২০২৬ সালের মধ্যে শতভাগ আর্থিক অর্ন্তভুক্তি বাস্তবায়নের জন্য নারীদের বিশেষায়িত আর্থিক সেবার প্রয়োজন। আর্থিক সেবা খাতে লৈঙ্গিক সমতা নিশ্চিত করতে সম্মিলিত প্রয়াস দরকার। আর্থিক সকল ধরণের সেবা পাওয়ার ক্ষেত্রে যেসব প্রতিবন্ধকতা এবং চ্যালেঞ্জ রয়েছে তা মোকাবেলা করতে পারলেই এনএফআইএস-বি -এর লক্ষ্যসমূহ অর্জন এবং ভিশন -২০৪১ অর্জন সম্ভব হবে বলে বিশেষজ্ঞরা অভিমত ব্যক্ত করেন।
আজ ১১ ফেব্রুয়ারি (শনিবার) যশোরের ওরিয়ন ইন্টারন্যাশনাল হোটেলে ‘জেন্ডার রেপন্সসিভ ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস’ শীর্ষক দুই দিনব্যাপী এক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। ‘জেন্ডার রেপন্সসিভ ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস’ শীর্ষক উক্ত কর্মশালার শেষ দিনে বক্তারা এ কথা বলেন। ২০২৬ সালের মধ্যে সকল পূর্ণ বয়স্ক মানুষকে আর্থিক অর্ন্তভুক্তি’র মধ্যে নিয়ে আসা এবং জাতীয় অর্ন্তভুক্তি কৌশল (এনএফআইএসবি) বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্ট (বিআইবিএম)এবং সেন্টার ফর রিসার্চ এন্ড ডেভেলপমেন্ট (সিআরডি) উক্ত কর্মশালার আয়োজন করে।
দুই দিনব্যাপী এ কর্মশালার লক্ষ্য ছিল আর্থিক অর্ন্তভুক্তির ক্ষেত্রে নারীরা কেন পিছিয়ে তা খুঁজে বের করা যাতে সেবা প্রদানকারীরা আরও বেশি নারীদের সেবা দানের ক্ষেত্রে অধিকতর সহায়ক হতে পারেন। জেন্ডার গ্যাপ ইন ফাইন্যান্সিয়াল ইনক্লুসান (জিজিআইএফআই) প্রকল্পের সারসংক্ষেপ তুলে ধরেন সিআরডি’র পরামর্শক ড. লীলা রশীদ।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, আর্থিক অর্ন্তভুক্তিতে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা(এনজিও) গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। তাবে এসব এনজিও’র সুদ হার নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। যা নামিয়ে আনার চেষ্টা চলছে। তবে যেভাবেই হোক ব্যাংকের স্বল্প সুদের আর্থিক সুবিধার আওতায় নারীদের আনতে হবে। এজন্য ব্যাংকগুলো এজেন্ট ব্যাংকিং, উপ-শাখা খোলাসহ বিভিন্ন ধরণের উদ্যোগ নিচ্ছে। যা এরই মধ্যে দারুণভাবে সাড়া ফেলেছে।
বিআইবিএম’র অধ্যাপক (সিলেকশন গ্রেড) এবং বিআইবিএম-সিআরডি প্রকল্পের স্টাডি টিম লিডার ড. শাহ্ মো. আহসান হাবীব বলেন, ২০২৬ সালের মধ্যে আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রিত প্রতিষ্ঠানে (ব্যাংক, বীমা) নারীদের একটি হিসাব থাকতে হবে। যেখানে নারীদের অন্যান্য আর্থিক সেবার পাশাপাশি ঋণ প্রয়োজন হলেও যাতে পেতে পারে, তা নিশ্চিত করা দরকার। তিনি বলেন, ব্যাংকগুলোর পাশাপাশি মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস (এমএফএস) এবং মাইক্রোফাইন্যান্সিয়াল ইনস্টিটিউশন (এমএফআইএস)গুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
বিআইবিএম-এর অধ্যাপক (সিলেকশন গ্রেড) এবং পরিচালক (ঢাকা স্কুল অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্ট) মো. নেহাল আহমেদ নারীদের আর্থিক অর্ন্তভুক্তির ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরণের প্রতিবন্ধকতার বিষয়টি তুলে ধরেন। এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে পারলে ২০৩০ সালের এসডিজি লক্ষ্য অর্জন সহজ হবে তিনি তার বক্তব্যে উল্লেখ করেন।
ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. আয়েশা বানু বলেন, জেন্ডার সমতা ও নায্যতা প্রয়োজন। যা পরিবার থেকে আসতে হবে। এ বিষয়টি খুব গভীরভাবে নীতি নির্ধারণী মহল থেকে শুরু করে সব পর্যায়ের মানুষকে বুঝতে হবে। এটি করতে না পারলে কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌঁছানো যাবে না।
আর্থিক অর্ন্তভুক্তি বিষয়ক এ কর্মশালায় রওশন ক্রিয়েশনস নামক প্রতিষ্ঠানের স্বত্তাধিকারী রওশন আরা নামের এক নারী উদ্যোক্তা নারীদের ব্যাংকিং ও আর্থিক সেবা পাওয়ার ক্ষেত্রে কি কি সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় তা তুলে ধরে বলেন, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো তরুণদের আর্থিক সুবিধা দেয় না। উদীয়মান তরুণদের ওপর আস্থা রাখতে না পারায় অনেক ভালো উদ্যোক্তা অর্থের অভাবে সফল হতে পারছে না। এ অবস্থার পরিবর্তন দরকার। এ জন্য সব পর্যায়ের সহযোগিতা প্রয়োজন বলে জানান।
উক্ত অনুষ্ঠানে সিনিয়র ব্যাংকার, শিক্ষাবিদ, গবেষক, বিআইবিএম-এর সিনিয়র অনুষদ সদস্য, কর্মকর্তারা অংশগ্রহণ করেন। ######
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন