাইকেলযোগে বাসায় ফেরার পথে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছিলেন। আলবার্ট নেপোলিয়ন মৃত্যুকালে দুই পুত্র ও তিন কন্যা সন্তান রেখে যান। পর্যায়ক্রমে তারা হলেনÑ মাইকেল লরেন্স ডটন (এম,এল,ডটন), নেভিস চালর্স ডটন (এন,সি, ডটন), মিসেস মুনা ডটন, মিসেস ক্যাটলিনা ডটন, মিসেস এডারিস ডটন। এন,সি ডটনের কোনো সন্তানাদি ছিল না। তিনি কলকাতা মহানগরীর ভারত সরকারের আয়কর বিভাগের উচ্চপদস্থ সরকারী কর্মকর্তা ছিলেন। পরবর্তীতে তার আর কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি। মধুসূদনের পৌত্র এন,এল, ডটন ১৯৫৯ খ্রিষ্টাব্দে লন্ডনের একটি হাসপাতালে দুরারোগ্য ক্যান্সার রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে তিনি পাঁচ পুত্র কন্যা রেখে যান। ওই পুত্র কন্যারা হলেনÑ মাইকেল উইলিয়াম, লরেন্স ভিক্টর, পিটার অ্যারল মার্টন, ব্যাসিল প্যাটরিক নরম্যান, মিসেস জেনিফার পেজ। জেনিফার পেজ বর্তমান কলকাতা পিজি হাসপাতালের স্বনামধন্য ডাক্তার এবং তিনি এক সময় ভারতীয় টেনিস দলের অধিনায়ক ছিলেন। এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে মধুসূদন পৌত্র এম,এল, ডটনের মৃত্যুর পর তার পরিবারবর্গ লন্ডন থেকে এসে ভারতেই বসবাস করতে থাকেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন