তুরস্ক ও সিরিয়া সীমান্তে স্মরণকালের ভয়াবহ ভূমিকম্পে বিপুল প্রাণহানির খবর মিলছে। নিহতের সংখ্যা পাঁচ হাজারের ছাড়িয়েছে, আহত আরও কয়েক হাজার। এখনো কেঁপে উঠছে বেশ কয়েকটি এলাকা। এ অবস্থার মধ্যেই চলছে উদ্ধারকাজ। ধারণা করা হচ্ছে, মৃত মানুষের সংখ্যা ১০ হাজার ছাড়িয়ে যাবে। এ ছাড়া নিখোঁজ অনেকে। আহত ব্যক্তিদের তালিকায় আছেন চেলসি ও নিউক্যাসল ইউনাইটেডের সাবেক ফুটবলার ক্রিস্তিয়ান আতসুও। ঘানার এই উইঙ্গার বর্তমানে খেলছেন তুরস্কের ক্লাব হাতাইস্পোরে।
পরশু রাতেই রেফারি শেষ বাঁশি বাজানোর আগমুহূর্তে গোল করে দলকে জিতিয়েছেন আতসু। সেই মানুষটিই ভূমিকম্পের পর ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে আছেন। পর্তুগিজ দৈনিক ‘এ বোলা’র খবরে অবশ্য বলা হয়েছে, আতসুকে জীবিত উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ‘দ্য গার্ডিয়ান’ও তাঁকে খুঁজে পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। তারা জানিয়েছে, হাতাইয়ের আন্তাকিয়া এলাকার বহুতল একটি হোটেলে ছিলেন ৩১ বছর বয়সী আতসু। ভূমিকম্পে ভবন পুরোপুরি বিধ্বস্ত হলে তার নিচে চাপা পড়েন এ ফুটবলার। তাঁকে উদ্ধারের পর হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তিনি হাত পায়ে চোট পেয়েছেন। নিশ্বাস নিতেও কষ্ট হচ্ছে। পরে ঘানার রাজধানী আক্রার একটি রেডিওকে তুরস্কে নিয়োজিত ঘানার রাষ্ট্রদূত ফ্রান্সিসকা আসিয়েতে-ওডুন্টন আতসুর বেঁচে থাকার খবর নিশ্চিত করে বলেছেন, ‘আমার কাছে সুখবর আছে। ঘানা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি জানিয়েছেন, হাতায় অঞ্চলে আতসুকে উদ্ধার করা হয়েছে।’
তবে ক্লাবের ক্রীড়া পরিচালক তানের সাভুতও ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে আছেন।
২০১৩ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত চেলসিতে খেলেছেন আতসু। ইংলিশ ফুটবলে ২০২১ সালে সর্বশেষ খেলেছেন নিউক্যাসলে। মাঝে এক মৌসুমে তাঁকে দেখা গেছে এভারটনের জার্সিতে। ঘানার হয়ে ৬৫ ম্যাচ খেলা এ উইঙ্গার ২০১৪ সালে ব্রাজিল বিশ্বকাপেও খেলেছেন। পরের বছর আফ্রিকান নেশন্স কাপে হয়েছেন সেরা খেলোয়াড়। সউদী আরবেও পা পড়েছে আতসুর। এক মৌসুম খেলেছেন আল রায়েদের হয়ে। গত বছর আল রায়েদ ছেড়ে যোগ দিয়েছেন তুরস্কের হাতাইস্পোরে। শুধু ফুটবলারই নন, ভূমিকম্পে তুরস্কের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের নারী ভলিবল দলের ১৪ খেলোয়াড় ধসে পড়া ভবনের নিচে আটকা পড়েছেন। ভূমিকম্পের কারণে তুর্কি সুপার লিগের সব ম্যাচ স্থগিত করেছে দেশটির ফুটবল ফেডারেশন।
রিখটার স্কেলে ৭ দশমিক ৮ মাত্রার যে ভূমিকম্প গতকাল বিপুল ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে, সেটিকে ওই অঞ্চলের ইতিহাসে সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্প হিসেবে মত দিচ্ছেন ভূতত্ত্ববিদেরা। সর্বশেষ ১৯৩৯ সালে প্রায় সমান শক্তিশালী ভূমিকম্প হয়েছিল তুরস্কের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে। সেবার মারা যান ৩০ হাজার মানুষ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন