গত ডিসেম্বরে বিএনপির চলমান সরকার বিরোধি আন্দোলনের এক পর্যায়ে হাইকমান্ডের নির্দেশে অন্য সবার সাথে বগুড়া সদর আসনের এমপি গোলাম মোহাম্মদ সিরাজ পদত্যাগ করেন। ফলে ১ ফেব্রæয়ারী অনুষ্ঠিত সংসদীয় উপনির্বাচনে জয়লাভ করেন আওয়ামী লীগ মনোনিত প্রার্থী বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রাগেবুল আহসান রিপু।
তাঁর এই জয়ের মাধ্যমে দীর্ঘ ৫০ বছর পর বগুড়া সদরের আসনটি ফিরে পেল আওয়ামী লীগ।
এ প্রসঙ্গে বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য প্রভাষক কামরুল হুদা উজ্জল তথ্য উদ্ধৃত করে জাানান, স্বাধীন বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত ১৯৭৩ সালের প্রথম সংসদ নির্বাচনে এই আসনটিতে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন আওয়ামী লীগ নেতা মরহুম হাশেম আলী খান জাহেদী। এরপর দীর্ঘ ৫০ বছর পর ২০২৩ সালের ১ ফেব্রæয়ারী অনুষ্ঠিত উপনির্বাচনে এমপি নির্বাচিত হলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রাগেবুল আহসান রিপু। এটা বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের রাজনীতির জন্য মাইল ফলক হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকবে।
তিনি আরো জানান, ১৯৭৩ এর বগুড়া সদর আসনে একাধিকবার অংশ নিয়ে পরাজিত হন বর্ষিয়ান আওয়ামী লীগ নেতা মরহুম মাহমুদুল হাসান খাঁ ও মরহুম মমতাজ উদ্দিন। এছাড়া একবার করে আওয়ামী লীগের পক্ষে অংশ নিয়ে পরাজিত হন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মরহুম আসাদুর রহমান খন্দকার লাইজু, দৈনিক উত্তর বার্তা সম্পাদক মুহম্মদ মাহবুব উল আলম এবং জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি টি জামান নিকেতা একবার করে নির্বাচনে অংশ নিয়ে পরাজিত হন।
এছাড়া ১৯৮৮ সাল ব্যতিত স্বাধীনতার পরে অনুষ্ঠিত প্রতিটি সংসদ নির্বাচনেই অওয়ামী লীগ অংশ নিয়ে জয়ের স্বাদ নিতে ব্যর্থ হয়। সেই কারণে এই উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগের জয়কে বিশেষ তাৎপর্যপুর্ণ বলে মনে করেন তিনি।
উল্লেখ্য গত ১ ফেব্রæয়ারী অনুষ্ঠিত উপনির্বাচনের অফিসিয়াল ফলাফল অনুযায়ি বগুড়া সদরের মোট ৪ লাখ ১০ হাজার ভোটের মধ্যে ১৪৩ টি কেন্দ্র ভোট পড়েছে ৯১ হাজার ৭৪২টি। ভোটের শতকরা হার ২০ দশমিক ৩৪ ভাগ বলে জানান জেলার সিনিয়র নির্বাচন অফিসার মাহমুদ হাসান ।
নির্বাচন অফিস সুত্রে আরো জানা যায়, এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী রাগেবুল আহসান রিপু পেয়েছেন ৪৯ হাজার ৩৩৬ ভোট। মোট প্রদত্ত ভোটের শতকরা হিসেবে আওয়ামী লীগ প্রার্থী পেয়েছেন শতকরা ৫৪ শতাংশ ভোট। এছাড়া দলীয় প্রার্থী হিসেবে জাতীয় পার্টি মনোনিত লাঙ্গল প্রতীকধারী প্রার্থী নুরুল ইসলাম ওমর পেয়েছেন ৬ হাজার ৯৯৫ ভোট, জাসদ ইনু সমর্থিত প্রার্থী ভিপি ইমদাদুল হক ইমদাদ পেয়েছেন ১ হাজার ৩৪০ ভোট। বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের প্রার্থী নজরুল ইসলাম পেয়েছেন ৪৬৮ ভোট জাকের পার্টির প্রার্থী মোহাম্মদ ফয়সাল বিন শফিক পেয়েছেন গোলাপ ফুল প্রতীকে পেয়েছেন ৪১৭ ভোট এবং গণ ফ্রন্টের আফজাল হোসেন মাছ প্রতীকে পেয়েছেন ১৭০ ভোট।
স্বতন্ত্র প্রার্থীদের মধ্যে ট্রাক প্রতীকে আব্দুল মান্নান আকন্দ পেয়েছেন ২১ হাজার ৮৬৪ ভোট, আপেল প্রতীক নিয়ে মাছুদার রহমান হেলাল পেয়েছেন ১ হাজার ৬১৮ ভোট, একতারা প্রতীকে হিরো আলম পেয়েছেন ৫ হাজার ২৭৪ ভোট, কুমির প্রতীক নিয়ে রাকিব হাসান পেয়েছেন ১ হাজার ৪৪৯ ভোট এবং কুড়াল প্রতীকে সরকার বাদল পেয়েছেন ২ হাজার ৮১১ ভোট। পরাজিত প্রার্থীদের মধ্যে কেবল আব্দুল মান্নান আকন্দ ব্যতিত সকল প্রার্থীরই জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন